টেস্টে উন্নতির তাগিদ রোডসের

টেস্ট ম্যাচে আমাদের ব্যাটিং সামথর্্য কিছুটা খোলাসা হয়েছে। আমাদের এখানে উন্নতি করার জায়গা আছে। আমাদের যোগ্য খেলোয়াড় রয়েছে কিন্তু আমাদের কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রæত মানিয়ে নিতে হবে ও প্রতিপক্ষ সম্পকের্ পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। বিশেষ করে যখন আমরা দেশের বাইরে খেলব।

প্রকাশ | ১০ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিমানবন্দরে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। কিছুটা অবাকই হলেন উপস্থিত সংবাদকমীর্রা। বিদেশ সফর শেষে দলের সঙ্গে প্রধান কোচ ফিরেছেন, এমন দৃশ্য তো দেখা যায়নি বহুদিন! চÐিকা হাথুরুসিংহে সাড়ে তিন বছর মেয়াদে সফর শেষ করে দলের সঙ্গে ফিরেছেন এমন নজির নেই। সিরিজ শেষ হলেই এই লংকান ছুটি নিয়ে চলে যেতেন সিডনিতে তার স্থায়ী আবাসস্থলে। তবে ইংলিশ কোচ রোডস তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে ফ্লোরিডা থেকে ঢাকায় ফিরেছেন সাকিবদের সঙ্গেই। বৃহস্পতিবার এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ৮.৪০ মিনিটে বিজয়ীর বেশে দেশে পৌঁছান টাইগাররা। তবে এদিন দলের সঙ্গে সব ক্রিকেটার আসেননি। দেশে ফিরেছেন ৯ ক্রিকেটার। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা তার সন্তান ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রয়ে গেছেন। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমও থেকে গেছেন সেখানে। তবে ঈদের আগেই ফিরবেন তারা। অন্যদিকে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ খেলতে সেন্ট কিটসে গেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে যোগ দিতে সৌম্য সরকার গেছেন আয়ারল্যান্ড। গত ২৭ জুন দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে দীঘর্ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শুরু করে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুটি টেস্ট এবং তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে টেস্ট সিরিজে ২-০তে ধবলধোলাই হয় তারা। তবে ওয়ানডে আর টি২০ সিরিজ দুটিতেই ২-১ ব্যবধানে জেতে টাইগাররা। শুরুর ব্যথর্তা কাটিয়ে রঙিন পোশাকে ক্রিকেটারদের ঘুরে দঁাড়াতে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন নতুন কোচ স্টিভ রোডস। ওয়ানডে সিরিজ জয় প্রত্যাশিত হলেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে টি২০তে পারা যাবে ভাবেননি তিনি। রোডসের মতে, সফরে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা দুটি টি২০ ম্যাচ জয় ছিল অভাবনীয় ব্যাপার, ‘টেস্ট সিরিজটা আমাদের জন্য সহজ ছিল না। আমরা টেস্টের পারফরম্যান্সে যথেষ্ট আঘাত পেয়েছি। তবে খুবই গবের্বাধ করছি দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরে। ওয়ানডে সিরিজ জয় করার প্রত্যাশা আমাদের ছিল, আমরা সেটা অজর্ন করতে সক্ষম হয়েছি। টি২০ সিরিজ জয় অবাক করার মতো ছিল। আমরা আসলেই দারুণ খেলেছি শেষ দুই ম্যাচে। খুবই খুশি দুটি সিরিজ জয় করতে পেরেছি।’ কোচ আলাদা করে বললেন শেষ টি২০তে ৩২ বলে ৬১ রান করা লিটন দাসের কথা. ‘লিটনকে নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। শেষ ম্যাচে দুদার্ন্ত খেলেছে।’ অ্যান্টিগা ও জ্যামাইকা টেস্টে ব্যাটিংয়ে ভরাডুবির কারণ জানতে চাইলে রোডস বলেছেন, ‘প্রথম টেস্টে টস হারাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূণর্ হয়ে দঁাড়ায়। উইকেটে একই সঙ্গে সিম, সুইং ও বাউন্স করেছে। টেস্টে তারা ডিউক বলের ব্যবহার করেছে। সেই সঙ্গে গ্যাব্রিয়েল, রোচ, হোল্ডার ও কামিন্সদের নিয়ে গড়া উইন্ডিজ বোলিং লাইনআপ বেশ ভালো। তাদের বিপক্ষে বেশির ভাগ ব্যাটিং লাইনআপকে এমন কন্ডিশনে ধুঁকতে হতো।’ সীমিত ওভারের ম্যাচের সিরিজ জয়ের পেছনে মাশরাফি আর সাকিবের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন রোডস, ‘ওয়ানডে ও টি২০তে দুই অধিনায়কই তাদের বোলারদের দারুণভাবে ব্যবহার করেছে। মাশরাফি ও সাকিব, দুজনই বোলারদের ভালো পারফরম্যান্সটা বের করে নিয়েছে। আমাদের কিছু যোগ্যতাসম্পন্ন স্পিন বোলার রয়েছে এবং ভালো পেস বোলিংও ছিল, যা আমাদের উইন্ডিজে ভালো ফলাফল করতে সাহায্য করেছে। তবে টেস্ট ম্যাচের জন্য আমাদের কয়েকজন দ্রæত ও দীঘের্দহী বোলার খুঁজে বের করতে হবে, যারা উইকেটে জোরে আঘাত করে সুবিধা আদায় করে নিতে পারবে। যেমনটা উইন্ডিজ বোলাররা করে দেখিয়েছে।’ প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই লম্বা সফর পাওয়ায় বাংলাদেশ দল নিয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন নতুন কোচ। টেস্টে উন্নতি করতে কী দরকার তা উপলব্ধি করেছেন তিনি, ‘দেখুন টেস্ট ম্যাচে আমাদের ব্যাটিং সামথর্্য কিছুটা খোলাসা হয়েছে। আমাদের এখানে উন্নতি করার জায়গা আছে। আমাদের যোগ্য খেলোয়াড় রয়েছে কিন্তু আমাদের কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রæত মানিয়ে নিতে হবে ও প্রতিপক্ষ সম্পকের্ পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। বিশেষ করে যখন আমরা দেশের বাইরে খেলব।’