বঙ্গবন্ধু বিপিএল

এবার শেষ ধাপের লড়াই

সোমবার দুপুরে এলিমিনেটর ম্যাচে লড়বে মাশরাফির ঢাকা পস্নাটুন ও মাহমুদউলস্নাহর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর সন্ধ্যায় প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালস।

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিপিএলে এবারের আসরে চ্যালেঞ্জিং দল চট্টগ্রাম। লিগ পর্যায়ে দুইবারই চট্টগ্রাম হারিয়েছে ঢাকাকে। পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থানে থাকা দলটি সোমবার ঢাকাকে হারাতে না পারলে বিপিএল শেষ হয়ে যাবে চ্যালেঞ্জার্সদের -বিসিবি
একমাস আর ৪২ ম্যাচ, গ্রম্নপপর্বের লড়াই শেষে বঙ্গবন্ধু বিপিএল এখন পেস্ন অফে। সোমবার শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের শিরোপার শেষ ধাপের লড়াই। ১৭ জানুয়ারি ট্রফির ফয়সালা। সেরা চার দল কারা সেটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল শুক্রবারই। শনিবার ঠিক হয় কারা খেলবে এলিমিনেটরে, কারা কোয়ালিফায়ারে। সোমবার দুপুরে এলিমিনেটর ম্যাচে লড়বে মাশরাফির ঢাকা পস্নাটুন ও মাহমুদউলস্নাহর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর সন্ধ্যায় প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে খুলনা টাইগার্স ও রাজশাহী রয়্যালস। এবারের আসরে শীর্ষ তিন দলের পয়েন্ট সমান ১৬ করে। রানরেট গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন খুলনা টাইগার্স টেবিলের এক নম্বরে। রানরেটে পিছিয়ে দুই ও তিনে যথাক্রমে রাজশাহী রয়্যালস ও মাহমুদউলস্নাহ-সৌম্যদের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। পেস্ন অফের চতুর্থ দল ঢাকা পস্নাটুন। মাশরাফীর দল ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে। টেবিলে সবচেয়ে বাজে অবস্থা গেছে সিলেট থান্ডারের। ১২ ম্যাচের গ্রম্নপপর্বে তারা জিততে পেরেছে সবে এক লড়াই। ২ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে গেছে থান্ডারদের। পয়েন্টে পাঁচ ও ছয় নম্বরে যথাক্রমে কুমিলস্না ওয়ারিয়র্স ও রংপুর রেঞ্জার্স। দু'দলেরই পয়েন্ট ১০ করে। রানরেট পার্থক্য গড়ে দিয়েছে তাদের অবস্থানেও। যদিও বেশিকিছু ক্ষতি নেই, টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে গেছে দু'দলেরই। জয়-পরাজয়ের সংখ্যা পার্থক্য গড়ে দিতে না পারলেও এই রানরেট আবার টেবিলের শীর্ষ দলগুলোর জন্য ভালোই গুরুত্বপূর্ণ ঠেকেছে। তিন দলের একই পয়েন্ট হওয়ার পরও রানরেটে শীর্ষ দুইয়ে খুলনা ও রাজশাহী। যারা খেলবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। যেখানে জয়ী দল সরাসরি চলে যাবে ফাইনালের মঞ্চে। বাকি দলটির যে সুবিধা, হেরেও তাদের ছিটকে যেতে হবে না। তারা আরেকটি পরীক্ষার সুযোগ পাবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে খুলনা ও রাজশাহীর মধ্যকার হারা দলের পরীক্ষা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হবে এলিমিনেটরে জিতে আসা দলের সঙ্গে। এলিমিনেটরে লড়বে ১৬ পয়েন্ট নিয়েও রানরেটে পিছিয়ে তিনে থাকা চট্টগ্রাম ও চারের ঢাকা। চট্টগ্রাম ও ঢাকার মধ্যকার হারা দলের আসর শেষ হয়ে যাবে। জয়ী দলটি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পরীক্ষা দেবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরেও আরেকটি সুযোগ পাওয়া দলের বিপক্ষে। এই লড়াইয়ে জয়ী দলটি প্রথম কোয়ালিফায়ারে জয়ী দলের বিপক্ষে ১৭ জানুয়ারি শিরোপার রোমাঞ্চে অবতীর্ণ হবে। শনিবারের ম্যাচে বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনীর মাঝে অনেকখানি কেটে যাওয়ায় ১৪টি সেলাই পড়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাম হাতের তালুতে। ঢাকা পস্নাটুনের অধিনায়ক তারপরও মাঠে নামতে মরিয়া। হাতে সেলাই নিয়েই তিনি খেলতে চান চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে এলিমিনেটর ম্যাচে। রোববারঢাকা পস্নাটুনের ম্যানেজার আহসানউলস্নাহ হাসান তার দলের অধিনায়কের এই দৃঢ়তা প্রসঙ্গে জানাচ্ছিলেন-'মাশরাফি সত্যিকার অর্থেই ফাইটার। সারাক্ষণ তার একটাই চিন্তা-কিভাবে দলের ভালো কিছু হবে। দল কিভাবে সাফল্য পাবে সেই পরিকল্পনায় ব্যস্ত থাকা। হাতে এত ভয়াবহ ইনজুরি নিয়ে যে ক্রিকেটার পরদিন মাঠে নামার জন্য জেদ ধরে- সে আসলেই অন্যকিছু! এটা শুধুমাত্র আবেগের বিষয় না, মাঠের লড়াইয়ে জিততে হলে এমনকিছু বাড়তি জেদেরও দরকার হয়। আর মাশরাফির বিকল্প তো এখনো আমরা তৈরি করা তো দূরের কথা। খুঁজেই পাইনি! এই যে দেখেন খুলনার বিপক্ষে ম্যাচে আমাদের চার পেসারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বোলিং কিন্তু মাশরাফিরই। সত্যি বলতে কি ও মাঠে দাঁড়িয়ে থাকাই যে দলের জন্য অনেক কিছু!' আগের দিনের ম্যাচের একাদশ ওভারের ঘটনা। মেহেদী হাসানের বল উড়িয়ে মেরেছিলেন খুলনা টাইগার্সের রাইলি রুশো। কাভারে ক্যাচ নিতে বামদিকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মাশরাফি। ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি। বরং বলের আঘাতে রক্তাক্ত হাত নিয়ে ব্যথার তীব্রতায় মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। পরে জানা যায়, তার হাতে লেগেছে ১৪টি সেলাই। হাসান যোগ করেছেন, 'অনেক সময় অনেক রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেহেতু মাশরাফির বোলিং হাত না, তাই আমরা আলাপ করে দেখব কী করা যায়। সোমবার আমরা সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।' বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, 'যদি কেউ খেলতে চায় তাহলে খেলা সম্ভব, তবে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। তাছাড়া একটা সেলাই শুকাতেও তো ৫-৭ দিন সময় লাগে।' তবে ঝুঁকির কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি, 'যদি মাশরাফি এবং তার দল মরিয়া হয়, তাহলে আমরা একটা ব্যবস্থা করব। কিন্তু এ ব্যাপারে মাশরাফি বা তার দল এখনো আমাকে কোনো অ্যাপ্রোচ করেনি। আর খেললে ঝুঁকি থাকবে। সেটা মাথায় নিয়েই খেলতে হবে।'