রংহারা রংপুর, জয়ে ফিরল চট্টগ্রাম

প্রকাশ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিবিপিএলে শনিবার প্রথম ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ফের জ্বলে উঠলেন ইমরুল কায়েস। শেষ পর্যন্ত ৪৪* অপরাজিত থেকেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে জেতান তিনি -ওয়েবসাইট
কিছুতেই পথ খুঁজে পাচ্ছে না রংপুর রেঞ্জার্স। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে চেনা গেল না উত্তরবঙ্গের দলটিকে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ব্যাট-বলের দাপটে হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়ল মোহাম্মদ নবির দল। রঙ হারা রংপুরকে শনিবার অনায়াসে ৬ উইকেটে হারাল চট্টগ্রাম। বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ঢাকা প্রথম পর্বের শেষ দিনের প্রথম ম্যাচে মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমের ৭৮ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তোলে রংপুর। জবাবে ১৮.২ ওভার শেষে ৬ উইকেট হাতে রেখে সহজ জয় তুলে নেয় চট্টগ্রাম। যদিও টার্গেটটা একেবারে মামুলি ছিল তা বলার সুযোগ নেই। শুরুতেই দৃশ্যপট পাল্টে দেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার চাডউইক ওয়ালটন ও আভিস্কা ফার্নান্দো। রংপুরের দেয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামকে দুরন্ত সূচনা এনে দেন চাডউইক ওয়ালটন ও আভিস্কা ফার্নান্দো। ৭.১ ওভারের ওপেনিং জুটিতে ৬৮ রান তোলেন তারা। ২৩ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ে ৩৭ রান করে গ্রেগরির বলে ফিরে যান আভিস্কা। প্রথম ম্যাচে তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের জয়ের নায়ক। এরপর ছন্দ হারালেও তৃতীয় ম্যাচে এসে ইমরুল কায়েসের ব্যাট ফের কথা বলল। ইমরুল কায়েসকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের সহজ জয়ের ভিত গড়ে দেন আরেক ওপেনার ওয়ালটন। দলীয় ১০৯ রানের মাথায় মোহাম্মদ নবীর শিকারে পরিণত হওয়ার আগে অর্ধশতক তুলে নেন ওয়ালটন। ৩৪ বলে ৫০ রান করার পথে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকান তিনি। তার বিদায়ের পর চট্টগ্রামের রানের চাকা কিছুটা শ্লথ হয়ে যায়। ধীরগতিতে খেলতে থাকেন ইমরুল কায়েস ও অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। দলীয় ১৩৯ রানের মাথায় টম অ্যাবেলের বলে নাদিফ চৌধুরীর দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ। ১৬ বলে ১৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি নাসির হোসেন। দল যখন জয় থেকে মাত্র ৪ রান দূরে তখন ৩ বলে ৩ রান করে গ্রেগরির বলে অ্যাবেলের হাতে ক্যাচ দেন নাসির। তবে ইমরুল কায়েসের দৃঢ়তায় জয় পেতে কোনো সমস্যা হয়নি চট্টগ্রামের। ১০ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে বন্দরনগরীর দলটি। ৩৩ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন কায়েস। রংপুরের সফলতম বোলার লুইস গ্রেগরি ২৭ রান খরচায় নেন ?২ উইকেট। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রংপুরকে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ও মোহাম্মদ নাঈম। তাদের ৩.১ ওভারের ২৫ রানের সে জুটি ভাঙেন কেসরিক উইলিয়ামস। ৯ বলে ৯ রান করে রায়ান বার্লের হাতে ধরা পড়েন শাহজাদ। তরুণ মোহাম্মদ নাঈম আরেক প্রান্তে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় খেলতে থাকলেও দ্রম্নতই ফিরে যান টম অ্যাবেল। ৯ বলে ১০ রান করা অ্যাবেলকে ফেরান বার্ল। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জহুরুল ইসলামও। ১৩ বলে ৬ রান করা জহুরুলকে সাজঘরে পাঠান চট্টগ্রামের অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। একপ্রান্ত আগলে রেখে অর্ধশতক তুলে নেন নাঈম। জহুরুলের বিদায়ের পর নাঈমের সঙ্গে আক্রমণে যোগ দেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। নবীর ১২ বলে ২১ রানের ছোট এক ক্যামিওতে সম্মানজনক স্কোরের দিকে এগিয়ে যায় রংপুর। দলীয় ১১৭ রানের মাথায় নবীকে ফেরান উইলিয়ামস। দলীয় ১৩৮ রানের মাথায় ফিরে যান নাঈমও। রুবেল হোসেনের বলে মেহেদী হাসান রানার হাতে ধরা পড়ার আগে ৫৪ বলে ৭৮ রান করেন তিনি। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মারে। নাঈমের বিদায়েই মূলত রংপুরের বড় সংগ্রহের আশা ধূলিস্মাৎ হয়ে যায়। শেষের দিকে তাসকিন আহমেদের ৪ বলে ১১ রানের ক্যামিওতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান তোলে মোহাম্মদ নবীর দল। রায়ান বার্ল ও কেসরিক উইলিয়ামস দুটি করে উইকেট নেন। ইনজুরি থেকে ফেরা মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১ উইকেট নিলেও রান দেন মাত্র ১৭। তিন ম্যাচে দুই জয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে থেকে ঢাকার প্রথম পর্ব শেষ করলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অপরদিকে দুই ম্যাচ খেলে এখনো জয়ের দেখা পায় রংপুর রেঞ্জার্স। আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রামপর্ব।