ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার প্রতিশোধ

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
সৌদি আরবের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিলকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সেলেকাওদের হারানোর পর ট্রফি নিয়ে উচ্ছ্বাস করছেন মেসি-মার্টিনেস-আগুয়েরোরা -ওয়েবসাইট
আন্তর্জাতিক ফুটবলে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরাটা দুর্দান্ত হলো লিওনেল মেসির। আর অধিনায়ককে পেয়ে যেন জ্বলে উঠল আর্জেন্টিনা। শুক্রবার রাতে অধিনায়কের একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। সবচেয়ে বড় কথা ম্যাচে প্রায় একক আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছে তারা। যদিও জয় মিলেছে নূ্যনতম ব্যবধানে। সৌদি আরবের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে মেসির দেওয়া একমাত্র গোলে ১-০ ব্যবধানে জয় পায় আলবিসেলেস্তরা। খেলার প্রথম ১৫ মিনিটে দুই দলই পেনাল্টি পায় একটি করে। লক্ষ্যভ্রষ্ট স্পট কিকে ব্রাজিলকে হতাশ করেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। ব্যর্থ হতে বসেছিলেন মেসিও। তবে সেলেকাওদের গোলরক্ষক তার শট ঠেকানোর পর আলগা বল জালে ঠেলে দেন বার্সেলোনা তারকা। দুই দলের সবশেষ দেখায় কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। এই নিয়ে টানা ছয়টি ম্যাচে অপরাজিত থাকল দলটি। যার মধ্যে পাঁচটিতেই জয়। অন্যদিকে কোপা জয়ের পর টানা পঞ্চম ম্যাচে জয়হীন থাকলো তিতের ব্রাজিল। এরমধ্যে দুটিতে হেরেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে শুক্রবার রাতে অবশ্য কিছুটা তারুণ্যনির্ভর দল গড়েছিলেন ব্রাজিল কোচ তিতে। নেইমার, এদেরসন ও ডেভিড নেরেস ছিলেন না ইনজুরির কারণে। তার সঙ্গে অভিজ্ঞ দানি আলভেজ, মার্সেলো, ফার্নান্দিনহো, ডগলাস কস্তার মতো তারকা খেলোয়াড়দের রাখেননি কোচ তিতে। তাতে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি তার শিষ্যরা। প্রথমার্ধে লড়াই কিছুটা করলেও দ্বিতীয়ার্ধে একক আধিপত্য বিস্তার করেই খেলেছে আর্জেন্টিনা। বলের নিয়ন্ত্রণ ৬৪ শতাংশ ছিল তাদের। বার পোস্টে শট ১৪টি। যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে মোট ছয়টি শটের মাত্র একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে ব্রাজিল। এমনকি পেনাল্টি শটও মিস করেছে সেলেকাওরা। ম্যাচের নবম মিনিটে ডি-বক্সে জেসুসকে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার লেয়ান্দ্রো পারেদেস ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পট কিকে গোলরক্ষককে ঠিকই ফাঁকি দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার; কিন্তু শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। বল পোস্টের বাইরে কানায় লেগে চলে যায়। চার মিনিট পরই মেসির গোল, উচ্ছ্বাসে মাতে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া মেসিকে ফাউল করে বসেন আলেক্স সান্দ্রো। এবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের দুর্বল শট রুখে দিয়েছিলেন ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন; কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়ে আলগা বল অনায়াসে জালে পাঠান মেসি। বিরতির ঠিক আগে পাল্টা আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি। কিন্তু শটে তেমন জোর ছিল না, ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি আলিসনের। দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন জেসুস। কিন্তু শট নিতে দেরি করে ফেলেন তিনি। পরে উইলিয়ানের শটও প্রতিহত হয়। ৬৬তম মিনিটে মেসির দারুণ একটি ফ্রি-কিকে বল শেষ মুহূর্তে নিচু হয়ে ক্রসবার ঘেঁষে জালে জড়াতে যাচ্ছিল। লাফিয়ে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান আলিসন। ১০ মিনিট পর হের্মান পেস্‌েসইয়ার বুলেট গতির শটও কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক। ব্যবধান না বাড়লেও আর্জেন্টিনার জয়ের আনন্দ কমেনি এতটুকুও। শেষ বাঁশির বাজার সঙ্গে সঙ্গে সাইডলাইনে কোচ লিওনেল স্কালোনির মুখভঙ্গি দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, এই জয়ে কতটা রোমাঞ্চিত তিনি।