বিপিএলে উৎসাহ হারাবে বিদেশি খেলোয়াড়রা

অনেক বিদেশি খেলোয়াড়, আগে যেভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া যেত, সেভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। সেসব খেলোয়াড় তো স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হবে। তারা এখন আর অন্য খেলোয়াড়দের এখানে এসে খেলতে বলবে না, খেলতে উৎসাহ দেবে না -সাকিব আল হাসান

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া ডেস্ক বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আগের ছয়টি আসরে ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি। কিন্তু এবার সে ধারা থেকে সরে এসে বিশেষভাবে সপ্তম আসরটি আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেখানে থাকছে বোর্ডের কিছু ধরাবাঁধা নিয়মও, সেসব মানতে হবে, তবেই খেলা গড়াবে মাঠে। এতে করে বিশ্বের তাবৎ ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি২০ লিগগুলোর মধ্যে বিপিএল যে অন্যতম জনপ্রিয় আসরে উন্নীত হয়েছিল, কিছুটা হলেও কি তাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না? বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি না থাকায় বিদেশি খেলোয়াড়রা আসরটিতে খেলতে উৎসাহ-আস্থা হারিয়ে ফেলবেন। দেশের একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব বলেন, 'অনেক বিদেশি খেলোয়াড় বিগ ব্যাশ বাদ দিয়ে বিপিএলের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। ওই একই সময়ে (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) বিগ ব্যাশ ও বিপিএল দুটোই হয়। অনেক বিদেশি খেলোয়াড়, আগে যেভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়া যেত, সেভাবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। সেসব খেলোয়াড় তো স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হবে। তারা এখন আর অন্য খেলোয়াড়দের এখানে এসে খেলতে বলবে না, খেলতে উৎসাহ দেবে না।' তিনি যোগ করেছেন, 'গতবার যারা খেলে গেছে, তারা এখানে ভালো রীতিনীতি দেখে গেছে, পারিশ্রমিক প্রদানের ভালো পদ্ধতি দেখে গেছে। তারা ভালো ক্রিকেট, ভালো সুবিধা, ভালো হোটেল পেয়েছে। তাই তারা যখন ভালো ভালো কথা বলেছে, তখন অন্য খেলোয়াড়রা আসার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়েছে। জানি না, এবার তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে। তবে আমার মনে হয়, যেভাবে বিপিএল চলছিল, সেই পদ্ধতি-কাঠামোকে যদি আরও ভালো করা যেত, তাহলে ভালো হতো।' বোর্ডের ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের আগে সাকিব ঢাকা ডায়নামাইটস থেকে যোগ দিয়েছিলেন রংপুর রাইডার্সে। বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে তাকে দলে টেনেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সাকিবও দেখছিলেন নতুন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু নতুন নিয়মে ওই চুক্তির আর কোনো বৈধতা থাকছে না। এ নিয়ে যারপরনাই হতাশ তিনি, 'ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টা খুবই হতাশাজনক। এখন বোর্ড যা ভালো মনে করবে, সেটাই করবে। আমাদের (খেলোয়াড়দের) তো সেরকম কিছু আসলে বলার নাই। কিছু করার আছে বলেও মনে হয় না। জীবনে যা আসবে, সেটা আসবে। তবে হতাশা তো অবশ্যই।' বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব কথা বলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সব ইসু্য নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য পেতে পরিকল্পনা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ একজন দূরদর্শী নীতি নির্ধারক থাকা যিনি পরিকল্পনা করবেন এবং সেখানেই থেমে যাবেন না, সেগুলোকে বাস্তবায়নও করবেন। শুরুতে সাকিব বলেছেন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, 'যখন যে সিরিজ বা টুর্নামেন্টটা হয়, আমরা সেটা নিয়েই ফোকাস করি। তবে যদি বিশ্বকাপ বা অন্য কোনো বড় টুর্নামেন্ট থাকে, তাহলে ছয় মাস বা আট মাস আগে থেকে পরিকল্পনা করা হয়। তারপরও চলমান (কারেন্ট) সিরিজ নিয়ে আমরা চিন্তায় থাকি। এটা আসলে আমাদের সংস্কৃতিগত কারণেও। মানুষ প্রত্যাশা করে।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা সব ম্যাচই জিতব। আমরা গাছ লাগিয়ে পরদিনই ফল পেতে চাই। তাই স্বাভাবিকভাবেই এটা কঠিন হয়ে যায়। আসলে এমন কারও দায়িত্বে থাকা উচিত, যিনি দল নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। দীর্ঘ মেয়াদে একজন নীতিনির্ধারক দরকার।'