বৃথাই গেল মুশফিকের লড়াই

খুলনাকে হারিয়ে শীর্ষে ঢাকা

খুলনা ম্যাচে জিতেনি। কিন্তু মুশফিক ব্যাট হাতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে সত্যিকার অর্থেই উদাহরণ রেখে চলেছেন

প্রকাশ | ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সিলেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার খুলনার বিপক্ষে চার উইকেট নেওয়ার পর হাসান মাহমুদকে অভিনন্দন জানান ঢাকা পস্নাটুনের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা -বিসিবি
ক্রীড়া প্রতিবেদক টার্গেট যখন বড় থাকে তখন দ্রম্নত রান তোলার একটা তাড়া থাকে। সেই তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে শুরুতেই অনেকগুলো উইকেট হারিয়ে বসে খুলনা টাইগার্স। শেষের ৩২ বলে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৭২ রানের। বিশাল এই লক্ষ্যমাত্রাও অসম্ভব কিছু মনে হচ্ছিল না, কারণ মুশফিক যে তখনো উইকেটে ছিলেন! কিন্তু শেষ ১২ বলে ৩৬ রানের টার্গেট আর টপকাতে পারলেন না খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকও। অবশ্য বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৩৩ বলে করলেন ৬৪ রান। টুর্নামেন্টে এটি তার তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি। মুশফিকের দুর্দান্ত হাফ-সেঞ্চুরির পর ইনিংসের শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে খুলনার সামনে টার্গেট স্থির হয় ২২ রানের। শহিদুল এবং মোহাম্মদ আমির-খুলনার দুই বোলার এই কঠিন কাজটা করতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত খুলনার ইনিংস থেমে গেল ১৬০ রানে। মাঝে আফগান তারকা নজিবুলস্নাহ জাদরান যা একটু সঙ্গ দিলেন। এছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান দায়িত্ব নিতে না পারায় বৃথা যায় মুশফিকের লড়াই। তরুণ হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ঢাকা পস্নাটুন। খুলনা টাইগার্সকে ১২ রানে হারিয়ে শীর্ষে উঠে এলো মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। তাতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সেরা চার অনেকটা ধরেই ফেলেছে ঢাকা পস্নাটুন। খুলনা ম্যাচে জিতেনি। কিন্তু মুশফিক ব্যাট হাতে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সত্যিকার অর্থেই উদাহরণ রেখে চলেছেন। মজার বিষয় হলো- ঢাকা পস্নাটুন তাদের ইনিংসের শেষ ওভারে ঠিক ২২ রান করেছিল। ম্যাচ জেতার জন্য শেষ ওভারে সেই লক্ষ্যমাত্রাই প্রয়োজন হলো খুলনা টাইগার্সের জন্যও। কিন্তু থিশারা পেরেরার করা ম্যাচের শেষ ওভার থেকে খুলনা পেল মাত্র ৯ রান। লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো করতে পারেনি খুলনা। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ফলে দলীয় ৪৪ রানে টপ অর্ডারের চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর আফগানিস্তান রিক্রুট নজিবুলস্নাহ জাদরানকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৫৬ রানের জুটি গড়ে দলের ইনিংস মেরামত করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি তারা। ব্যক্তিগত ৩১ রানে নজিবুলস্নাহর বিদায়ে এ জুটি ভাঙলে ফের চাপে পড়ে যায় দলটি। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান মুশফিক। মাঠের চারপাশ দিয়ে দারুণ সব শট খেলেন। মাত্র ৩৩ বলে করেন ৬৪ রান। ৬টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৪টি ছক্কা। কিন্তু তার লড়াই দলের জন্য যথেষ্ট হয়নি। হারের ব্যবধানই কেবল কমেছে। হাসান মাহমুদের বলে বিদায় নিলে কার্যত তখনই হেরে যায় দলটি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬০ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। ঢাকার পক্ষে ৪ ওভার বল করে ৩২ রান খরচ করে ৪টি উইকেট নিয়ে দিনের সেরা বোলার হাসান মাহমুদ। এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল ঢাকা। ৪৫ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। তবে এ জুটি ভাঙতেই দ্রম্নত তিনটি উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে দলটি। এরপর চতুর্থ উইকেটে মুমিনুল হকের সঙ্গে দলের হাল ধরেন আরিফুল হক। ৫৬ রানের জুটি উপহার দেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাতে চাপ সামলাতে পারলেও রানের গতি ততোটা সচল রাখতে পারেননি তারা। তবে শেষ দিকে আসিফ আলির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াকু সংগ্রহই পায় দলটি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭২ রান করে ঢাকা। মাত্র ১৩ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন আসিফ। ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। দলের সর্বোচ্চ ইনিংসও এটা। এছাড়া ৩৬ বলে ৩৮ রান করেন মুমিনুল। আরিফুলের ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান। খুলনার পক্ষে ২৭ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির। এ জয়ে নয় ম্যাচে ৬টি জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠল ঢাকা। তবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও রাজশাহী রয়্যালসের পয়েন্টও ১২। রানরেটে শীর্ষে আছে ঢাকা। আট ম্যাচে ৫টি জয়ে খুলনার সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট।