১৩তম এসএ গেমসে রোববার স্বর্ণপদক জয়ের পর ট্রফি নিয়ে উচ্ছ্বাস করছেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সদস্যরা -বিসিবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রতিপক্ষ তুলনামূলক অনেক দুর্বল। সেই দলের কাছেও প্রায় হেরে বসেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শঙ্কা দূর করে প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে মেয়েরা। তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শেষ বলের ফয়সালায় জিতে সোনার পদক পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। এসএ গেমসে মেয়েদের ক্রিকেটে পোখারায় রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে রোববার ফাইনালে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ২ রানে।
দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে মেয়েদের ক্রিকেট এবারই প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর প্রথমবারেই বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংস শেষে হয়তো কল্পনাতেও আসেনি বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে। ব্যাটারদের বাজে পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ২০ ওভারে করতে পেরেছিল কেবল ৯১ রান। লঙ্কানরা আটকে যায় ৮৯ রানে। শেষ ওভারে লঙ্কানদের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। দেশসেরা পেসার জাহানারা আলমের করা ওভার থেকে এসেছে কেবল চারটি সিঙ্গেল। শেষ বলে শ্রীলংকার প্রয়োজন ছিল ৩ রান। জাহানারা দেননি কোনো রান।
বাংলাদেশের জাতীয় দল খেললেও শ্রীলংকার এটি অনূর্ধ্ব-২৩ দল। আনকোরা দলটিতে অধিনায়ক হার্শিথা মাদাভিই কেবল খানিকটা পরিচিত নাম। সেই দলের বিপক্ষেও ধুঁকতে হলো বাংলাদেশকে। তবু শেষ পর্যন্ত মিলেছে সোনার স্বস্তি।
সকালের ভেজা উইকেটে ব্যাট করাটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতা বোলিংয়ে চমৎকারভাবে পুষিয়ে দিয়ে ফাইনাল জিতে নেয় বাংলাদেশ নারী দল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটায় ছিল না খুব অস্বস্তি। ওপেনার আয়েশা রহমান যদিও ফিরেছিলেন ২ রানে। তবে আরেক ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ও তিনে নামা সানজিদা ইসলাম দলকে রেখেছিলেন পথে। ৬ ওভারে রান ছিল ৩৬। এরপরই এক ওভারের ঝড়ে এলোমেলো ইনিংস। উমেশা থিমাশিনির এক ওভারেই বিদায় নেন চার ব্যাটার। ১ উইকেটে ৩৬ থেকে দলের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৩৬। অধিনায়ক সালমা খাতুনও পারেননি দলের ত্রাতা হতে। সপ্তম উইকেটে নিগার সুলতানা ও ফাহিমা খাতুন কিছুটা উদ্ধার করেন দলকে। ১৫ রান করে বিদায় নেন ফাহিমা। নিগার সুলতানার ৩৮ বলে অপরাজিত ২৯ রানে দল শেষ পর্যন্ত করতে পারে ৯১।
ছোট পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের শুরুটা ছিল দারুণ। জাহানারা, সালমারা শুরু থেকেই চেপে ধরেন লংকানদের। পাওয়ার পেস্নর ৬ ওভার শেষে তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে ১৫। সেই ধাক্কা সামলে লংকানদের এগিয়ে নিচ্ছিলেন অধিনায়ক মাদাভি। ৩৩ বলে ৩২ রান করা ব্যাটারকে থামান জাহানারা। তারপরও হাল ছাড়েনি শ্রীলংকা। লিহিনি আপসারা, নিলাকশানা সান্দামানি চালিয়ে যান লড়াই। শেষ ২ ওভারে লংকানদের প্রয়োজন ছিল ১১ রান। ১৯তম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার একটি রানও দেননি, উইকেট নেন একটি। কিন্তু বাই থেকে তবু চার রান পেয়ে যায় শ্রীলংকা। শেষ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে পার্থক্য গড়ে দিলেন জাহানারা। রান আউট হলেন মূল বাধা হয়ে থাকা লিহিনি। সোনার হাসিতে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ।
