টেস্ট সিরিজ

ইনিংস ব্যবধানে জয়ে ভারতের বিশ্বরেকর্ড

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক পুনে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ শুরু থেকেই ভারতের দখলে ছিল। প্রথম ইনিংসে বিরাট কোহলির ডাবল সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৬০১ রানের বিশাল পাহাড় গড়েছিল স্বাগতিকরা। সেই রানের নিচেই শেষ পর্যন্ত চাপা পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় টেস্টে তাদের এক ইনিংস ও ১৩৭ রানে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। আর তাতে স্বাগতিকদের তিন ম্যাচের সিরিজ নিশ্চিত হলো এক টেস্ট হাতে রেখেই। ঘরের মাঠে ভারত কতটা ভয়ংকর দল, তা টের পাওয়া গেল তাদের গড়া বিশ্বরেকর্ড থেকেই। ঘরের মাঠে টানা ১১টি টেস্ট সিরিজ জয়ের অনন্য নজির গড়েছে বিরাট কোহলির দল। যে কীর্তি নেই আর কোনো দলের। এর আগে অস্ট্রেলিয়া দেশের মাটিতে টানা ১০টি সিরিজ জিতেছিল দুবার। ১৯৯৪ থেকে ২০০১ পর্যন্ত স্টিভ ওয়াহ ও মার্ক টেলরের নেতৃত্বে প্রথমবার এই কীর্তি গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ২০০৪ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত অজিরা সেটি আরেকবার করে দেখায় রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বে। ভারতের ১১ সিরিজ জয়ের মধ্যে ৯টি কোহলির নেতৃত্বে। আর সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে জিতেছিল ২টি সিরিজ। সবশেষ তারা দেশের মাটিতে সিরিজ হেরেছিল ২০১২-১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসেও সেই একই চিত্র। ভেঙে পড়ল টপ ও মিডল অর্ডার। প্রথম ইনিংসের মতো কেশব মহারাজ ও ভার্নন ফিলান্ডার এবারও প্রতিরোধের চেষ্টা করলেন বটে; তবে পারলেন না। ফাফ ডু পেস্নসিসের দলকে এক ইনিংস ও ১৩৭ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ ঘরে তুলেছে স্বাগতিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। নয় বছরের মধ্যে এই প্রথম পাঁচ দিনের ক্রিকেটে ইনিংস ব্যবধানে হারের তেতো স্বাদ পেল প্রোটিয়ারা। এর আগে তাদের সবশেষ ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ও ছিল ভারতের মাটিতেই। ২০১০ এর ফেব্রম্নয়ারিতে কলকাতা টেস্টে ইনিংস ও ৫৭ রানের ব্যবধানে হেরেছিল গ্রায়েম স্মিথের দল। আগের দিন প্রথম ইনিংসে ২৭৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া সফরকারীদের রোববার আবারও ব্যাটিংয়ে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক কোহলি। এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফলোঅন করাল ভারত। সব মিলে ২০০৮ সালে লর্ডস টেস্টের পর প্রথমবার ফলো-অনে ব্যাট করতে নামে প্রোটিয়ারা। শুরুটা হয় আগের মতোই, বাজে। চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারে ইশান্ত শর্মার আঘাতে আবারও শূন্য রানে ফেরেন ওপেনার এইডেন মারক্রাম। উমেশ যাদবের বলে বাম দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচে টিউনিস ডি ব্রম্নইনকে (৮) ফেরান ঋদ্ধিমান সাহা। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক ডু পেস্নসিসের সঙ্গে প্রতিরোধের আভাস দিয়েছিলেন ডিন এলগার। কিন্তু ডু পেস্নসিসের (৫) বিদায়ে ভাঙে ৪৯ রানের জুটি। পরের ওভারে অশ্বিন ফিরিয়ে দেন একপ্রান্ত আগলে রাখা এলগারকেও (৪৮)। ১২৯ রানে ৭ উইকেট পতনের পর ভার্নন ফিলান্ডার ও কেশব মহারাজ লেজের দিকে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। ফিলান্ডারকে ৩৭ রানে বিদায় দিয়ে এই জুটি ভেঙেছেন উমেশ যাদব। তারপর চতুর্থ দিনে আর বেশি দূর গড়ায়নি প্রোটিয়াদের ইনিংস। শেষ উইকেটে মহারাজ ২২ রানে বিদায় নিলে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস। এই ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়েছেন উমেশ যাদব। প্রথম ইনিংসেও নিয়েছেন তিনটি। বাকি তিনটি নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়ার পর এই ইনিংসে ২টি নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ম্যাচসেরা হয়েছেন অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো বিরাট কোহলি। সংক্ষিপ্ত স্কোর ভারত প্রথম ইনিংস : ৬০১/৫ (ডিক্লে.) দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস: ৬৭.২ ওভারে ১৮৯/১০ (এলগার ৪৮, বাভুমা ৩৮, ফিলান্ডার ৩৭, মহারাজ ২২, উমেশ ৩/২২, জাদেজা ৩/৫২)। ফল : ভারত ইনিংস ও ১৩৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: বিরাট কোহলি।