আলো ছড়িয়ে স্বস্তি মাহমুদউলস্নাহর

প্রথম ইনিংসে ২৬ ওভার বল করে ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন। ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ ওভার বল করে ২৫ রানে নেন আরও ৩ উইকেট। মাহমুদউলস্নাহর অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দাপট দেখিয়েই ম্যাচ শেষ করেছে তার দল ঢাকা মেট্রো

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ -ওয়েবসাইট
ক্রীড়া প্রতিবেদক একমাত্র ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ৬৩ রান। দুই ইনিংসেই বল হাতে ছড়িয়েছেন আলো। নিয়েছেন ৬ উইকেট। তাতে নিষ্প্রাণ ম্যাচে সেরার পুরস্কার উঠেছে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের হাতে। ব্যাটিংয়ে বরাবরই অবদান রাখেন। তবে কাঁধের চোটে বোলিংটা করতেই পারছিলেন না। এবার সে চোট সামলে বল তো করেছেনই, ব্যাটসম্যানদের কাবুও করেছেন, নিয়েছেন উইকেট। মাহমুদউলস্নাহর সন্তুষ্টি তাই সবদিক থেকে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রো ও চট্টগ্রাম বিভাগের ম্যাচটি ড্র হয়েছে। অপরদিকে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত খেলায় সিলেটকে ইনিংস ও ১৩ রানে হারিয়েছে বরিশাল বিভাগ। প্রথম ইনিংসে ২৬ ওভার বল করে ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন মাহমুদউলস্নাহ। ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ ওভার বল করে ২৫ রানে নেন আরও ৩ উইকেট। প্রথম ইনিংসে লম্বা স্পেলে বল করতে দেখা গেছে তাকে। বল টার্ন করিয়েছেন, বাউন্স আদায় করে ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলেছেন। তাতে মিলেছে সাফল্য। দুই ইনিংসেই তার বলে আউট হন তামিম ইকবাল। মাহমুদউলস্নাহর অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দাপট দেখিয়েই ম্যাচ শেষ করেছে তার দল ঢাকা মেট্রো। সবাই অপেক্ষায় ছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবালের হাফসেঞ্চুরি হলেই হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানানোর। কিন্তু হাততালি যে উল্টে পেলেন বোলার মাহমুদউলস্নাহ। ৪৬ রানে তামিম ইকবাল আউট! মাহমুদউলস্নাহর বলে এলবিডবিস্নউ। প্রথম ইনিংসেও ভালো খেলতে থাকা তামিম ইকবাল কট এন্ড বোল্ড হয়েছিলেন মাহমুদউলস্নাহর বলেই! ঢাকা মেট্রোর আগের দিনের দুই হাফসেঞ্চুরিয়ান জাবিদ ও শহিদুল রোববার সকালের সেশনেই দ্রম্নত ফিরে যান। শেষদিনের সকালে ঝটপট ৩৫৪ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকা মেট্রোর ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৬৪ রানে এগিয়ে থাকার সুখ নিয়ে ঢাকা মেট্রো দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ে নামে। তামিম ইকবাল ও পিনাক ঘোষের ওপেনিং জুটিতে ১০২ রান যোগ হয়। পিনাক ৫৭ রানে ফিরেন। তামিম করেন ৪৬। দুজনের আউটের ধরনও এক, এলবিডবিস্নউ। বোলারও একই মাহমুদউলস্নাহ! চট্টগ্রামের মিডল অর্ডারে তাসামুল প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। মাসুম আলী টুটুলের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৬১ রান। ৫ উইকেটে চট্টগ্রাম বিভাগ ২২৭ রান তোলার পরই ম্যাচের সময় শেষ। ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা হয়ে মাহমুদউলস্নাহকে সবচেয়ে তৃপ্তি দিচ্ছে লম্বা সময় স্বচ্ছন্দে বল করা, 'সত্যি বলতে মাঝে আমার কাঁধের ইনজুরি ছিল, সাত মাসের মতো আমি বোলিং করতে পারিনি। তাই আমি উদগ্রীব ছিলাম কিছু ওভার বল করতে। আলহামদুলিলস্নাহ বোলিং করতে পেরেছি। আমার বোলিং অনুশীলনটাও ভালো হলো। কারণ আমিও চাচ্ছিলাম যতটা বেশি ওভার বলা করা যায়। এটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল। বোলিং আমি সবসময় করতে চাই। আমি মনে করি এটা আমাকে বাড়তি সুবিধা বা বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেয় আমার ব্যাটিংয়ে।' উইকেটে সুবিধা ছিল। বল করে তাই তৃপ্ত। তবে উইকেটে টিকতে পারলে রান করাও কঠিন ছিল না। এখানে তাই সেঞ্চুরি না করার একটা খেদ থেকে গেছে, 'যদি তিন অঙ্ক ছুঁতে পারতাম তাহলে আরেকটু ভালো লাগত। আমি চেষ্টাও করছিলাম। পিচে দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় দিনেও বোলারদের জন্য সুবিধা ছিল। সেটা স্পিনার ও পেসার সবার জন্য। আর ব্যাটসম্যানরা সবাই চেষ্টা করছিল, আমিও চেষ্টা করছিলাম।' প্রথমে থিতু হতে বেশ কিছুটা সময় নেন। পরে ধীরে ধীরে মেলেন ডানা। ১৩৪ বলে ৬৩ রান করে অফ স্পিনে হয়েছেন কাবু, 'আমি প্রথম দুই মনে হয় ৩০/৩২ বা ৪০ বলে করেছিলাম। প্রথমে টিকে থাকতে চেয়েছিলাম যাতে পরে লাভটা তুলে নিতে পারি। ওটাই চেষ্টা করছিলাম।' রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ব্যাটিং ব্যর্থতায় দ্বিতীয় ইনিংসেও উঠে দাঁড়াতে পারেনি সিলেট বিভাগ। রোববার শেষদিনে এসে ম্যাচ হারে ইনিংস ও ১৩ রানের ব্যবধানে। অথচ রাজশাহীতে বৃষ্টির কারণে ম্যাচের প্রথমদিন কোনো খেলাই হয়নি! তিন দিনের মধ্যেই হেরে গেল সিলেট, তাও আবার ইনিংস ব্যবধানে। ম্যাচের এই ফলই জানাচ্ছে ব্যাটিং ডুবিয়েছে তাদের। প্রথম ইনিংসে ৮৬ রানে গুটিয়ে যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে উন্নতি সামান্যই, ১৩২ অলআউট। প্রথম ইনিংসে বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বীর কাছেই ধসে যায় সিলেট। ৮৬ রানে সিলেটকে গুটিয়ে দেয়ার ইনিংসে রাব্বীর শিকার ৬ উইকেট। সিলেটের ভঙ্গুর ব্যাটিং দেখে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৩১ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বরিশাল। সিদ্ধান্তটা দারুণ কাজে দেয় তাদের। সিলেটের দ্বিতীয় ইনিংস ১৩২ রানে থেমে যায় তানভীর ইসলাম ও মনির হোসেন খানের বোলিং দাপটে। তানভীর ৪ ও মনির ৩টি উইকেট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে সিলেটের ব্যাটিংয়ে ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন চৌধুরী তান্নার ৩৫ এবং সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা জাকির আলী অনিকের ৪৫ রান ছাড়া বাকিরা শুধু এলেন আর গেলেন! সিলেটের শেষ চার ব্যাটম্যানের সবাই শূন্য রানে আউট হন!