বঙ্গবন্ধু বিপিএল

মাশরাফির ঢাকার বিদায়

দাপুটে জয়ে কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম। ঝুঁকি নিয়ে খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি ঢাকা পস্নাটুন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এলিমিনেটরের বাঁচা-মরার ম্যাচে ঢাকা পস্নাটুনকে হারিয়ে কোয়ালিফায়ারে উঠেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর সেই আনন্দে মাঠে নেচে-গেয়ে উৎসব করছেন ক্রিস গেইলরা। -ওয়েবসাইট
এলিমিনেটর রাউন্ডের মাচ। হারলেই বিদায়। তাই হাতে ১৪ সেলাই নিয়েই মাঠে নেমে গেলেন ঢাকা পস্নাটুন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অথচ সেলাই লেগেছে ৪৮ ঘণ্টাও পার হয়নি। তবে ঝুঁকি নিয়ে খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি অধিনায়ক। শুরুতে সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের মুমূর্ষু ব্যাটিং, পরে নির্জীব বোলিং। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হেরে আসর থেকে ছিটকে গেল ঢাকা। হার-জিতের চেয়ে এদিন পুরো ম্যাচে আলোচনায় ছিলেন মাশরাফি। বিশেষ করে ক্রিস গেইলের ক্যাচ এক হাতে লুফে নিয়ে আলোচনায় আরও ঘি ঢালেন তিনি। বল হাতে খুব একটা খারাপ করেননি। কোটার শেষ দুটি বলে ইমরুল কায়েস দারুণ দুটি ছক্কা হাঁকালে চার ওভারে ৩৩ রান খরচ করতে হয় তাকে। ১৪৪ রানের মামুলি স্কোর নিয়ে ম্যাচ জিততে হলে বোলিংয়ে দুর্দান্ত কিছু করে দেখাতে হতো ঢাকা পস্নাটুনকে। দুর্বল ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংও হলো তাদের সাধারণ মানের। আর তাই ম্যাচ জিততে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স একটু সময় নিলেও খুব বেশি কষ্ট হলো না তাদের। লক্ষ্য তাড়ায় দেখে-শুনেই ব্যাট করতে শুরু করে চট্টগ্রাম। বিশেষ করে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল তো ভিন্ন রূপে আবির্ভাব হন। রান নেওয়ায় কোনো তাড়া দেখা যায়নি তার মধ্যে। তবে তিনি খোলসে আবদ্ধ থাকলেও অন্য প্রান্তে আগ্রাসন চালিয়ে যান সতীর্থরা। ফলে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৪২ ও ইমরুল কায়েসের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৯ রানের জুটি গড়েন গেইল। এরপর অবশ্য খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এ ক্যারিবিয়ান। এরপর বাকি কাজ চ্যাডউইক ওয়ালটনকে নিয়ে শেষ করেন অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রানের জুটিতে ১৪ বল আগেই জয় পায় চট্টগ্রাম। ৪৯ বলে ৩৯ রান করেন গেইল। ১৪ বলে ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউলস্নাহ। এছাড়া ইমরুলের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। ঢাকার পক্ষে ৩২ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন শাদাব খান। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চট্টগ্রামের বোলারদের তোপে পড়ে ঢাকা। ফলে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। ফলে দলীয় ৬০ রানের ৭ উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। তখন মনে হয়েছিল একশ রানের আগেই গুটিয়ে যাবে দলটি। ওপেনার তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত ৩ রানে রুবেল হোসেনের বল বোল্ড হন। এরপর এনামুল হক বিজয় ও লুইস রেইস তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। খালি হাতে ফিরতে পারতেন দারুণ ছন্দে থাকা মেহেদী হাসানও। জীবন পেয়ে করেছেন ৭ রান। এরপর জাকের আলী অনিকও শূন্য হাতে ফিরেন। টানা ব্যর্থতার বৃত্তে আসিফ আলীও (৫)। তবে অষ্টম উইকেটে পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শাদাব খানের সঙ্গে থিসারা পেরেরার ৪৪ রানের জুটিতে শতরানের কোটা পার করে দলটি। এরপর থিসারা আউট হয়ে গেলে অধিনায়ক মাশরাফিকে নিয়ে একাই নবম উইকেট জুটিতে ৪০ রান করেন শাদাব। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় ঢাকা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান করে দলটি। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৬৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন শাদাব ৪১ বল মোকাবিলা করে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। এ ছাড়া মুমিনুল ৩১ ও থিসারা ২৫ রান করে করেন। মজার ব্যাপার এ তিন ব্যাটসম্যান ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেনি। চট্টগ্রামের হয়ে দারুণ বোলিং করেছেন রায়াদ এমরিত। ২৩ রানের খরচায় নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট পান নাসুম আহমেদ ও রুবেল হোসেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর ঢাকা পস্নাটুন: ২০ ওভারে ১৪৪/৮ (তামিম ৩, মুমিনুল ৩১, বিজয় ০, রেইস ০, মেহেদী ৭, জাকের ০, শাদাব ৬২, আসিফ ৫, থিসারা ২৫, মাশরাফি ০; রুবেল ২/৩৩, রানা ০/২৯, নাসুম ২/১১, মাহমুদউলস্নাহ ১/৫, এমরিত ৩/২৩, জিয়া ০/৩৯)। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৭.৪ ওভারে ১৪৭/৩ (গেইল ৩৯, জিয়া ২৫, ইমরুল ৩২, মাহমুদউলস্নাহ ৩৪*, ওয়ালটন ১২*; মাশরাফি ০/৩৩, মেহেদী ১/২০, হাসান ০/৩৬, রিস ০/১০, থিসারা ০/১৪, শাদাব ২/৩২)। ফলাফল: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: রায়াদ এমরিত (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।