অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ

বড় স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপে নামছে বাংলাদেশ

পচেফস্ট্রমে শনিবার আসরের দ্বিতীয় দিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের ময়দানি লড়াই। ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের ব্যাট-বলের লড়াইয়ে শুক্রবার পর্দা উঠেছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ২০২০'র। নিজেদের সেরা প্রস্তুতি ও অন্যতম শক্তিশালী দল সাজিয়ে বড় আশা নিয়ে বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে নামবে দ্বিতীয় দিনে। টাইগার যুবাদের চোখ শিরোপায়। পচেফস্ট্রমে শনিবার আসরের দ্বিতীয় দিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের ময়দানি লড়াই। ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়। সবশেষ ১৯৯৮ সালে প্রোটিয়াদের ঘরে বসেছিল যুব বিশ্বকাপের আসর। সেই আসর দিয়ে বিশ্বমঞ্চের এ টুর্নামেন্টে অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের। সেবার নকআউট পর্বে ওঠা হয়নি। তখনকার যুবক গেইল-সারওয়ানদের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে পেস্নট পর্বের শিরোপা জিতে ফিরেছিল টাইগাররা। সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় এবার নিজেদের সেরা পরফরম্যান্স করার তাগিদ। দু বছর অন্তর মাঠে গড়ায় যুব ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ১৯৯৮ সালের ওই আসর থেকে নিয়মিত বিশ্বকাপে খেলে আসছে বাংলাদেশ। দু বছর ধরে চলে যুবাদের প্রস্তুতি। এবার আকবর-হৃদয়দের প্রস্তুতিটা হয়েছে নজরকাড়া। যুব বিশ্বকাপের ইতিহাসে দু বছর মেয়াদের মাঝখানে যেখানে বাংলাদেশের আগের কোনো দলের পঞ্চাশ ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি, সেখানে টাইগারদের বর্তমান দলটি গত দু বছরে খেলেছে ৬০ ম্যাচ। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে সফল হয়েছে দাপুটে পারফরম্যান্সে। সপ্তাহখানেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়া বাংলাদেশ দল ঘাঁটি গেড়েছে পচেফস্ট্রমে। সেখানেই সেরেছে প্রস্তুতি ক্যাম্পপর্ব। দুটি আন-অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর টুর্নামেন্টে শিরোপার অন্যতম দাবিদার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে নামে যুবারা। দারুণ লড়ে করে টাই। দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে আরেক শক্তিশালী দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অবশ্য ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। সবশেষ ব্যাটিং বিপর্যয় ছাড়া গত কয়েক মাস বল-ব্যাটে ভালো সময়ই কেটেছে বাংলাদেশের। সামর্থ্যের প্রয়োগে এসেছে টানা সাফল্য। বিশ্বমঞ্চে সেটিই দেখাতে চায় লাল-সবুজের তারকারা। সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ পর্যন্ত আগানো সম্ভব, এমন আত্মবিশ্বাস ছড়িয়েছে দলে। যুব অধিনায়ক আকবর আলী দেশ ছাড়ার আগে সেটি বলেও গেছেন, 'আমরা বিশ্বাস করি ভালো কিছু নিয়ে ফিরতে পারব। দলটা ফাইনালেও যেতে পারে বলে বিশ্বাস করি আমরা। আশা করি, আমরা খুব ভালো কিছুই করতে পারব।' দু বছরে ৬০ ওয়ানডে। কম সময়ে এত বেশি ম্যাচ। ভরপুর অভিজ্ঞতা, পর্যাপ্ত ম্যাচ অনুশীলন আর আত্মবিশ্বাস সঙ্গী। নিজেদের সামর্থ্যের প্রতি অগাধ আত্মবিশ্বাস মাঠের পারফরম্যান্সে রূপান্তর করতে পারলেই বাজিমাত হবে। আকবররা সেটা ভালোভাবেই জানেন, 'আমাদের স্কোয়াড বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- সব বিভাগই ভালো অবস্থানে আছে। সবাই খুব প্রতিভাবান। নির্দিষ্ট কারো কথা বলতে পারব না। আমরা যদি সামর্থ্য অনুযায়ী, দল হয়ে খেলতে পারি, টুর্নামেন্টের শেষের দিকে যাওয়া সম্ভব।' আদর্শ প্রস্তুতি ও সম্ভাবনাময় একঝাঁক ক্রিকেটারের উপস্থিতি, এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে বড় স্বপ্ন। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে টাইগারদের সেরা সাফল্য সেমিতে খেলা। দেশের মাটিতে ২০১৬ বিশ্বকাপে মিরাজ-শান্তরা উইন্ডিজের বিপক্ষে না হারলে সেবারই পূরণ হয়ে যেত ফাইনালের স্বপ্ন। যুবাদের দেশের বাইরে সেরা সাফল্য নিউজিল্যান্ডে, ২০১৮ বিশ্বকাপে সাইফ-আফিফরা কোয়ার্টারে খেলেছেন। গ্রম্নপ 'সি'তে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ২১ জানুয়ারি, বাছাই পেরিয়ে আসা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। ২৪ জানুয়ারি গ্রম্নপে নিজেদের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। তিনটি ম্যাচই পচেফস্ট্রমে। শুক্রবার ১৭ জানুয়ারি পর্দা উঠেছে চলতি বিশ্বকাপের। টুর্নামেন্ট চলবে ৯ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত। চার গ্রম্নপের খেলা শেষে ২৮ থেকে ৩১ জানুয়ারি হবে চারটি কোয়ার্টার ফাইনাল। ৪ ও ৬ ফেব্রম্নয়ারি দুই সেমিফাইনাল। ৯ ফেব্রম্নয়ারি ত্রয়োদশ আসরের শিরোপার ফয়সালা। বাংলাদেশ যুব দল আকবর আলি (অধিনায়ক), তৌহিদ হৃদয় (সহ-অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তানিম, পারভেজ হোসেন ইমন, প্রান্তিক নওরোজ নাবিল, মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন, শামিম হোসেন, মৃতু্যঞ্জয় চৌধুরি, তানজিম হাসান সাকিব, অভিষেক দাস, শরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ শাহিন আলম, রকিবুল হাসান, হাসান মুরাদ।