ওপেনিং সঙ্গী নিয়ে ভাবছেন না তামিম

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
এটা হতাশার না। হয়তো তাদের সেইরকম পারফরম্যান্স হচ্ছে না। কিন্তু আমি দলের সঙ্গে থেকে জানি, যারাই দলে এই দায়িত্ব পালন করছেন তারা সবাই প্রচÐ পরিমাণ চেষ্টা করে
ক্রীড়া প্রতিবেদক ওপেনিং জুটিতে তামিম ইকবাল পাচ্ছেন না নিভর্রযোগ্য একজন সঙ্গী। বছরের পর বছর অনেক ক্রিকেটার দিয়েই চেষ্টা চলেছে, কিন্তু থিতু হতে পারেননি কেউই। নিকট অতীতে ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, লিটন দাস হয়েছেন তামিমের উদ্বোধনী সঙ্গী। তাদের কেউই প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি, দিতে পারেননি আস্থার প্রতিদান। তবুও হতাশ নন তামিম। অন্য ওপেনারদের সামথের্্যর ওপর ভরসা রাখতে চান এ বঁাহাতি ওপেনার। বৃহস্পতিবার মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘এটা হতাশার না। হয়তো তাদের সেইরকম পারফরম্যান্স হচ্ছে না। কিন্তু আমি দলের সঙ্গে থেকে জানি, যারাই দলে এই দায়িত্ব পালন করছেন তারা সবাই প্রচÐ পরিমাণ চেষ্টা করে। যতটুকু নিজেদের উন্নতি করা দরকার সেটা তারা করছে। হয়তো প্রত্যাশিত ফলাফল পাচ্ছি না। কিন্তু আমার কারো সামথের্্যর ওপর কোনো সন্দেহ নেই। আমার সঙ্গে যে-ই ব্যাট করেছে তারা সবাই যোগ্য, বাংলাদেশের হয়ে অন্তত দশ বছর সাভির্স দেয়ার জন্য।’ সামনে এশিয়া কাপ, টানা দুটি হোম সিরিজ, নিউজিল্যান্ড সফর, বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূণর্ আসর। টানা খেলার মধ্যে থাকবে বাংলাদেশ দল। ওপেনিং জুটি নিয়ে ভাবনা এসেই যায়। তামিমের ভাবনা যদিও ইতিবাচক। বিসিবি এখন থেকেই ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী নিয়ে ভাবছে। সব ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের সবাির্ধক রানের মালিক তামিম মনে করেন অন্য ওপেনাররা আপন ছন্দে কয়েকটা ইনিংস খেলতে পারলেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে বাংলাদেশ, ‘আমার কাছে মনে হয় দু-একটা ম্যাচ দরকার তাদের, ভালো একটি ইনিংস হলেই ওরা স্থায়ী হয়ে যাবে।’ টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ২-০ ব্যবধানে নাকাল হবার পর ওয়ানডে আর টি২০ সিরিজে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দঁাড়ায় বাংলাদেশ। ঘুরে দঁাড়ানোর পেছনে মাশরাফির অবদানের কথা সামনে এনে তামিম ইকবাল বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট সিরিজের পর আমরা ভেঙে পড়েছিলাম। ওয়ানডে সিরিজটা খুব গুরুত্বপূণর্ ছিল। কারণ এই ফরমেটেই আমরা সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ। মাশরাফি ভাই এলেন। আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোয় তার বিশাল অবদান ছিল। হয়তো তিনি কারও হাতে ধরে তাকে ব্যাটিং বা বোলিং করিয়ে দেননি। তবে তিনি দলের পরিবেশটা বদলে দিয়েছিলেন।’ বাজে একটি টেস্ট সিরিজ কাটানোর পর মাশরাফির ইতিবাচক মন্ত্রটাই বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল, মনে করছেন তামিম। দেশসেরা ওপেনারের ভাষায়, ‘খারাপভাবে টেস্ট সিরিজ শেষ হবার পর দলের মধ্যে নেতিবাচক দিক ছড়িয়ে পড়েছিল। খেলোয়াড়দের পরিষ্কার মাইন্ডসেট ছিল না। তিনি (মাশরাফি) যে ইতিবাচক ঢেউ তুললেন, সেটাই আমাদের বদলে দিল। এটাই বড় ফ্যাক্টর ছিল।’ গায়ানায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জয়ের পর দ্বিতীয়টি অল্পের জন্য হাত ফস্কে যায়। টাইগাররা হেরে যায় মাত্র ৩ রানে। তৃতীয় ওয়ানডে ছিল সেন্ট কিটসে, যেখানে ক্যারিবীয়দের সাফল্যের পাল্লা ভারী। তবে মাশরাফি ছিলেন বলেই ওসব নিয়ে দল ভাবার সুযোগ পায়নি, জানিয়েছেন তামিম। দলের তখনকার মানসিকতা নিয়ে বাঁহাতি এই ওপেনার বলেন, ‘আমরা প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম। কারণ গায়ানার উইকেট এবং বড় মাঠ আমাদের সঙ্গে বেশি মানানসই ছিল। সেন্ট কিটসে তারা সুবিধা পায় বেশি। ওই যে বললাম, মাশরাফি ভাইয়ের এখানেও বড় ভূমিকা ছিল। তৃতীয় ওয়ানডের আগে আমরা বসলাম এবং আলোচনা করলাম। যদি আমরা ম্যাচের আগেই তাদের সুবিধা নিয়ে ভাবতাম, ভাবতাম তারা ফেবারিট। তবে তো আগেই হেরে যেতাম। তাই মানসিকতা বদলানো দরকার ছিল। আমরা ম্যাচটি খেলতে চেয়েছি, নেতিবাচক ভাবনা মাথায় না নিয়ে দেখতে চেয়েছি কি হয়।’ পরের গল্পটা তো সবারই জানা। সেন্ট কিটসে শেষ ওয়ানডে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নেয় মাশরাফির দল। যে সাফল্য পরে অনূদিত হয় টি২০ সিরিজেও। প্রথম ম্যাচ হারের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ ব্যবধানে টি২০ সিরিজও জিতে নেয় টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে আপাতত তিন সপ্তাহের ছুটিতে রয়েছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু বসে নেই তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ে উন্নতির জন্য বৃহস্পতিবার মিরপুর একাডেমি মাঠে নিজেকে অনেকটা সময় ধরে ঝালিয়ে নেন। এশিয়া কাপের আগে ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতি করতে চান এ বঁাহাতি।