বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি২০ সিরিজ

ব্যাটিংয়ে সেই একই হাল

কোনো বিরতি না দিয়ে টানা দ্বিতীয় দিন দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম দিনের ভুল থেকে কিছুটা হলেও শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। সেই শিক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়েছে কি না, তা দ্বিতীয় ম্যাচের স্কোরকার্ডই বলে দিচ্ছে।

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শনিবার দ্বিতীয় টি২০তে বাজেভাবে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যাচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। এ ম্যাচে একমাত্র তামিম ইকবাল ছাড়া বাকিরা ব্যাটহাতে বড় ইনিংস গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন -ওয়েবসাইট
ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ বাংলাদেশের। অন্যদিকে স্বাগতিক পাকিস্তানের সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচ। লাহোরে শুক্রবার তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় টি২০তেও টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুতেই চাপে পড়ে টাইগাররা। আগের ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ায় বেশ সমালোচনায় পড়তে হয়েছিল অধিনায়ক মাহমুদউলস্নাহকে। উইকেট ছিল বেশ মন্থর। সংবাদ সম্মেলনে উইকেটের দোষ দিয়ে বেঁচেছিলেন। বলছিলেন, উইকেটের আচরণ বুঝতে পারেননি। কিন্তু এদিনও সেই একই ভুল করলেন। মন্থর গতির ব্যাটিংয়ে সে ম্যাচে অন্তত লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছিল দল। তবে সবচেয়ে কম রান তোলার বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। এদিন সেই রেকর্ড ছাপিয়ে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ-সৌম্য সরকার কেউই ব্যাট হাতে আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয় টাইগাররা, অবস্থা আরও শোচনীয়। কোনো বিরতি না দিয়ে টানা দ্বিতীয় দিন দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম দিনের ভুল থেকে কিছুটা হলেও শিক্ষা নেয়া প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। সেই শিক্ষা নেয়া সম্ভব হয়েছে কি না, তা দ্বিতীয় ম্যাচের স্কোরকার্ডই বলে দিচ্ছে। প্রথম ম্যাচে ১৪১ রান তোলা বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচে আটকে গেল আরও কমে, ১৩৬ রানে! লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় এই ম্যাচের উইকেট কিন্তু স্স্নো ছিল না। সামান্য ঘাস আছে। উইকেটে আছে সতেজ ভাব। বল ঠিকই ব্যাটে আসছে। কিন্তু এখানেও বাংলাদেশের ব্যাটিং সেই কচ্ছপ গতির! বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সেই পুরনো চেহারা-প্রচুর ডটবল। পাকিস্তানের বোলারদের ছোট ছোট সুইং, বাউন্স বিপাকে ফেলেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। তাতে রানের চাকা সচল থাকেনি গোটা ইনিংসের কোনো অংশেই। প্রথম ম্যাচের মতোই লাহোরের দ্বিতীয় টি২০তে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক কিছুই একই রকম হলো! বরং একটু খারাপই হলো। প্রথম ম্যাচের চেয়ে অনেক বেশি ব্যাটিং সহায়ক ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ যে ব্যাটিং করাই ভুলে যাচ্ছে। লাহোরের এই স্টেডিয়ামে টি২০তে আগে ব্যাট করে সবচেয়ে কম রানের বাজে রেকর্ডটা এখন বাংলাদেশের! প্রথম ম্যাচে ৪৫টি বল ডট করেছে, দ্বিতীয় ম্যাচে ডট বলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭-এ। তবে চার-ছক্কার সংখ্যা কাকতালীয়ভাবে গেছে মিলে। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও ১২টি বাউন্ডারির পাশে ছক্কা ৩টি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করলেন এই ম্যাচেও ওপেনার তামিম ইকবাল। প্রথম ম্যাচের সঙ্গে মিল রেখে তামিম এই ম্যাচেও আরেকবার রান আউট হলেন! তামিম ইকবাল একপ্রান্ত আগলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তামিম ইকবাল টি২০তে তার ব্যাটিং স্টাইল বদলে ফেলেছেন। হাত খুলে ব্যাটিং না করে লম্বা সময় উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। সেই ঘরানার ব্যাটিং এই ম্যাচেও করলেন। তামিম করলেন ৫৩ বলে ৬৫ রান। স্ট্রাইকরেট ১২২.৬৪। একজন ওপেনার ইনিংসের ১৮ ওভার পর্যন্ত খেলে কেন মাত্র ৬৫ রান করবেন- সেই জবাবদিহি এখন দলের কোচ তামিমের কাছে চাইতেই পারেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিমের সর্বশেষ ফিফটিটি ছিল নটিংহামে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত বছরের ২০ জুন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭ মাস ৫ দিন পর পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা এই বাঁ হাতি। টি২০তে ক্যারিয়ারের দ্বাদশতম ফিফটি উদযাপনে সেখানে প্রতীক্ষা করতে হয়েছে তামিমকে ১ বছর ৫ মাস ২১ দিন। বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউই নিতে পারলেন না দায়িত্ব। ব্যাটিংয়ে আরেকটি হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখিয়েছে বাংলাদেশ। শুরু, মাঝে বা শেষে ম্যাচের তিন পর্বের কোনো সময়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পাকিস্তানি বোলারদের শাসন করতে পারেনি। প্রথম টি২০তে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি টিকেছিল ১১ ওভার। স্কোরবোর্ডে উঠেছিল ৭১ রান। এদিন উল্টো চিত্র। মোহাম্মদ নাঈম ফেরেন ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে। মোহাম্মদ মিঠুনের পরিবর্তে একাদশে ঢোকা মেহেদী হাসান নেমেছিলেন তিনে। ২০১৮ সালের পর ফের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা এই তরুণ ১ ছক্কা হাঁকিয়ে বিদায় নেন ১২ বলে ৯ রান করে।