টি২০তে অশান্ত হতে শিখেছেন শান্ত

আমার কাছে মনে হয় যে মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে অনেক। বিশ্বাস আসছে যে এই ফরম্যাটেও রান করা সম্ভব। যেহেতু প্রথমে কয়েকটি ম্যাচ রান করিনি, আত্মবিশ্বাসে একটু অভাব ছিল। তো মানসিকভাবে ওভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি যে আমি এই ফরম্যাটেও রান করতে পারি -নাজমুল হোসেন শান্ত

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
নাজমুল হোসেন শান্ত
তাকে কখনোই টি২০'র আদর্শ ব্যাটসম্যান মনে করা হতো না। নাজমুল হোসেন শান্তর খেলার ধরনের সঙ্গে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটই ছিল মানানসই। লম্বা সংস্করণে যাদের নিয়ে আশা, সেই ছোট্ট তালিকাতেও থাকেন তিনি। কিন্তু সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোনো সংস্করণেই দেখাতে পারছিলেন না সামর্থ্যের বিচ্ছুরণ। এবার বঙ্গবন্ধু বিপিএলে ব্যর্থতার সেই বৃত্ত ভেঙে সবাইকে চমকে দিয়েছেন তিনি। দেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একমাত্র সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাটেই। তাও রীতিমতো খুনে ব্যাটিংয়ে। তাতে জায়গা মিলেছে পাকিস্তানগামী টি২০ দলেও। বাঁহাতি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্তর ডাক পাওয়ার কথা আলোচনায় ছিল। তিনি গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি টি২০ খেলেছেন। ব্যক্তিগত কারণে রোববার প্রথম দিনের প্রস্তুতিতে ছিলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। সোমবার দ্বিতীয় দিনে তাকে দেখা গেল মাঠে। গা গরম আর ফিল্ডিং অনুশীলনে দারুণ চনমনে ও প্রাণবন্ত। মাঠে তার পদচারণায় ফুঠে উঠছিল আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ। সেই বিশ্বাসের প্রতিধ্বনি শোনা গেল তরুণ ব্যাটসম্যানের কণ্ঠেও। জানালেন, ২০ ওভারের ক্রিকেটের রসায়নটা অবশেষে বুঝে উঠতে শুরু করেছেন। সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে প্রথম চার ম্যাচে দুইবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। শেষও করেছেন ফাইনালে শূন্য রানে বিদায় নিয়ে। তবে ফাইনালের আগের কয়েক ম্যাচ থেকেই পেয়েছেন সামনে এগিয়ে চলার রসদ। প্রথম কোয়ালিফায়ারে ৫৭ বলে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে ফাইনালে তুলে নেওয়ায় অবদান রাখেন। প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে সবাইকে চমকে দিয়ে খেলেন ৫৭ বলে অপরাজিত ১১৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। বিশেষ বিপিএলে রানার্সআপ খুলনা টাইগার্সের হয়ে ১১ ম্যাচে ১৪৩.৯২ স্ট্রাইকরেটে ৩০৮ রান করেছেন। অথচ এর আগে সব ধরনের টি২০ মিলিয়েও ৫০ পেরুতে পেরেছিলেন আর একবার। এমন উন্নতির পেছনে কারণ না কি মানসিকতার বদল, 'আমার কাছে মনে হয় যে মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে অনেক। বিশ্বাস আসছে যে এই ফরম্যাটেও রান করা সম্ভব। যেহেতু প্রথমে কয়েকটি ম্যাচ রান করিনি, আত্মবিশ্বাসে একটু অভাব ছিল। তো মানসিকভাবে ওভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি যে আমি এই ফরম্যাটেও রান করতে পারি। নিজের মধ্যে বিশ্বাস আনার চেষ্টা করেছি। তো এটা আসার কারণে শেষের কয়েকটি ম্যাচে রান হয়েছে।' পাকিস্তান সফরে টি২০ দলে শান্ত মূলত দলে এসেছেন ব্যাকআপ ব্যাটসম্যান হিসেবে। এই সফর থেকে মুশফিকুর রহিম নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। চোটের কারণে রাখা যায়নি ইমরুল কায়েসকেও। সুযোগ পেলে তার ওপর ভারটা থাকবে বড়, সেজন্য অবশ্য পুরোপুরি তৈরি তিনি, 'আমাদের যে ক্রিকেটাররা আছেন এবং নির্বাচকরা আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। এজন্যই আমাদের নিয়েছেন। এরকমভাবে চিন্তা করছি না যে মুশফিক ভাইয়ের জায়গায় আমাদের একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। ওরকম কিছু না, আমরা ইতিবাচক আছি। আমাদের নিজেদের যে শক্তি ওই অনুযায়ী খেলতে পারলে খুব একটা সমস্যা হবে বলে মনে করছি না।' মূলত টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান তিনি। বিপিএলে সাফল্য পেয়েছেন ওপেন করতে নেমে। জাতীয় দলে ওপেনারের ছড়াছড়ি থাকায় উপরে সুযোগ পাওয়া কঠিন। সেই বাস্তবতা মেনে নিজেকে রাখছেন প্রস্তুত, 'সাধারণত আমি টপ অর্ডারে খেলি। ওখানে নামলে তো অবশ্যই ভালো। যেটা আমি বললাম, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে যেখানে নামায়, সব জায়গায় খেলার জন্য প্রস্তুত আছি। যেখানে খেলব, চেষ্টা করব পারফর্ম করার। যেকোনো পজিশনে রান করা উচিত। এখন যদি চিন্তা করা যায় বড় বড় ক্রিকেটাররা যেকোনো পজিশনে ব্যাটিং করে এবং রান করার সক্ষমতা রাখে। ওভাবেই আমি চিন্তা করছি যে যেখানে ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসবে, সেখানেই পারফর্ম করার চেষ্টা করব।'