রেকর্ড ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর মেসির

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
প্যারিসে সোমবার ব্যালন ডি'অর পুরস্কার হাতে লিওনেল মেসি -ওয়েবসাইট
গেল এক সপ্তাহ ধরে চলে আসা গুঞ্জনটাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো। ভার্জিল ফন ডাইক ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পেছনে ফেলে ব্যালন'অর নিজের করে নিয়েছেন লিওনেল মেসি। ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো এই পুরস্কার জিতলেন আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। আর তাতে ২০১৫ সালের পর থেকে ব্যক্তিগত অর্জনের খরাও কাটালেন মেসি। গত অগাস্টে মেসি ও রোনালদোকে হারিয়ে উয়েফা বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন ভার্জিল ফন ডাইক। পরের মাসে এই ডাচ ডিফেন্ডার ও পর্তুগিজ তারকা রোনালদোকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো 'দ্য বেস্ট ফিফা মেনস পেস্নয়ার' পুরস্কারটি জিতে নেন বার্সেলোনা তারকা। তাহলে ব্যালন ডি'অর জিতবে কে? প্রশ্নটিকে ঘিরে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। এবার তার উত্তর মিলল। প্যারিসে সোমবার এক জমকালো অনুষ্ঠানে মেসির হাতে তুলে দেওয়া হয় ফরাসি সাময়িকী 'ফ্রান্স ফুটবল-এর পুরস্কারটি, ব্যালন ডি'অর ২০১৯। এদিন তার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন গতবারের বিজয়ী লুকা মাদ্রিচ। রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো পুরস্কারটি জিতলেন আর্জেন্টাইন তারকা। এতদিন সমান পাঁচবার করে পুরস্কারটি জয়ের রেকর্ড ছিল মেসি ও রোনালদোর। বরাবরের মতো গত মৌসুমটাও দারুণ কাটে মেসির। বার্সেলোনাকে লা লিগা জেতাতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কাতালান ক্লাবটির চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ও কোপা দেল রের ফাইনালে ওঠাতেও বড় অবদান ছিল আর্জেন্টাইন তারকার। ক্লাব পর্যায়ে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে আরও বেশি উজ্জ্বল ছিলেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। লা লিগায় সর্বোচ্চ ৩৬ গোল করে একই সঙ্গে জিতে নেন পিচিচি ট্রফি ও ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে করেন সর্বোচ্চ ১২ গোল। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে গেল মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৮ ম্যাচ খেলে ৫৪ গোল করেন মেসি। ২০০৯ সালে প্রথম বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছিলেন মেসি। ফিফার বর্ষসেরা ও ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর ব্যালন ডি'অর পুরস্কার শুরুতে আলাদাভাবে দেওয়া হতো। সেবছর দুটিই জিতেছিলেন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছয় বছর দুটি পুরস্কার একীভূত হয়ে নাম হয় ফিফা ব্যালন ডি'অর। পরপর তিন বছর ওই পুরস্কার জিতেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এর পরের দুই বছর রোনালদো জেতার পর ২০১৫ সালে আবারও পুরস্কারটি জিতে নেন মেসি, জিতেন ওই সময়ের রেকর্ড পঞ্চমবারের মতো। ২০১৬ সাল থেকে আবার আলাদাভাবে দেওয়া হচ্ছে পুরস্কার দুটি। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ফিফা বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি'অর জিতেন রোনালদো। আর ২০১৮ সালে সবকটি পুরস্কার জিতেন লুকা মাদ্রিচ। এ বছরের বিজয়ী নির্বাচনে গত ২১ অক্টোবর ৩০ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনটি। এবার তার মধ্য থেকে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের ভোটে সেরা নির্বাচিত হলেন ৩২ বছর বয়সি লিওনেল মেসি। এদিকে নারী ফুটবলের ব্যালন ডি'অর জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ফরোয়ার্ড মেগানর্ যাপিনো। আর সেরা অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবলারের পুরস্কার 'কোপা অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছেন এই মৌসুমে আয়াক্স থেকে জুভেন্টাসে যোগ দেওয়া ম্যাথিয়াস ডি লিট। আর 'ফ্রান্স ফুটবল'-এর পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো দেওয়া সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার 'ইয়াশিন ট্রফি' জিতেছেন লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ব্রাজিলের হয়ে কোপা আমেরিকা জেতা আলিসন ব্রেকার। দারুণ প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড জানালেন, এমন অর্জন অবিশ্বাস্য। তবে এমন অর্জনের পর প্রতিক্রিয়ায় সতীর্থদের অবদানের কথা উলেস্নখ করতে ভুল করেননি বার্সা অধিনায়ক, 'যেসব সাংবাদিকরা আমাকে ভোট দিয়েছেন এবং চেয়েছেন যে আমি এই পুরস্কার জিতি, তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। আমার সতীর্থদের অনেক অনেক ধন্যবাদ যারা সত্যি এই পুরস্কার জয়ে অনেক বেশি অবদান রেখেছে। এটা অবিশ্বাস্য, সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।'