রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট

প্রস্তুতি ম্যাচ না থাকায় ডমিঙ্গোর অসন্তোষ

কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে টেস্ট খেলার অন্তত সাত-আট দিন আগে সফরে যাওয়া উচিত। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা, দুইদিন অনুশীলনের সুযোগ। সাধারণত এটাই আদর্শ টেস্টের আগে

প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সংবাদ সম্মেলনে রাসেল ডমিঙ্গো -ওয়েবসাইট
ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলার আগে প্রস্তুতি ম্যাচ পায়নি বাংলাদেশ। সফরে সাদা পোশাকের দুই ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছিল মুমিনুল হকের দলকে। পাকিস্তানে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নামার আগেও টাইগাররা পাচ্ছে না প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার সুযোগ। টেস্ট খেলার জন্য এটি যে আদর্শ নয় সেটি সরাসরিই বললেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ দল রওনা হবে মঙ্গলবার রাতে। মুমিনুল-তামিমরা সেখানে পৌঁছাবেন বুধবার সকালে। বৃহস্পতিবার অনুশীলন করে শুক্রবারই টিম টাইগার্স নেমে পড়বে পাঁচ দিনের ম্যাচ খেলতে। সোমবার মিরপুরে সফর-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তুতি ম্যাচ না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন টাইগারদের কোচ, 'এটা আদর্শ হতে পারে না। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে টেস্ট খেলার অন্তত সাত-আট দিন আগে সফরে যাওয়া উচিত। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা, দুইদিন অনুশীলনের সুযোগ। সাধারণত এটাই আদর্শ টেস্টের আগে। কিন্তু পাকিস্তানে গিয়ে কিছুটা অনুশীলন করেই টেস্ট খেলতে নেমে পড়তে হবে। আমরা বুধবার সকালে পাকিস্তান পৌঁছাব, বৃহস্পতিবার অনুশীলন, শুক্রবার ম্যাচ। এটা আসলে ভালো প্রস্তুতি হতে পারে না।' দুই টেস্টের জন্য ১৬ ক্রিকেটার নিয়ে ভারত সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তান সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টের জন্য টাইগার দল ১৪ সদস্যের। হয়েছে অনেক অদল-বদল। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম পাকিস্তান সফরে না থাকায় মিডল অর্ডারে এমনিতেই আছে বড় শূন্যতা। সেই ফাঁকা জায়গা পূরণে বাংলাদেশকে আস্থা রাখতে হবে অনভিজ্ঞদের ওপর। অনেক পরিবর্তন বলেই ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো এক এক করে জানিয়ে দিয়েছেন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা কে কোন পজিশনে নামবেন। উইকেটকিপিং ছেড়ে স্পেশালিষ্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে বাংলাদেশের সবশেষ ভারত সফরে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করেছেন মুশফিক। চরম বিপর্যয়ের মাঝে কেবল তার ব্যাটেই ছিল কিছুটা প্রতিরোধের আভাস। সাদা পোশাকে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিককে ঘিরেই সাজানো হয় বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। কিন্তু নিরাপত্তা শঙ্কায় পরিবারের সায় না পাওয়ায় পাকিস্তান সফরে মুশফিক থাকছেন না। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট খেলতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের কোচ দিলেন দলের মিডল অর্ডার সাজানোর ধারণা, 'এই মুহূর্তে মুমিনুল হক চার নম্বরের জন্য পাকা। নাজমুল হোসেন শান্ত সম্ভবত তিনে ব্যাট করবে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করবে সাইফ হাসান। মোহাম্মদ মিঠুন আর মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ যথাক্রমে ৫ ও ৬ নম্বরে ব্যাট করবে। লিটন দাস সম্ভবত সাতে নামবে।' ভারত সফরে তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত কারণে না থাকায় সাদমান ইসলামের সঙ্গে ওপেনিংয়ে ছিলেন ইমরুল কায়েস। তামিম ফিরলেও চোটের কারণে নেই সাদমান আর ইমরুল। কোচের আভাস অনুযায়ী, ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী হিসেবে রাওয়ালপিন্ডিতে অভিষেক হতে যাচ্ছে সাইফের। দুই টেস্ট খেলা শান্ত ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে নামবেন তিন নম্বরে। পাঁচ নম্বরে মুশফিকের জায়গা পূরণ করার ভার মিঠুনের কাঁধে। মাহমুদউলস্নাহ ছয়ে খেললে উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে সাতে নামবেন লিটন। ব্যাটিং অর্ডার বলতে গিয়ে কোচ মূলত একাদশটাই বলে দিয়েছেন! সাত ব্যাটসম্যানের সঙ্গে চার বোলার যোগ করলেই মিলে যায় হিসেবটা। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় পাকিস্তানে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার ক্রিকেটারদের দিয়েছিল বিসিবি। মুশফিকুর রহিম তাই পরিবারের সায় না পেয়ে নিয়েছিলেন স্বাধীন সিদ্ধান্ত, নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন পাকিস্তান সফর থেকে। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে অদ্ভুত সূচিতে হওয়া সিরিজে তিনি না যাওয়ায় তৈরি হয়েছে নতুন সংকট। যার প্রভাবে জিম্বাবুয়ে সিরিজের একমাত্র টেস্টে তার থাকা না থাকা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের কথার সঙ্গে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সুর মিলে যে আবহ তৈরি হয়েছে, তাতে আভাস পাকিস্তানে আলাদা দুই সময়ে দুই টেস্টের মাঝে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাও রাখা হতে পারে মুশফিককে। প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কাছেও গেল জিম্বাবুয়ে সিরিজে মুশফিকের থাকা, না থাকার প্রসঙ্গ। তিনি জানান রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পর দল আবারও পর্যালোচনা করা হবে। কিন্তু কেবল মাঝে এক টেস্টের জন্যই ব্যাটিং অর্ডার বদলানো নাকি কঠিন, 'আমার কাছে বার্তা আছে যে এটা কেবল এক টেস্টের স্কোয়াড। আমরা ফিরে আসার পর আবার পুনরায় পর্যবেক্ষণ করব। আপনাকে মনে রাখতে হবে মুশফিক শেষ টেস্টেও রান করেছে। কিন্তু আমাদের আবার আরেকটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হচ্ছে, কেবল একটা টেস্টের জন্য ব্যাটিং অর্ডার বদল করা এটা বেশ কঠিন। আমরা চাই ছেলেরা এখানে রান করুক। কিন্তু মনে রাখতে হবে ভারতে মুশফিক আমাদের সেরা খেলোয়াড় ছিল।'