ভারত-বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ

দল হিসেবে খেলতে পারিনি: মুমিনুল

অধিনায়ক বলেন, 'আমরা ভালো ব্যাট করিনি। এর মধ্যেও ইতিবাচক দিক আছে। তবে আমরা দল হিসেবে খেলতে পারিনি। জুটি করতে পারিনি'

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ইন্দোরের হোল্কার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার দ্বিতীয় ইনিংসে মোহাম্মদ শামির বলে ডিফেন্স করছেন মুমিনুল হক। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় এই ডানহাতি পেসারের বলে এলবিডাবিস্নর ফাঁদে পড়ে মাত্র ৭ রান করে সাজঘরে ফিরে যান টাইগারদের নতুন টেস্ট অধিনায়ক -ওয়েবসাইট
ইন্দোরে লাল বলে ভারতের পেসারদের গতি, সু্যয়িং আর নিখুঁত লাইনলেন্থে নাস্তানাবুদ হয়েছে বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলিয়েও ব্যাট করতে পারেনি ১৩০ ওভার, করতে পারেনি চারশ রানও। ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে, কোথাও টেস্ট লড়াইয়ের ছাপ রাখতে না পারা বাংলাদেশ ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করা হার দেখেছে, ম্যাচের তৃতীয় দিনেই। ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজের প্রথমটিতে ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরেছে মুমিনুলের দল। কলকাতায় পরের টেস্ট হবে গোলাপি বলে, দিবারাত্রির। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে গোলাপি বল সু্যয়িং করে আরও বেশি। লাল বলে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ গোলাপি বল সামলাবে কোন তরিকায়? ভারতের কাছে বড় ব্যবধানে হারের অধিনায়ক মুমিনুল হক জানিয়েছেন ইন্দোরে খেলেই হয়ে গেছে সু্যয়িংয়ের প্রস্তুতি। দুই ইনিংসে বাংলাদেশের ২০ উইকেটের ১৪ উইকেটই নিয়েছেন ভারতের তিন পেসার। উইকেট নেওয়া ছাপিয়েও প্রতি মুহূর্তে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে আতঙ্ক ছড়াতে দেখা গেছে তাদের। বারবার পরাস্ত করে নাড়িয়ে দিয়েছেন খেলার ভিত। প্রথম টেস্টে স্রেফ উড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের সামনে এবার গোলাপি বলের চ্যালেঞ্জ। নেতৃত্বের শুরুটা মন মতো হলো না। তবে তাতে চিন্তিত নন মুমিনুল হক। আপাতত তার ভাবনা পরের টেস্টের আগে দলকে চাঙ্গা করা নিয়ে, 'আমার মনে হয়, একটা সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে যাওয়ার পর নিজেকে চাঙ্গা রাখা বড় একটা পরীক্ষা। দিবা-রাত্রির টেস্ট ওরা খেলেনি, আমরাও খেলিনি। আমার কাছে এটা নতুন একটা সুযোগ। একই সঙ্গে রোমাঞ্চকরও। আবার কবে গোলাপি বলে খেলব, সেদিক থেকে এটা নতুন সুযোগ, নতুন রোমাঞ্চ।' ইনিংস ব্যবধানে হেরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করার পেছনে ব্যাটসম্যানদের দায় বেশি দেখছেন অধিনায়ক, 'আমরা ভালো ব্যাট করিনি। তবে এর মধ্যেও ইতিবাচক দিক আছে। মুশফিক খুব ভালো খেলেছেন দুই ইনিংসেই। লিটন ভালো খেলেছে। মিরাজও ভালো করেছে আজ। তবে আমরা দল হিসেবে খেলতে পারিনি। জুটি করতে পারিনি। এটা খুব ভালো দলীয় পারফরম্যান্স নয়। ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ আমার মনে হয় ঠিক ছিল না। এই ধরনের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে আপনাকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। আপনারা খেলা দেখেছেন, ওরা আলগা বল খুব কম করে। আমার মনে হয়, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আরও বেশি ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করা উচিত।' শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, উন্নতির জন্য বাংলাদেশের টেস্ট দলের কাঠামোয় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। তার কথায় সায় আছে অধিনায়কের, 'যদি কাঠামোগত পরিবর্তন হয়ে, এটা ভালো একটা ব্যাপার হবে। এটা খেলোয়াড়দের মানসিক প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে।' মুমিনুল জানান কৃত্রিম আলোর নিচে প্রস্তুতি নেবেন কিন্তু আসল প্রস্তুতি হয়ে গেছে মাঠের খেলায়, 'আমার কাছে মনে হয় কৃত্রিম আলোর নিচে যতটুকু প্রস্তুতি নেওয়া যায় অতটুকুই ভালো। তবে আমরা যে সুইংয়ে খেলেছি, এরচেয়ে বেশি সুইং মনে হয় না হবে। অনেক বেশি সুইংয়ে ভালো প্রস্তুতি হয়ে গেছে বলে আমার মনে হয়। হয়তো একটু চ্যালেঞ্জ থাকবে, চ্যালেঞ্জটা একটু ভালোভাবে নেয়া উচিত। ইতিবাচকভাবে নিতে হবে। হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমাদের সবার গোলাপি বলে অনুশীলন করা উচিত। কলকাতায় মুস্তাফিজ খেলবে কি না, এখনও বলা কঠিন।' ইন্দোর টেস্টে ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ভারতের পেসারদের স্কিলের পাশে নিজেদের প্রয়োগের ভুল রাখছেন মুমিনুল, 'অবশ্যই হুমকি ছিল (ভারতের পেস আক্রমণ)। একই সঙ্গে মনে হয় আমরা ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়েছি। হুমকি তো ছিল, না হলে ওদের যে তিনজন বোলার আছে তাদেরকে নিয়ে ভারত এখন বিশ্বের এক নম্বর বোলিং দল। এখানে বড় একটি হুমকি ছিল, আমরাও সেভাবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি।' কিপিং না করলেও এই ম্যাচে পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করেছেন মুশফিকুর রহিম। দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকে চারে না খেলানো নিয়ে ম্যাচ জুড়ে সমালোচনা হয়েছে। মুমিনুল জানান, মুশফিকের ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তনের কথা ভাববেন তারা। 'এটা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে তাহলে আমার মনে হয় এটা ইতিবাচক ব্যাপার হবে। যদি মুশফিক ভাইকে ওপরে নেওয়া যায়। হঁ্যা, নেওয়া যায়। আমার মনে হয়, দল ভেবে সিদ্ধান্ত নেবে।'