আলফাজদের উত্তরসূরি হতে চান জীবনরা

আমাদের লক্ষ্য থাকবে স্বর্ণ জয় করা। আমার জায়গা থেকে সব সময় চেষ্টা থাকবে গোল আদায় করে নেয়া। সেটা যে কোন দলের বিপক্ষেই। আমাদের এবারের দলটা একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল। আমার বিশ্বাস এই দলের পক্ষে স্বর্ণ জয় সম্ভব- নাবীব নেওয়াজ জীবন

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
এসএ গেমস ফুটবলে প্রথম স্বর্ণটি এনে দিয়েছিলেন যে ফুটবলার তার নাম আলফাজ আহমেদ। তার একমাত্র গোলেই ১৯৯৯ সালে কাঠমান্ডুতে ফাইনালে জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলো লাল-সবুজরা। দীর্ঘ ২০ বছর পর আবারো সেই কাঠমান্ডুতেই সোনা জয়ের স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। সাফল্য এনে দিয়ে আলফাজদের উত্তরসূরি হতে চান জীবন-জামালরা। এসএ গেমসে ছেলেদের ফুটবলে বাংলাদেশ দলের সাফল্যের তালিকাটা কিন্তু একদম ছোট নয়। যদিও গত ১২টি আসরে এই ইভেন্টে মাত্র দুটি স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশ। তবে ৪ বার রানার্স আপ হয়ে রৌপ্য পদক জেতার সাফল্যও আছে লাল-সবুজদের। ২ বার তৃতীয় হয়ে জিতেছে ব্রোঞ্জ। ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হয় এসএ গেমস। প্রথম আসরেই অংশ নিয়ে ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। সেই আসরটিও হয়েছিল নেপালের কাঠমান্ডুতে। যেখানে ফাইনালে স্বাগতিক দলটির কাছে ৪-২ গোলে হেরে রানার্স আপ হয়ে রৌপ্য পদক জেতে বাংলাদেশ। পরের আসরটি হয় ১৯৮৫ সালে। সে আসরের ফাইনাল খেলে লাল-সবুজরা। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে অমীমাংসিত ম্যাচে শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শু্যট আউটে ৪-১ গোলে জিতে যায় ভারত। আবারো রৌপ্য পদক জিতে বাংলাদেশ। ১৯৮৭ সালে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১-০ গোলে হেরে চতুর্থ হয় লাল-সবুজের ছেলেরা। ১৯৮৯ সালে ফাইনালে আবারো সেই পাকিস্তানকে পায় তারা। এবারো ১-০ গোলে হেরে রানার্স আপ হয় বাংলাদেশ। ১৯৯১ সালে স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয় তারা। ১৯৯৫ সালে ফাইনালে ভারতের কাছে ১-০ গোলে হেরে আবারো রৌপ্য নিয়েই সন্তুষ্ট থেকেছে বাংলাদেশ। তবে ৪ বছর পর ১৯৯৯ সালে হওয়া আসরটিতে নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় লাল-সবুজরা। অথচ ঐ আসরটিতে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিলো মালদ্বীপের বিপক্ষে ২-১ গোলের হার দিয়ে। কিন্তু ভেঙে না পড়ে পরের ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়ে ঘুরে দাড়ায় তারা। সেমিতে শক্তিধর ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপাজয়ের সম্ভাবনা জোরালো করে তোলে। ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় নেপালকে। তাদেরও ১-০ গোলে হারিয়ে অধরা স্বর্ণপদক নিজেদের করে নেয় লাল-সবুজরা। ফাইনালে বাংলাদেশের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন আলফাজ আহমেদ। বাংলাদেশ দলের পরের বড় সাফল্যটি ধরা দেয় ২০১০ সালে। স্বর্ণ জেতা ঐ আসরে গ্রম্নপ পর্বে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এরপর ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ভুটানকে। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে পরের ম্যাচেও, মালদ্বীপকে ১-০ গোলে হারিয়ে। নাম লেখায় শেষ চারে। সেখানে শক্তিশালী ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে টিকেট কাটে ফাইনালের। সেখানে আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে জয়োলস্নাসে মাতে। দলের জয়ে ১টি করে গোল করেন মিশু, এনামুল, কোমল ও সবুজ। সর্বশেষ আসরটি হয় ২০১৬ সালে। সেখানে ভারতের কাছে সেমিতে হারার পর তৃতীয় স্থানের জন্য মালদ্বীপের সঙ্গে লড়াই করে বাংলাদেশ। যেখানে প্রথমে ২-২ গোলের ড্র করে পেনাল্টি শু্যটআউটে ৫-৪ গোলে জিতে তৃতীয় হয় লাল-সবুজরা। এবার ভারত খেলছে না এসএ গেমসে। তাই বাংলাদেশের সামনে বড় সুযোগ স্বর্ণ জয়ের। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ এখন নেপাল আর মালদ্বীপ। প্রথম আসরের মতো আবারো উজ্জল হতে চান জীবন-জামালরা। হতে চান আলফাজদের উত্তরসূরি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ১৬ গোল করা ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন চান আলফাজদের উত্তরসূরি হতে,'অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য থাকবে স্বর্ণ জয় করা। আমার জায়গা থেকে সব সময় চেষ্টা থাকবে গোল আদায় করে নেয়া। সেটা যে কোন দলের বিপক্ষেই। আমাদের এবারের দলটা একটা ভারসাম্যপূর্ণ দল। আমার বিশ্বাস এই দলের পক্ষে স্বর্ণ জয় সম্ভব।'