আর্সেনালের দুর্দশা অব্যাহত

প্রকাশ | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বৃহস্পতিবার ব্রাইটনের বিপক্ষে গোল করার পর উচ্ছ্বসিত আর্সেনালের খেলোয়াড়রা। শেষতক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি গানারদের -ওয়েবসাইট
উনাই এমেরিকে বরখাস্ত করে আর্সেনালের অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফ্রেডি ইউনবার্গকে। কিন্তু দলটির সাবেক এই মিডফিল্ডারের অধীনেও গানারদের দুর্দশা যেন কাটছেই না। বৃহস্পতিবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ইউনবার্গের প্রথম হোম ম্যাচে ব্রাইটনের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে আর্সেনাল। প্রথমবারের মতো এমিরেটস স্টেডিয়ামে গানারদের হারাল ব্রাইটন। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নিজেদের শেষ ৯ ম্যাচে জয়হীন থাকল আর্সেনাল। ১৯৭৭ সালের মার্চের পর যা তাদের সবচেয়ে দীর্ঘ জয়হীন যাত্রা। ৪২ বছর আগে তারা জয়হীন ছিল টানা ১০ ম্যাচে। পরের ম্যাচও জিততে না পারলে নিজেদের বিব্রতকর সেই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবে গানাররা। রাতের আরেক ম্যাচে শেফিল্ড ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছে নিউক্যাসল ইউনাইটেড। গত সপ্তাহে নরউইচ সিটির মাঠে ড্র দিয়ে আর্সেনালের ডাগআউটে যাত্রা শুরু করেছিলেন ফ্রেডি ইউনবার্গ। এমিরেটসে কিংবদন্তি গানারারের কাছ থেকে ভালো কিছুরই প্রত্যশা ছিল আর্সেনাল সমর্থকদের। কিন্তু এমিরেটসে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি ইউনবার্গের, উল্টো তার অভিষেকে হেসেছে ব্রাইটন। প্রথমবারের মতো এমিরেটসে 'গানার'দের হারিয়ে দিয়েছে 'সিগাল'রা, দ্বিতীয় ম্যাচেই দুয়ো শুনে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইউনবার্গকে। গত মৌসুমে ইউরোপা লিগে অস্টারসান্ডের পর এবার ব্রাইটনের ম্যানেজার হয়েও এমিরেটসে জয়ের দেখা পেলেন গ্রাহাম পটার। ১৫ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ১০-এ থাকল আর্সেনাল। নরউইচ ম্যাচের মতো এবারও একাদশে ক্লাব রেকর্ড সাইনিং নিকোলাস পেপেকে বেঞ্চে রেখেছিলেন ইউনবার্গ। ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে দুই প্রান্তে খেলেছেন পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াং এবং জো উইলক। কিন্তু প্রথমার্ধে আক্রমণে একেবারেই নিষ্প্রভ ছিল ইউনবার্গের দল। অবামেয়াং-উইলকদের মাঝে বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল স্পষ্ট। সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে ব্রাইটন। ৩৬ মিনিটে প্যাস্কেল গ্রসের কর্নার অ্যারন কনোলির গায়ে লেগে অ্যাডাম ওয়েবস্টারের পায়ে আসলে জোরাল শটে দলকে লিড এনে দেন তিনি। প্রথমার্ধে ব্রাইটন গোলরক্ষক ম্যাট রায়ানকে একেবারেই পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি আর্সেনাল। প্রথমার্ধ শেষে দুয়ো শোনা আর্সেনালকে হয়তো দারুণ টিমটকে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন ইউনবার্গ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরে তারা, ৫০ মিনিটে মেসুত ওজিলের কর্নার থেকে হেডে দলকে সমতায় ফেরান আলেকজান্ডার লাকাজেত। সমতায় ফেরার কিছুক্ষণ বাদেই লিডও নিয়েছিল আর্সেনাল। কিন্তু ৬৩ মিনিটে ওজিলের ফ্রি-কিকে ডেভিড লুইজ লক্ষ্যভেদ করলেও অফসাইডে বাতিল হয় গোলটি। দ্বিতীয়ার্ধ্বে বাকি সময় আর আক্রমণে তেমন সুবিধা করতে পারেনি ইউনবার্গের দল। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে পটারের দল। ৮০ মিনিটে গ্রসের ক্রসে হেড করে দলকে লিড এনে দেন নিল মঁপে। ম্যাচ বাঁচানোর জন্য মাত্র মিনিট দশেক থাকলেও ব্রাইটন রক্ষণকে তেমন বিপদেই ফেলতে পারেনি আর্সেনাল। ম্যাচের প্রায় ১০-১২ মিনিট বাকি থাকতেই এমিরেটস ছাড়া শুরু করেন গানার সমর্থকেরা। কারণ ম্যাচ বাঁচানোর জন্য মাত্র ৭-৮ মিনিট থাকলেও ব্রাইটনের গোলরক্ষককে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি গানাররা। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়ে আর্সেনালকে। তাই তো শেষ বাঁশির পর জোর দুয়ো শুনতে হয়েছে ওজিলদের। ক্লাব কিংবদন্তি হওয়ার আবেগটা হয়তো আর কাজে দিচ্ছে না ইউনবার্গের। শেষ বাঁশির পর দুয়ো শোনা ইউনবার্গও জানেন, জয়ের ধারায় ফিরতে না পারলে হয়তো এই মৌসুমেই বিদায় ঘণ্টা বেজে যেতে পারে তারও।