বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ

পাকিস্তান সিরিজের দলে চমক হাসান

সাকিব থাকবেন না নিষেধাজ্ঞায়, মুশফিক যাচ্ছেন না জানাই ছিল। তাদের ছাড়াই পাকিস্তান সফরের টি২০ সিরিজের দল সাজাতে হয়েছে নির্বাচকদের। ব্যক্তিগত কারণে ভারত সফরে না থাকা ওপেনার তামিমের ফেরা ছিল নিশ্চিত।

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সেঞ্চুরি করা একমাত্র দেশি ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন শান্ত, গতিঝড় তোলা পেসার হাসান মাহমুদ, আলো কাড়া স্পিন-অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানকে নিয়ে পাকিস্তান যাচ্ছে বাংলাদেশ। শনিবার তারুণ আর অভিজ্ঞতার মিশেলে তিন টি২০ সিরিজের সফরের দল দিয়েছে বিসিবি। সাকিব থাকবেন না নিষেধাজ্ঞায়, মুশফিক যাচ্ছেন না জানাই ছিল। তাদের ছাড়াই পাকিস্তান সফরের টি২০ সিরিজের দল সাজাতে হয়েছে নির্বাচকদের। ব্যক্তিগত কারণে ভারত সফরে না থাকা ওপেনার তামিমের ফেরা ছিল নিশ্চিত। তিনি ফিরেছেন প্রত্যাশিতভাবে। ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। গত ভারত সফরেও তার কাঁধে ছিল দায়িত্ব। দলে চমক বলতে অভিষেক না হওয়া হাসান মাহমুদের ডাক পাওয়া। ২০ বছর বয়সি পেসার ঢাকা পস্নাটুনের হয়ে ১৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। টুর্নামেন্টজুড়ে আলোচিত ছিলেন গতি দিয়ে, ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৪২.৪০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছেন বিপিএলে। গত ভারত সফরে অভিষিক্ত নাঈম শেখ জায়গা ধরে রেখেছেন। সদ্যগত বিপিএলে রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে তিনি ১২ ম্যাচে ৩৫৯ রান করেছেন ৩২.৬৩ গড়ে। ২ ফিফটির সর্বোচ্চটি ৭৮ রানের। স্ট্রাইকরেট নজরকাড়া নয়, ১১৫.৪৩। বাঁহাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তর ডাক পাওয়ার কথা আলোচনায় ছিল। রানার্সআপ খুলনার হয়ে ১১ ম্যাচে ৩০৮ রান করেছেন এবারের বিপিএলে। এক ফিফটির সঙ্গে আছে একটি সেঞ্চুরিও। অপরাজিত ১১৫ রানের। ৩৪.২২ গড়ে করা তার রানের স্ট্রাইকরেট ১৪৩.৯২। তিনি গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টি২০ খেলে ফেলেছেন। ২৫ বছর বয়সি স্পিন-অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান ২০১৮ সালে ফেব্রম্নয়ারিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে একটি টি২০ খেলে ছিটকে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ব্যাটে-বলে জ্বলে আবারও ডাক পেলেন। ঢাকার হয়ে মেহেদী ১৩ ম্যাচে করেছেন ২৫৩ রান। তিন ফিফটির সেরা ইনিংসটি অপরাজিত ৬৮, ২৩.০০ গড়ের সঙ্গে স্ট্রাইকরেট ১৩৬.০২। ভারত সফরের টি২০ দলে থাকা পেসার আবু হায়দার রনি, বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম আর আরাফান সানি- দু'জনেই বাদ পড়েছেন পাকিস্তান সফরে। ওই দলে থাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত বিপিএলে পড়েন চোটে। তিনিও তাই নেই পাকিস্তান সিরিজে। দলে বিশেষজ্ঞ ওপেনার আছেন চারজন। তামিমের সঙ্গে লিটন দাস, সৌম্য সরকার আর শান্ত। পাকিস্তান সফরে টি২০ সিরিজের জন্য নির্বাচকদের তালিকায় ছিল ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের নাম। এমনকি একাদশে তার ব্যাটিং পজিশন কোথায় হবে- সেটা নিয়েই টিম ম্যানেজমেন্টকে পরিকল্পনা ও পরামর্শ দিয়ে রেখেছিলেন নির্বাচকরা। কিন্তু ইমরুল কায়েসের নাম তালিকায় লিখেও শেষ পর্যন্ত কেটে দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা। ইনজুরির কারণে এই সিরিজে খেলা হচ্ছে না ইমরুল কায়েসের। তার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির যে ধাত সেটা থেকে সেরে উঠতে খানিকটা সময় লাগবে। এর মধ্যেই টি২০ দল পাকিস্তান সফরে যাবে। জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার শনিবার জানান- 'এটা ইমরুলের দুর্ভাগ্য। তাকে তো আমরা দলে রেখেছিলাম। কিন্তু চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছেন তার সেরে উঠতে সময় লাগবে। তার হ্যামস্ট্রিংয়ের স্ক্যান করা হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে,পরিস্থিতিটা কি?' পাকিস্তান শুধু টি২০ সিরিজে নয়, পুরো সফরেই মুশফিকুর রহিমকে পাবে না বাংলাদেশ। জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান কেনো দেশটিতে যাবেন না বিপিএলের ফাইনাল শেষে ব্যাখ্যা করেছেন সে কারণও। মুশফিকুর রহিম বলেছেন, জীবনের চেয়ে কখনোই ক্রিকেট আগে না। মুশফিক জানিয়েছেন পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে পরিবারের আপত্তির কারণেই এ সিদ্ধান্ত, 'কারণটা পারিবারিক। বিসিবি এটা মেনে নিয়েছে (না যাওয়ার সিদ্ধান্ত)। অফিসিয়ালি চিঠিও দিয়েছি। পরিবারে যারা আছেন, তারা ভয়ে শঙ্কিত। এমন অবস্থায় আমি মানসিকভাবে ঠিক থেকে গিয়ে খেলতে পারি না।' 'বাংলাদেশ দলের একটা সিরিজে বিশ্রাম নিতে হবে, এটার চেয়ে বড় পাপ আমার জন্য হতে পারে না। আমার কিন্তু সুযোগ ছিল পিএসএলের মতো বড় টুর্নামেন্টে খেলার। প্রথমেই না করে দিয়েছি। কারণ, জানি পুরো পিএসএল পাকিস্তানে হবে। তখনই বলেছি যেহেতু পরিবারও আমাকে অনুমতি দিচ্ছে না। পাকিস্তানের অবস্থা হয়তো আগের চেয়ে অনেক বেটার। আরও দুই-তিনটা বছর ধীরে ধীরে যদি অন্য দেশও যায়, তখন হয়তো আত্মবিশ্বাস আসবে।' 'পাকিস্তানে আগেও সফর করেছি। ২০০৮ সালে সন্ত্রাসী হামলার আগে। পাকিস্তান ক্রিকেটীয় সুযোগ সুবিধার দিক থেকে অনেক ভালো একটা জায়গা। উপমহাদেশের ক্রিকেট বিচারে অসাধারণ। উইকেটও অনেক ভালো। অবশ্যই অনেক মিস করব। যদি আগামী ২-৩ বছর ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তানের অবস্থা ভালো থাকে, তাহলে না যাওয়ার কোনো কারণ থাকবে না।' আগামী ২৩ জানুয়ারি পাকিস্তান যাবে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দল। পাকিস্তান সফলে লাহোরে ২৪, ২৫ ও ২৭ জানুয়ারি টি২০ তিনটি খেলবে বাংলাদেশ। সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে লাহোরে। ২৮ জানুয়ারি দেশে ফিরবে টাইগাররা। বাংলাদেশ দল: মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, আফিফ হোসেন ধ্রম্নব, মেহেদী হাসান, আমিনুল বিপস্নব, মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, রুবেল হোসেন ও হাসান মাহমুদ।