ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব

ওমান থেকে শূন্য হাতে ফিরল বাংলাদেশ

আমার একটা জিনিসের জন্যই খারাপ লাগছে। স্কোরলাইন বলছে আমরা চারটা গোল খেয়েছি, আমরা চার গোল খাওয়ার মতো দল না। আমার মনে হয় না এই ফল আমাদের প্রাপ্য। ওমান আমাদের চেয়ে অনেক ভালো দল। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি (ওমানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলার)। কিন্তু অত ভালো দলকে যদি আপনি সুযোগ দেন তারা সেটা কাজে লাগাবেই। - জেমি ডে

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে শক্তিধর ওমানের বিপক্ষে হেরে শুক্রবার ঢাকায় ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।র্ যাংকিংয়ে একশগুণ এগিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে অন্তত এক পয়েন্টের প্রত্যাশা ছিল কোচ জেমি ডে'র। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে ওমানের সুলতান কাবুস কমপেস্নক্সে স্বাগতিক দলটির কাছে ৪-১ গোলের বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়েন মামুনুল-জামাল ভুইয়ারা। ফিফার্ যাংকিংয়ে ওমান আছে ৮৪তম স্থানে। যেখানে বাংলাদেশ আছে ১৮৪তম স্থানে।র্ যাংকিংয়েই দু'দলের শক্তির পার্থক্যটা বুঝা যায়। তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্সে কোচ জেমি ডে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ওমানের বিপক্ষে ভালো ফুটবল খেলতে। বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রথমার্ধ দারুণ লড়াই করেছে লাল-সবুজরা। তৃতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে যে স্কোয়াড রেখেছিলেন জেমি ডে, সেই দলটিই নামিয়েছিলেন ওমানের বিপক্ষেও। দুই ম্যাচের কৌশলও ছিল প্রায় একই। প্রথম মিনিট থেকেই রক্ষণ চাঙা রেখে আক্রমণে যায় জামাল-সুফিলরা। প্রতি আক্রমণে ১১ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার দূরপালস্নার দুর্দান্ত শট রুখে দেন ওমানের গোলরক্ষক আল হাবসি। নাহলে এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ। এর মাঝে ওমানও দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও স্পষ্ট কোনো গোলের সুযোগ সফল করতে পারেনি। যার কারণে প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। আশা ছিল দ্বিতীয়ার্ধেও ওমানকে আটকে রাখার। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকেই (৪৮ মিনিটে) মহসিন জৌহরের গোলে ম্যাচে লিড নেয় স্বাগতিকরা (১-০)। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশকে ৬৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে হতাশায় ভাসান মান্ধার আল আলায়ি (২-০)। এরই মধ্যে দুটি কর্নার পেয়েও গোল আদায় করে নিতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। ৭৮ মিনিটে আরশাদ সাইদ ব্যবধানটা আরও বাড়িয়ে নেন (৩-০)। তবে ব্যবধান কমাতে মরিয়া বাংলাদেশ, বিপলু আহমেদের গোলে ম্যাচে ফিরে আসে ৮০ মিনিটে। সোহেল রানার হেডে বল পেয়ে ভলিতে দারুণভাবে গোলবারের ডানপ্রান্ত বরাবর বল জালে জড়ান বিপলু (৩-১)। জাতীয় দলের জার্সিতে এটা তার দ্বিতীয় গোল। তবে এরপরই চতুরতার আশ্রয় নেয় স্বাগতিকরা। নিজেদের মধ্যে বল আদান প্রদান করতে করতে আরও একটি গোল আদায় করে নেবার সুযোগ খুঁজতে থাকে। ইনজুরি টাইমে আরমানের গোলে জয় নিশ্চিত হয় তাদের (৪-১)। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ খেলছে গ্রম্নপ 'ই'তে। ৪ ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট নিয়ে গ্রম্নপের ৫ দলের মধ্যে সব থেকে নিচে আছে তারা। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ আগামী বছর মার্চে। ২৬ মার্চ ঘরের মাটিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায়। এরপর শক্তিধর কাতারের বিপক্ষে হোম ম্যাচে ২-০ গোলে হারে। তৃতীয় ম্যাচে ভারতের সঙ্গে এ্যাওয়ে ম্যাচে ১-১ গোলের ড্র করে। ৪ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে ওমান। এই গ্রম্নপে সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিশ্বকাপের স্বাগতিক দল কাতার। দলটির কোচ জেমি ডে বলছেন, চার গোল খাওয়াটা ঠিক ম্যাচের আসল পরিস্থিতির বোঝাতে পারে না। বাংলাদেশের চেয়ে সবদিক দিয়েই ওমান খুব ভালো দল। তাই বলে চার গোল হজম করবে সফরকারীরা। এটাই মানতে পারছেন না জেমি, 'আমার একটা জিনিসের জন্যই খারাপ লাগছে। স্কোরলাইন বলছে আমরা চারটা গোল খেয়েছি, আমরা চার গোল খাওয়ার মতো দল না। আমার মনে হয় না এই ফল আমাদের প্রাপ্য।' প্রথমার্ধে দারুণ পারফরম্যান্স। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে হঠাৎ করেই খেই হারিয়ে বসে লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা। যে সুযোগটা নাকি নিজেরাই দিয়েছেন জামাল ভুইয়ারা। এ জন্যই দুই দলের মাঝে ব্যবধানটা আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে। জেমি ডে বলেছেন, 'ওমান আমাদের চেয়ে অনেক ভালো দল। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি (ওমানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলার)। কিন্তু অত ভালো দলকে যদি আপনি সুযোগ দেন তারা সেটা কাজে লাগাবেই।' আগামী ২৬ মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে খেলবে বাংলাদেশ নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে।