পাকিস্তান যাওয়ার সিদ্ধান্ত কঠিন ছিল

'খেলার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই হয়ে গেছে। এখন আমাদের একটাই কাজ, ওখানে গিয়ে খেলা এবং পারফর্ম করা।'

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ -বিসিবি
পাকিস্তানকে ওয়ানডে ক্রিকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টি২০তেও হারিয়েছে। তবে এই জয়গুলোর কোনোটাই পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে নয়। নিরপেক্ষ ভেনু্যতে পাকিস্তানকে হারালেও এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে কোনো ফরমেটের ক্রিকেটে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২০ সাল সেই ব্যর্থতা ঘোচানোর সুযোগ এনে দিচ্ছে বাংলাদেশের সামনে। তিন ম্যাচের টি২০ খেলতে পাকিস্তান সফরের ২৪ ঘণ্টা আগে অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের গলায় সেই আত্মবিশ্বাসই ঝরল- 'পাকিস্তান টি২০তে খুব ভালো দল। ধারাবাহিকভাবে তারা পারফরম্যান্স করছে। দু'দলের মধ্যের্ যাংকিংয়ে পার্থক্য অনেক বেশি। তবে আমরা এখন যেভাবে টি২০ খেলছি, বিশেষ করে পেছনের দুটো সিরিজে যেভাবে খেলেছি তাতে আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তানের বিপক্ষেও আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব। সিরিজ জেতার চেষ্টা করব।' টি২০তে পাকিস্তান বেশ ভালো দল। বর্তমানর্ যাংকিং তাই জানাচ্ছে।র্ যাংকিংয়ে নাম্বার ওয়ান দল তারা। আর বাংলাদেশের টি২০র্ যাংকিং ৯ নম্বরে। তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দল চার্টার্ড বিমানে করে বুধবার সরাসরি লাহোর যাচ্ছে। সেই সফরে যাওয়ার আগে মঙ্গলবার দলের শেষ অনুশীলন পর্ব শেষে দুপুরে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে পাকিস্তান সফর নিয়ে অনেক আশাবাদ শুনিয়েছেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। পাকিস্তান সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা তার জন্য কঠিন ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মুশফিক নিজেকে সিরিজ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন পাকিস্তানে নিরাপত্তা ইসু্যতে। সাকিব আল হাসান দলে নেই আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কারণে। দুই সিনিয়র মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবালের সঙ্গী মূলত পুরো তারুণ্য নির্ভর দল। নিজের দল নিয়ে টি২০ অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ বেশ সন্তুষ্ট, 'এই দলে জায়গা পেয়েছে তারা প্রায় সবাই এবারের বিপিএলে খুবই ভালো পারফরম্যান্স করেছে। বেশির ভাগ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান রানের মধ্যে আছে। বোলাররা উইকেট পেয়েছে। ম্যাচে ভালো পারফর্ম করেছে। দলের শক্তি নিয়ে আমি সার্বিকভাবে অনেক আত্মবিশ্বাসী। এখন দেখার বিষয় মাঠের ক্রিকেটে আমরা নিজেদের কেমন করে মেলে ধরতে পারি। আমি এবং তামিম এই দলের সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড়। আমরা দুজনেই মনে করি এই দলে আমাদের দায়িত্বটা একটু বেশি। টপঅর্ডারে তামিমের অভিজ্ঞতা অনেক বড় একটা বিষয়। বেশ ভালো ছন্দেও আছে তামিম। এই বিপিএলে রানও করেছে। দলে ব্যাটসম্যান হিসেবে আমারও যে ভূমিকা থাকবে আশা করছি সেটা ভালোভাবে পালনে সক্ষম হব। সত্যি বলতে কি দলের প্রতিটি ক্রিকেটারেরই নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই সিরিজে হয়তো অনেক ব্যাটসম্যানকে নতুন জায়গায় ব্যাটিং করতে হতে পারে- এই বিষয়টা সিরিজ শুরুর আগে সবাই বেশ ভালোই জানে, সেভাবেই তারাও নিজেদের প্রস্তুত করছে।' পাকিস্তান সফর নিয়ে প্রসঙ্গ উঠলে নিরাপত্তা ইসু্য আলোচনার অনেক বড় জায়গাজুড়ে থাকে। অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের সংবাদ সম্মেলনেও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিষয়টিই প্রশ্ন আকারে প্রাধান্য পেল। সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের কাছে প্রথম প্রশ্নটাই ছিল, মুশফিক যাচ্ছেন না নিরাপত্তার কথা বলে, তো আপনি কীভাবে আপনার পরিবারকে বোঝাতে পারলেন? পারিবারিকভাবে মুশফিক ও মাহমুদউলস্নাহ খুবই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। দুজনেই ভায়রা ভাই। মুশফিকের এই সফরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত এবং নিজের পরিবারকে শেষপর্যন্ত রাজি করানোর বিষয়ে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ বললেন, 'শুরুতে তো অবশ্যই পরিবারকে বোঝানো কিছুটা কঠিনই ছিল। পরিবারের সবাই শুরুতে বেশ সংশয়ে ছিল। তবে আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে সার্বিক বিষয়টা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তারাও ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। এখন পর্যন্ত যা শুনছি তাতে পাকিস্তানের এবারের সফরে বেশ জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। মুশফিক এই সফরে যাচ্ছে না। তার এই সিদ্ধান্তকে আমিও সমর্থন করি, সম্মান জানাই। পরিবার যে কারোর জন্যই অনেক বড় ইসু্য।' পাকিস্তান এই সফরে পুরো বাংলাদেশ দলকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে বলে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে। দলের আগেপিছে প্রতিদিনই আধুনিক অস্ত্রসাজে সজ্জিত নিরাপত্তা বাহিনী থাকবে। হোটেলে এবং স্টেডিয়ামের প্রতিটি কর্নারে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করছে পাকিস্তান। চারধারে বন্দুকের নলের এমন কড়া নিরাপত্তা বলয় কি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেট খেলার মনোযোগে সমস্যা তৈরি করবে না? মাহমুদউলস্নাহ জানিয়ে দিলেন, 'দেখুন, খেলার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই হয়ে গেছে। এখন আমাদের একটাই কাজ, ওখানে গিয়ে খেলা এবং পারফর্ম করা।' তিন ম্যাচ সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। প্রথম দুটি ম্যাচ হবে ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি। তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচটি হবে ২৭ জানুয়ারি। ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ দল ঢাকায় ফিরবে।