স্বর্ণকন্যা প্রিয়া শঙ্কামুক্ত

সিটি স্ক্যান রিপোর্ট নরমাল। কিছু ওষুধ দিয়েছি। আগামী সাত-আট দিন তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে এবং ওষুধগুলো খেতে হবে। এ সময় খেলাধুলা করতে নিষেধ করেছি। ফ্লাইটে চড়তে পারবে; দেশে ফিরতে পারবে চিকিৎসক অভিষেক চাতুরবেদী

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আগেরদিন কারাতে ইভেন্টে সোনা জিতেছেন মারজান আক্তার প্রিয়া। বুধবার দলগত ইভেন্টে খেলতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে চিকিৎসকের পরিচর্যায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়েন প্রিয়া -ওয়েবসাইট
ক্রীড়া প্রতিবেদক দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের জেতা চারটি স্বর্ণের একটি এসেছে মারজান আক্তার প্রিয়ার নৈপুণ্যে। তবে স্বর্ণজয়ী এই ক্রীড়াবিদকে বুধবার নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কারাতে ডিসিপিস্ননের নারী দলীয় কুমিতের সেমিফাইনালে শ্রীলংকার প্রতিযোগীর বিপক্ষে খেলার সময় চোয়ালে আঘাত পান তিনি। সিটি স্ক্যানে গুরুতর কিছু ধরা পড়েনি। চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন প্রিয়া। কাঠমান্ডুর সাতদাবাতোর ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কমপেস্নক্সে বুধবার ফাইনালে ওঠার ম্যাচে শ্রীলংকার প্রতিযোগীর সঙ্গে লড়াইয়ে দুইবার চোয়ালে আঘাত পান প্রিয়া। ম্যাটে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারালে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কমপেস্নক্সে থাকা ডাক্তাররা চিকিৎসা দেন। এরপর পাঠিয়ে দেন দশরথ স্টেডিয়ামের কাছে বস্নু-ক্রস হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে অর্থো সার্জন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট প্রাজ্বল মানের কাছ থেকে প্রিয়া চিকিৎসা নেওয়ার পর তার সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। জানান শঙ্কা না থাকার কথা, 'সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। সে রিপোর্টও নরমাল এসেছে। ডাক্তারের সঙ্গে কথা হয়েছে। সমস্যা নেই। তারপরও ডাক্তার ওকে দুই ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখবে। এরপর সবকিছু ঠিক থাকলে ছাড়পত্র দেবেন।' নিউরো সার্জন অভিষেক চাতুরবেদীর পর্যবেক্ষণে ছিলেন প্রিয়া। মারাত্মক কিছু পাওয়া যায়নি স্ক্যান রিপোর্টে বলে জানান তিনি, 'সিটি স্ক্যান রিপোর্ট নরমাল। কিছু ওষুধ দিয়েছি। আগামী সাত-আট দিন তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে এবং ওষুধগুলো খেতে হবে। এ সময় খেলাধুলা করতে নিষেধ করেছি। ফ্লাইটে চড়তে পারবে; দেশে ফিরতে পারবে।' সাউথ এশিয়ান গেমসে কারাতে সোনা জয়ের একদিন পরেই চোটে পড়েছেন প্রিয়া। বুধবার ইভেন্ট ভেনু্য সাতদাবাতোর ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস কমপেস্নক্সে দলগত ইভেন্টে শ্রীলংকার প্রতিযোগীর সঙ্গে লড়াইয়ের এক পর্যায়ে চোয়ালে আঘাত পান প্রিয়া। সাথে সাথে চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এরপর স্থানান্তর করা হয় বস্নু-ক্রস হাসপাতালে। এসএ গেমসের কারাতের মেয়েদের কুমিতে অনূর্ধ্ব-৫৫ কেজিতে জিতেছেন সোনার পদক। বুধবারও প্রিয়া খেলছিলেন মেয়েদের কুমির দলগত ইভেন্টে। কিন্তু হঠাৎ করেই আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে তাকে। শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন প্রিয়া। একই সময় আহত হন আরেক কারাতে খেলোয়াড় মাউনজেরা বর্ণা। তবে বর্ণার আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বাউটের খেলা চলার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। খেলার একপর্যায়ে হঠাৎ করে প্রিয়ার ঘাড়ের পেছনে জোরে ঘুষি মারেন শ্রীলংকার কারাতেকা। ঘুষি খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান ম্যাটের ওপর। এরপর ওঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ কারন্ত আর উঠতে পারেননি। সঙ্গে সঙ্গে গেমসের মেডিকেল দল ছুটে আসে। তারা তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন প্রিয়াকে। সতীর্থ কারাতে খেলোয়াড় আবিদা সুলতানা বলছিলেন, 'তখন দ্বিতীয় বাউটের খেলা ছিল। শ্রীলংকার খেলোয়াড় অনেক জোরে মেরেছে প্রিয়াকে। এটা অবশ্য খেলারই অংশ। এ জন্য রেফারি ফাউলও দেন। ও বারবার বলছিল, আমি খেলতে চাই। আমাকে খেলতে দাও। কিন্তু এই অবস্থায় কোনোভাবেই ওকে খেলতে দেবে না চিকিৎসকরা। ওর ঘাড়ের পেছনে এখনো ব্যথা রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। আশা করি দ্রম্নত সুস্থ হয়ে উঠবে প্রিয়া।' হাসপাতালে প্রিয়ার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি অ্যাথলেট আবিদা সুলতানা আরও জানান শ্রীলংকার প্রতিযোগীর জোরালো আঘাতেই চোট পান সোনাজয়ী তারকা। তিনি বলেন, 'প্রিয়ার খেলার সময়ও বিষয়টা এ রকমই ছিল। প্রতিপক্ষ হেভিওয়েট পেস্নয়ার ছিল। ৬৮ (পস্নাস) কেজি ওজন শ্রেণির খেলোয়াড়। তার হিট জোরে লেগেছে। এখানে ডাক্তার প্রথম ইসিজি করল। সবকিছু নরমাল পেয়েছে। একটাই সমস্যা পেয়েছে, কনসাসনেস একটু কম। ও বলছে, মাথার পেছনের দিকে ব্যথা। ডাক্তার তাকে পেইন কিলার দিয়েছেন।' জানা গেছে চিকিৎসা শেষে প্রিয়া এখন শঙ্কামুক্ত, নিশ্চিত করেছেন কারাতে ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ক্য শৈ হ্লা। কারাতে ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি বলেছেন, 'তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রিয়ার কাছে থাকা ম্যানেজারের সঙ্গে এইমাত্র কথা বললাম আমি। তিনি আমাকে নিশ্চিত করেছেন, প্রিয়া এখন সুস্থ। তার আহত হওয়ার কারণে আমরা একটি সোনা হারালাম।'