ভারত-বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ

ইডেনে ভালোর প্রত্যাশা আল আমিনের

ডানহাতি এই পেসার বলেন, 'যেহেতু বলটা ভালো, কন্ডিশন ভালো, আমরাও যদি ভালো করতে পারি, তাহলে টেস্টটা ইনশালস্নাহ ভালো-ইতিবাচক একটা ম্যাচ হবে।'

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ইন্দোর মিশন খুব একটা ভালো হয়নি টাইগারদের। এবার টার্গেট কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স। মঙ্গলবার সকালে ইন্দোরের হোটেল ছেড়ে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা করছেন আল আমিন-সাদমান ইসলাম-ইমরুল কায়েস-মেহেদী হাসান মিরাজরা -বিসিবি
ইন্দোর টেস্টের একাদশে জায়গা হয়নি। আর তাতে একটা লাভও হয়েছে ডানহাতি পেসার আল-আমিন হোসেনের। বাড়তি কয়েক দিন চালিয়েছেন গোলাপি বলে অনুশীলন। টানা কয়েক দিনের অনুশীলনে গোলাপি বল অনেকটাই চেনা এখন তার। এই বলের সুবিধা, অসুবিধা সব বিশ্লেষণ করে ফেলেছেন। তাতে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টে আল-আমিন পেসারদের জন্য দেখছেন অনেক রসদ। একই সঙ্গে পেসারদের বড় দায়িত্বও দেখছেন বেশি। প্রথম টেস্টে তিন দিনে হেরে যাওয়ার পর ইন্দোরে থেকেই গোলাপি বলে পুরোদমে দুদিন অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। একাদশের বাইরে থাকা আল-আমিন গোলাপি বল নিয়ে কাজ শুরু করেছেন আরও আগে থেকে। মঙ্গলবার সকালে ইন্দোর থেকে কলকাতা যাওয়ার আগে আল-আমিন জানিয়ে গেলেন গোলাপি বলের ভালো-মন্দ। বিশেষ করে লাল বলের সঙ্গে গোলাপি বলের কী ব্যবধান তা ব্যাখ্যা করেছেন তিনি, 'হঁ্যা, একটু ব্যবধান আছে। লাল বলের চেয়ে সিম একটু শক্ত এবং শাইন (ঘষে চকচকে) করা যায় খুব সহজে। সেক্ষেত্রে সবকিছু মিলিয়ে ভালো হবে মনে হয়। বলটা খুবই ভালো।' গোলাপি বলে সুইং অনেক বেশি। পেসাররা পেতে পারেন বাড়তি সুবিধা। ইডেনের উইকেটে স্বাভাবিকের তুলনায় এখনও ঘাস অনেক বেশি। স্রেফ এগুলো হলেই উইকেট মিলবে এমন না, আল-আমিন মনে করেন ভালো লাইন, লেন্থের কোনো বিকল্প নেই। সুবিধা থাকছে পেসারদের। কারণ মূল ভূমিকা নিতে হবে তাদেরই। আল-আমিনের উপলব্ধি, সুবিধা মানেই দায়িত্ব, 'এখন বল ভালো, সবকিছু ভালো, কন্ডিশনও যদি ভালো থাকে, আমরা যারা পেস বোলার খেলব, তাদের দায়িত্ব কিন্তু অনেক। কারণ ভালো জায়গায় বল করতে হবে। নাহলে ওদের কিন্তু সমস্যায় ফেলা যাবে না।' আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদেরর্ যাংকিংয়ে প্রথম ১১তে আছে ভারতের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান। আর তাই স্বাগতিক দলে সেরা সব ব্যাটসম্যান থাকায় দারুণ সতর্ক আল-আমিন, 'ওদের সব ব্যাটসম্যানই টপ ক্লাস।র্ যাংকিংয়ের এক থেকে দশ পর্যন্ত দু-তিনজন ব্যাটসম্যান আছে। বোলারদের জন্য তাই একটা পরীক্ষা বলে আমার মনে হয় গোলাপি বলে। কারণ, যেহেতু বলটা ভালো, কন্ডিশন ভালো, আমরাও যদি ভালো করতে পারি, তাহলে টেস্টটা ইনশালস্নাহ ভালো-ইতিবাচক একটা টেস্ট হবে।' ইন্দোরে দলের কাহিল দশা ইন্দোরেই ফেলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গোলাপি বল যেহেতু ভারতের জন্যও নতুন, কলকাতা টেস্টে দারুণ কিছু করারও স্বপ্ন বোনার ইঙ্গিত দিয়েছেন আল-আমিন, 'আমরা সবাই উন্মুখ হয়ে আছি। সামনে ঐতিহাসিক টেস্ট, গোলাপি বলে। এখানে ভারতও অপরিচিত, আমরাও অপরিচিত। দুদিক থেকে অপরিচিত। বলটাও নতুন। সেই হিসেবে মনে হয়, ভালো একটা চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ হবে। শেষ তিন-চার দিন ধরে আমরা অনুশীলন করছি। কলকাতায় যাওয়ার পরও দু-তিন দিন সুযোগ পাব। সবকিছু মিলে, অতীতে যা ঘটে গেছে মানে শেষ টেস্ট খারাপ হয়েছে, আর সেগুলো নিয়ে চিন্তা করলে সামনে আগানো খুব কঠিন। আমরা চিন্তা করছি, দলগতভাবে কীভাবে ভালো খেলা যায়, কীভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়। সেই চেষ্টাই থাকবে কলকাতা টেস্টে।' নতুন বলের চেয়ে পুরানো গোলাপি বলে ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ বেশি দেখছেন আল-আমিন, 'সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে দেওয়া হবে তখন বলের মুভমেন্ট অনেক বেড়ে যাচ্ছে- আমরা প্র্যাকটিসে এমনই বুঝলাম। ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এখানে যে দলের বোলাররা ভালো করবে সেই দল এগিয়ে থাকবে এই টেস্টে।' আপাতত নতুন বলের সুইং বোঝার দিকেই মনোযোগ বাংলাদেশের। কলকাতা গিয়ে পানিতে বল ভিজিয়ে অনুশীলন করতে পারে সফরকারীরা। এই বিষয়টি নিয়ে আল-আমিন বলেন, 'আমরা যারা পেস বোলার আছি এখনো বল ভিজিয়ে অনুশীলন করিনি। নতুন বলে কীভাবে সুইং পাওয়া যায় ও বলটা ব্যবহার করা যায় সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। হয়তো কলকাতায় গিয়ে যদি টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা থাকে বা আমরাও দেখি সন্ধ্যার পরের অনুশীলনে বল ভিজে যায়, তখন আমরা ওভাবে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।' আগামী শুক্রবার শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এই ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো দিবারাত্রির টেস্টের স্বাদ পাবে টাইগাররা।