বিপিএল

ইমরুলের ব্যাটে চট্টগ্রামের উড়ন্ত সূচনা

বঙ্গববন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে ইমরুল কায়েসের ব্যাটে চড়ে সিলেট থান্ডারকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে শুভ সূচনা করেছে চট্টগ্রাম

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে ইমরুল কায়েস বাউন্ডারি হাঁকানোয় তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন চাডউইক ওয়ালটন। পেছনে দাঁড়িয়ে তা দেখছেন এ ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার মোহাম্মদ মিঠুন -ওয়েবসাইট
ক্রীড়া প্রতিবেদক বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) বরাবরই দারুণ সফল ইমরুল কায়েস। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কও তিনি। তার নেতৃত্বেই গতবার শিরোপা জিতেছিল কুমিলস্ন ভিক্টোরিয়ান্স। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে খুব একটা ছন্দে নেই এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তবে বিপিএল মাঠে গড়াতেই আবার নিজেকে ফিরে পেলেন তিনি। বুধবার বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে এনে দিলেন দারুণ এক জয়। ইমরুলের ব্যাটে চড়ে সিলেট থান্ডারকে ৫ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে শুভ সূচনা করেছে চট্টগ্রাম। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ১৬২ রান তোলে সিলেট। জবাবে ছয় বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় চট্টগ্রাম। ম্যাচ যখন শুরু হলো, ২০০ টাকা টিকিটের গ্যালারিতে তখন মনে হয় ২০০ দর্শকও নেই। খেলা শুরুর পর অবশ্য ক্রমে দর্শক বেড়েছে কিছু। তারপরও বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি হতাশাজনক। দুই দলে নেই বড় কোনো তারকাও। সবকিছু মিলিয়ে প্রেক্ষাপট সাদামাটা। সেই বর্ণহীন আবহকেই রাঙিয়ে তুলল দুই দলের ব্যাটিং। শুরুতে ঝড়োব্যাটিংয়ে মাতালেন মোহাম্মদ মিঠুন। সেই ইনিংস পরে আড়াল হয়ে গেল ইমরুল কায়েস ও চাডউইক ওয়ালটনের জুটিতে। যদিও লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। দলীয় ২০ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তারা। এরপর ছোট দুটি জুটিতে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন ইমরুল কায়েস। তবে জয়ের ভিতটা আসে পঞ্চম উইকেট জুটিতে। চ্যাডউইক ওয়াল্টনের সঙ্গে স্কোর বোর্ডে ৮৬ রান যোগ করেন কায়েস। এরপর আর পিছে তাকাতে হয়নি তাদের। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬১ রানের ইনিংস খেলেন ইমরুল। ৩৮ বলে এ ইনিংসটি খেলেন তিনি। এদিন চারের চেয়ে ছক্কা মারায় মনোযোগী ছিলেন এ ব্যাটসম্যান। চার মেরেছেন ২টি। ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৫টি। দারুণ ব্যাট করেছেন ওয়াল্টনও। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। ৩০ বলে সমান ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকেন এ ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান। আভিস্কা ফের্নান্ডোর ব্যাট থেকে ৩৩ রান। এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটেরও। স্কোর বোর্ডে ৫ রান যোগ করতেই আউট হন ওপেনার রনি তালুকদার। সিলেট ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস হেরে। চোটাগ্রস্ত মাহমুদউলস্নাহর জায়গায় চট্টগ্রামকে নেতৃত্ব দেওয়া রায়াদ এমরিট টস জিতে নামেন বোলিংয়ে। সাফল্য ধরা দেয় দ্রম্নতই। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে রুবেল হোসেন ফেরান রনি তালুকদারকে। ৪ ওভার শেষে সিলেটের রান ছিল ২১। এরপর গা ঝাড়া দেন জনসন চার্লস। টানা চার বলে বাউন্ডারি মারেন এমরিটকে। টানা দুটি বাউন্ডারি মুক্তার আলিকে। পাওয়ার পেস্নর ৬ ওভারে চট্টগ্রাম তোলে ৪৮ রান। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা চার্লসকে থামান নাসুম আহমেদ। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে যায় ২৩ বলে ৩৫ রান করা চার্লস। এমরিট পরে বোলিংয়ে ফিরিয়ে দেন লঙ্কান জিবন মেন্ডিসকে। সীমানায় দারুণ ক্যাচ নেন চাডউইক ওয়ালটন। মিঠুনের সঙ্গে তখন উইকেটে যোগ দেন মোসাদ্দেক হোসেন। শুরুতে টাইমিং পেতে ধুঁকছিলেন দু'জনই। এক পর্যায়ে মিঠুনের রান ছিল ১৯ বলে ১৫। এরপর মুক্তারকে ছক্কা মেরে যেন জেগে ওঠেন মিঠুন। নাসুমের এক ওভারে মারেন দারুণ তিনটি ছক্কা। নাসির হোসেনকে এক্সট্টা কাভার দিয়ে দারুণ ছক্কায় ফিফটি স্পর্শ করেন ৩০ বলে। একবার অবশ্য বেঁচে যান ক্যাচ দিয়েও। ৩৬ রানে শর্ট থার্ড ম্যানে তার ক্যাচ নিতে পারেননি জুনায়েদ সিদ্দিক। মোসাদ্দেক তখনও ভুগছিলেন। তার রান ছিল ২০ বলে ৭। রায়ার্ন বালের টানা দুই বলে চার ও ছক্কায় চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তারপরও ঠিক খুঁজে পাননি ছন্দ। ৩৫ বলে ২৯ রান করে মোসাদ্দেক আউট হন ইনিংসের শেষ ওভারে। চতুর্থ উইকেটে ৯৬ রানের জুটিতে মিঠুনের ব্যাট থেকেই আসে ৬৭ রান। মিঠুন উইকেটে থাকার পরও অবশ্য শেষ দিকে প্রত্যাশিত গতিতে রান তুলতে পারেনি সিলেট। শেষ ৪ ওভার থেকে আসে কেবল ২৮ রান। তারপরও সিলেটের রান ছিল লড়ার মতো। লড়াই হচ্ছিলও বেশ। কিন্তু পার্থক্য গড়ে দেয় ইমরুল ও ওয়ালটনের জুটি। সংক্ষিপ্ত স্কোর সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৬২/৪ (রনি ৫, চার্লস ৩৫, মিঠুন ৮৪*, মেন্ডিস ৪, মোসাদ্দেক ২৯, মিলন ১*; নাসুম ১/২৪, রুবেল ২/২৭, এমরিত ১/৩৮)। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৯ ওভারে ১৬৩/৫ (আভিস্কা ৩৩, জুনায়েদ ৪, ইমরুল ৬১, বার্ল ৩, ওয়াল্টন ৪৯*, নুরুল ৫*; সান্তোকি ১/৩৪, অপু ২/২৩, ইবাদত ১/৩৩, মোসাদ্দেক ১/৯,)। ফলাফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : ইমরুল কায়েস (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।