ফেডারেশন কাপ

চমক দেখানো পুলিশের বিদায়

টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে গত আসরের রানার্সআপ দল বসুন্ধরা কিংস। আগামী ৫ জানুয়ারি ফাইনালে কিংসদের প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি

প্রকাশ | ০৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক ফেডারেশন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে গত আসরের রানার্সআপ দল বসুন্ধরা কিংস। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে তারা হারায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে। ফলে চমক দেখানো বাংলাদেশ পুলিশ দলটি বিদায় নিয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারি ফাইনালে কিংসদের প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। শুক্রবার কেউ কাউকে এতটুকু ছাড় দিয়ে খেলেনি। ৯ মিনিটে বসুন্ধরার গোলপোস্টের ৩৫ গজ দূরে ফ্রি কিক পায় পুলিশ। দলটির বুলগেরিয়ান মিডফিল্ডার লাসকোভ আন্তোনিও উঁচু শট নেন। বলটি পোস্টে ঢুকে যাবার আগ মুহূর্তে বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো কোনোমতে ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে দলকে বাঁচান। ১১ মিনিটে একবার বল জালে পঠিয়েও আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে বসুন্ধরা কিংসকে। ডান প্রান্ত থেকে সতীর্থর পাসে বল পেয়ে বক্সের ভেতরে চমৎকার বাইসাইকেল কিক নিয়েছিলেন দলীয় অধিনায়ক ডেনিয়েল কলিন্ড্রেস। বল জালেও জড়ায়। কিন্তু রেফারি সুজিত ব্যানার্জি চন্দন অফসাইড হয়েছে জানিয়ে দিয়ে গোলটি বাতিল করেন। তবে আক্রমণের ধারাবাহিকতায় ১৫ মিনিটে লিড নিতে সক্ষম হয় কিংসরা। বল নিয়ে দুর্দান্ত গতিতে পুলিশের বক্সে ঢুকে পড়েন কলিনড্রেস। কিন্তু শট নেবার আগ মুহূর্তে তাকে ফাউল করে বসেন পুলিশের ডিফেন্ডার খান মো. তারা। রেফারি তারাকে হলুদ কার্ড দেখানোর পাশাপাশি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে ঠান্ডা মাথায় ডান পায়ের কোনাকুনি শটে পুলিশের জাল কাঁপান বসুন্ধরার ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। গোলরক্ষক হিমেল বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি (১-০)। ২৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ হারায় কিংসরা। কলিনড্রেসের পাস পেয়ে বাঁপ্রান্ত দিয়ে পুলিশের বক্সে ঢুকে পড়েন ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল। বিপদ বুঝতে পেরে সামনে এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক হিমেল। সুবিধা হবে না বুঝতে পেরে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন সুফিল। কিন্তু বল পোস্টের বেশ উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ৩৫ মিনিটে কলিন্ড্রেসের কর্নারে বক্সে হেড নেন সতীর্থ এক ফুটবলার। কিন্তু এবারো বারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায় বল। ৩৭ মিনিটে একটা সুযোগ এসেছিল পুলিশেরও। কিন্তু বাঁপ্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার ঈসা ফয়সালের ডান পায়ের শটটি খুব সহজেই গ্রিপ করেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। এর ঠিক দু'মিনিট পর পুলিশের ফরোয়ার্ড এস এম বাবলু বল নিয়ে যাবার মুহূর্তে তাকে ফাউল করেন বসুন্ধরার ফরোয়ার্ড সুফিল। বক্সের প্রায় দশ গজ দূরে ফ্রি কিক পায় তারা। নাইমুর রহমান ডামি করলে স্পট কিক করেন আন্তোনিও। কিন্তু লক্ষ্যে বল পাঠাতে ব্যর্থ হন। প্রথমার্ধ এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় কিংসরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আরো এক গোল আদায় করে সেমিতে যাবার সম্ভাবনাটা বাড়িয়ে নেয় বসুন্ধরা। কেননা এ ধরনের ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরাটা বেশ দুঃসাধ্য। ৪৮ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বল ধরে আক্রমণে যান বিশ্বকাপ খেলে আসা ফুটবলার কলিন্ড্রেস। তাকে আটকাতে চেষ্টার কমতি রাখেননি পুলিশের দুই ডিফেন্ডার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার গতির সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। পোস্টের বেশ কাছ থেকে ডান পায়ের দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন কলিন্ড্রেস (২-০)। তবে হাতে যেহেতু বেশ সময় আছে তাই দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচে ফিরতে চেষ্টা করে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাব। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের যোগ করা সময়ের শুরুর দিকেই দারুণ একটা গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে তাদের। ডান প্রান্ত থেকে পুলিশের আমেরিকান ফরোয়ার্ড সিডনি রিভেরা যে শটটি নেন তা অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি জাল। তবে ম্যাচ শেষ হবার অল্প কিছুক্ষণ আগেই আরও একটি গোল আদায় করে নিয়েছে কিংসরা। বক্সের বাইরে থেকে তাজিক ডিফেন্ডার আখতাম নাজারভ পাসে বল পাঠান। সেই বল বুঝে নিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার নিকোলাস (৩-০)। আর এই গোলেই ফাইনাল নিশ্চিত হয় বসুন্ধরার।