ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ

সিরিজ জয়ে চোখ মাহমুদউলস্নাহর

নতুন অধিনায়ক বলেন, 'তারা দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। আরও বেশি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করবে। ওরা মরিয়া হয়ে আছে, আমরাও কিন্তু মরিয়া হয়ে আছি।

প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ
জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত। ভারতের মাটিতে এসে বাঘা বাঘা দলগুলো যা পারেনি, তারই হাতছানি টাইগারদের। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ হেরে সিরিজে পিছিয়ে বাজেভাবে ধাক্কা খেয়েছে ভারত। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হলেও এমন হারে স্বাগতিক দর্শকদের চাপ, গণমাধ্যমের চাপ আছেই। ভারত যে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সেটা বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারছেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। সফরকারী অধিনায়ক জানালেন, সিরিজ জেতার সুযোগ কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে আছে তারাও। বিপর্যস্ত অবস্থায় কোনো রকম প্রত্যাশা ছাড়া ভারতে খেলতে এসে তাদের হারিয়ে দিয়ে হুট করে আসর জমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেই এখন সিরিজ জেতার হাতছানি। এমন ম্যাচে অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ মনস্তাত্ত্বিকভাবে এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশকেই। তবে এই ম্যাচে ঘুড়ে দাঁড়াতে চায় ভারত। রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ দ্বিতীয় টি২০তে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে নিজ দলের অনুশীলন শেষে মাহমুদউলস্নাহ জানান, দিলিস্নতে হারের পর প্রতিপক্ষ কতটা তেতে আছে অনুভব করতে পারছেন তিনি, 'আমরা হয়তো কিছুটা হলেও করতে পারছি, তারা দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। আরও বেশি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করবে। ওরা মরিয়া হয়ে আছে, আমরাও কিন্তু মরিয়া হয়ে আছি। এটা কিন্তু অনেক বড় একটা সুযোগ আমাদের জন্য, আমাদের ক্রিকেটের জন্য। আমরা প্রথমবারের মতো ভারতে একটা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে এসেছি। যদি আমরা ভালো খেলে সিরিজটা জিততে পারি আমাদের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন হবে।' দিলিস্নতে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ছিলেন তিন পেসার। উইকেটে গতির তারতম্য কাজে লাগিয়ে ভালোও করেছেন তারা। রাজকোটের উইকেট এমন না হলেও তিন পেসারেই আস্থা থাকছে বাংলাদেশের। তিন পেসারের সঙ্গে লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপস্নবের জায়গা পাকা। বাদবাকি পজিশনগুলোতেও চোটজাতীয় কোনো সমস্যা না হলে অদল-বদলের সুযোগ খুব একটা নেই। এমনিতে একাদশ নিয়ে লুকোছাপা থাকলেও এবার ম্যাচের আগের দিনে কোনো সংশয় রাখছে না বাংলাদেশ। উইকেটে খুব বড় কোনো বদল না হলে একাদশ থাকবে অপরিবর্তিত, বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ, 'কাল (বৃহস্পতিবার) বিকালে এসে উইকেট দেখব। তখন উইকেট দেখে যদি মনে হয় একাদশে পরিবর্তন করা প্রয়োজন- উইকেট যদি বেশি শুষ্ক থাকে-তখন হয়তো আমরা পরিবর্তন করলেও করতে পারি। তবে এই মুহূর্তে আমরা উইনিং কম্বিনেশনেই থাকার চেষ্টা করব।' দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলকে পাওয়া গেল বেশ ফুরফুরে মেজাজে। গত কয়েক দিন দেশের ক্রিকেটের ওপর চেপে বসা দমবন্ধ পরিস্থিতিও যেন উধাও। ক্রিকেটাররা এক ম্যাচের নৈপুণ্যেই পাচ্ছেন বাড়তি শক্তি, উদ্দীপনা, প্রেরণা। এই ম্যাচে খারাপ খেললেও সমালোচনার তীর ধেয়ে আসবে না। মন খুলে খেলতে নামতে এই ভাবনাও দিচ্ছে স্বস্তি। অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ স্পষ্টই জানালেন, ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে এই অবস্থা থেকে কেবল তাদের পাওয়ারই আছে অনেক, 'অবশ্যই এটা দুর্দান্ত সুযোগ (সিরিজ জেতার)। যখন আপনি প্রথম ম্যাচে জিতে এগিয়ে থাকবেন, সব সময়ই ভালো সুযোগ। ছেলেরাও উদ্যমী হয়ে আছে ভালো কিছু করতে। আশা করি, কাল ভালো কিছু করে দেখাতে পারব। শুরু থেকে আমাদের ওপর আসলে কোনো চাপ ছিল না। কারণ এখানে আমাদের হারানোর কিছু ছিল না। পাওয়ার ছিল অনেক। কালও তেমন আমাদের পাওয়ার থাকবে অনেক। আমরা আগ্রাসী ও ইতিবাচক ক্রিকেট খেলব।' দলের সেরা ফিল্ডারের হাত থেকে ছুটে যাচ্ছিল বল। মুঠো থেকে ছুটে যাচ্ছিল সহজ ক্যাচ। বাংলাদেশ পরিণত হয়েছিল বাজে এক ফিল্ডিং দলে। জরাগ্রস্ত ফিল্ডিং নিয়ে প্রায় প্রতি ম্যাচে কথা বলতে হচ্ছিল অধিনায়ককে। সেই সময় পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ, ফিল্ডিংয়ে করেছে বেশ উন্নতি। মাহমুদউলস্নাহ জানান, এখন ভালো একটি ফিল্ডিং সাইড হয়ে উঠতে খাটছেন তারা। আমরা ফিল্ডিংয়ে গুরুত্ব বেশি দিচ্ছি। আর আমাদের ফিল্ডিং কোচ রায়ানও সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে যেন, আমরা সবসময় আমাদের সেরাটা ফিল্ডিংয়ে দিতে পারি এবং ভালো ফিল্ডিং সাইড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারি। এ জন্য কষ্টটা করা।' ফিল্ডিংয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন ফিল্ডিং কোচ রায়ান। আরও উপভোগ্য করে তোলার চেষ্টা অনেকটাই সফল। খেলোয়াড়দের দেখা গেল নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে আরও ভালো করার চেষ্টা করতে। মাহমুদউলস্নাহর চাওয়া, ম্যাচে এটাই ধরে রাখুক তার সতীর্থরা।