এসএ গেমস (ফুটবল)

সোনার মঞ্চে যেতে কঠিন সমীকরণ

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সোনা জয়ের আশা নিয়ে কাঠমান্ডু গিয়ে এখন কঠিন সমীকরণের মারপ্যাঁচে পড়ে গেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল। সাউথ এশিয়ান গেমসে নিজেদের তৃতীয় স্বর্ণ জয়ের স্বপ্নে হিমালয় সমান চাপ লাল-সবুজদের জন্য। গ্রম্নপ পর্বের শেষ ম্যাচে কেবল জিতলেই চলবে না, ফাইনালে যেতে হলে ১৯৯৯ ও ২০১০ সোনাজয়ীদের তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের ম্যাচের দিকেও। বৃহস্পতিবার শ্রীলংকার বিপক্ষে জয়ের প্রায় তিনদিন পর আবারো মাঠে নামতে হবে তাদের। আগামী রোববার গ্রম্নপের শেষ ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ২৩ ফুটবল দল। এর আগে রিকভারির সময় পাচ্ছেন জামাল-সুফিলরা। নিজেদের শেষ ম্যাচে অবশ্যই জয় চান কোচ জেমি ডে। সেই সঙ্গে সোনা জয়ের স্বপ্নটাও এখনো ধরে রেখেছেন। বড় আশা নিয়ে আসরে নেমে প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ। যে ভুটানকে কিছুদিন আগে নিজেদের মাঠে হেসেখেলেই হারিয়েছিল জেমি ডের শিষ্যরা, সেই দলটার যুবাদের কাছে ১-০ গোলে হেরে বসে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে লম্বা সময় এগিয়ে থেকেও ম্যাচ শেষ হয়েছে হতাশা দিয়ে, ১-১ গোলের ড্রয়ে। ৩ ম্যাচে ১টি করে জয়, হার ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে বাংলাদেশ। সোনার পদকের লড়াইয়ে যাওয়ার আশা এখনো টিকে আছে। সেজন্য শেষ ম্যাচে নেপালকে হারাতে তো হবেই, জিততে হবে বড় ব্যবধানেও। কারণ আগের তিন ম্যাচে লাল-সবুজদের গোলের খাতায় ব্যবধানে লেখা আছে বিশাল এক শূন্য! ৫ দলের মধ্যে ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাটা সব থেকে বেশি নেপাল আর ভুটানের। বৃহস্পতিবার মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের ফাইনালে উঠার রাস্তাটা আরও কঠিন করে দিয়েছে ভুটান। তারা ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। স্বাগতিক নেপাল ২ ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্টে দুইয়ে। শ্রীলংকা ও মালদ্বীপের পয়েন্ট ২ করে। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির এ প্রতিযোগিতায় আগামী রোববার বাংলাদেশ নিজেদের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে। নেপাল নিজের তৃতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে জিতলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে। প্রত্যাশা থাকতে হবে শনিবার যেন শ্রীলংকার কাছে হেরে যায় ভুটান। আর ভুটান ও নেপাল যদি নিজ নিজ ম্যাচে জিতেই যায় তখন কেবল শেষ ম্যাচে জিতলেই হবে না জামালদের, জিততে হবে ৪ থেকে ৫ গোলের বিশাল ব্যবধানে। স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে এ জয় পাওয়াটা বেশ কঠিনই বলা চলে! ৯ বছর পর নেপালের মাটিতে আবারো সোনা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন জামাল-সুফিলরা। এসএ গেমসে অংশ নেয়া বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ২৩ দলটিকে প্রায় জাতীয় দলই বলা চলে। কিন্তু সেই দলটিই এবারের আসরে জ্বলে উঠতে পারছে না। অথচ বিগত কয়েক মাসে এই দলটিকেই দেখা গেছে অন্য চেহারায়। এই ফুটবলাররাই কিন্তু বদলে দিয়েছিলেন দেশের ফুটবল। তাই গেমসে প্রথম দুই ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্স হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ। ফুটবল প্রেমিদের অনেকেই অভিযোগ করছেন সামনে ফেডারেশন কাপ। আর তাই ফুটবলাররা দেশের থেকে বেশি ক্লাব নিয়েই চিন্তা করছেন। তারা খেলছেন পা বাঁচিয়ে। বাংলাদেশের ফুটবলে এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। জামালদের উত্তরসূরি এমিলি-জাহিদদেরও এমন প্রশ্নের সামনে পড়তে হয়েছে অসংখ্যবার। অভিযোগের সত্যতা মিলুক আর নাই মিলুক, একথা সত্য যে কোটি টাকা খরচ করে দল গঠন করে দেশের ফুটবল ক্লাবগুলো। তারাও নিশ্চয়ই চাইবেন না যে মৌসুম শুরুর আগেই তাদের কোনো ফুটবলার ইনজুরিতে পড়ে যাক। তবে কোচ জেমি ডে অবশ্য বলছেন ৪ দিনের মধ্যে তিনটি ফুটবল ম্যাচ খেলাটাই বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশের ছেলেদের। এ প্রসঙ্গে জেমি বলেছেন, 'মাত্র ৪ দিনের মধ্যে তিনটি ম্যাচ খেলে ছেলেরা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তারা গত ১৮ মাস ধরে খেলার মধ্যে আছে। তেমন কোনো বিশ্রামই পাচ্ছে না। তিন দিনের বিরতি থাক বা না থাক। এটা তেমন কোনো কাজে আসবে না। তারা ক্লান্তই থাকবে।' এবারের আসরে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ফুটবল থেকে ভারত নাম প্রত্যাহার করে নেয়াতে সূচি এবং ফরমেটে এসেছে পরিবর্তন। যে কারণে ৫টি দলকে খেলতে হচ্ছে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে। বাংলাদেশ, স্বাগতিক নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা আর ভুটানের মধ্যে গ্রম্নপে শীর্ষে থাকা দুই দল লড়াই করবে সোনার জন্য। শিরোপা নির্ধারণী ওই ম্যাচটি হবে ১০ ডিসেম্বর।