জামালদের চ্যালেঞ্জ এবার উত্তর কোরিয়া

দ্বিতীয় রাউন্ডে যাই হোক না কেন, সেটা নিয়ে এখন আর মাথা ঘামাচ্ছেন না জেমি ডে। বাংলাদেশের কোচ বরং দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখতে পারাটাকেই বড় কীতির্ হিসেবে দেখছেন

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
আগামী বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে এশিয়ান গেমস ফুটবলে এবারই প্রথম শেষ ষোলতে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের ফুটবলের দুঃসময়ে মহা-আনন্দের এক উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন জামাল ভুইয়া-সাদ উদ্দিনরা। এতটা আশা করেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও (বাফুফে)। দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ধরেই নিয়েছিল পূবর্ ব্যথর্তার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে আগেভাগেই দেশে ফিরবে দল। তাই ফেরার টিকিটও কেটে রেখেছিল বাফুফে! সেখানে কাতারকে হারিয়ে পরবতীর্ রাউন্ড নিশ্চিত করে ম্যানেজম্যান্টকে ভুল প্রমাণ করেছে জেমি ডের শিষ্যরা। তাই বলে আনন্দে গা ভাসিয়ে দেয়ার উপায় নেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। সামনে যে আরও কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। সেই পরীক্ষার নাম উত্তর কোরিয়া। ‘এফ’ গ্রæপের রানাসর্আপ হওয়া এই দলটির বিপক্ষেই ২৪ আগস্ট লড়াইয়ের ময়দানে অবতীণর্ হতে হবে তাদের। এশিয়ান গেমস ফুটবলে তেমন কোনো প্রত্যাশা নিয়ে দল পাঠায়নি বাফুফে। কারণ এবারের আসরে বাংলাদেশের গ্রæপটা ছিল অনেক কঠিন। অন্যদিকে, খাদের কিনারে ছিল দেশের ফুটবল, ব্যথর্তার বৃত্তে ঘোরপাক খাচ্ছিল দল। ব্যথর্তার সেই দিন বুঝি এবার ফুরোতে চলেছে। নতুন কোচের হাতে গড়া নতুন দল দেখিয়েছে নিজেদের সামথর্্য। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ড্রয়ের পর হারিয়ে দিয়েছে কাতারকে। শুধু বাফুফে নয়, ফুটবল বিশেষজ্ঞরাও দলের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি। দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে তাদের ভুল প্রমাণ করেছে জামাল ভুইয়ার দল। কোচ জেমি ডেরও কৃতিত্ব আছে এতে। যদিও সেই কৃতিত্ব শিষ্যদেরই দিয়েছেন কোচ। সোজাসাপ্টা বলে দিয়েছেন, ‘এতে আমার কোনো কৃতিত্ব নেই।’ তবে শিষ্যরা সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিতে পারায় ভীষণ তৃপ্ত তিনি। উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ গোলের হার দিয়ে শুরু হয়েছিল জামাল-সুফিলদের। তবে ওই ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স করে কোচের আস্থা অজর্ন করেছিলেন দলের খেলোয়াড়রা। জেমি ডে শিষ্যদের প্রশংসা করে আরও ভালো করার আত্মবিশ্বাস জাগিয়েছিলেন শিষ্যদের মাঝে। যার ফল মিলেছে পরবতীর্ ম্যাচে থাইল্যান্ডের সঙ্গে ড্রয়ে। এরপর তো কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়া। এশিয়ান গেমসটাকে আসন্ন সাফ টুনাের্মন্ট আর বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের প্রস্তুতির টুনাের্মন্ট ধরে নিয়েই দল পাঠিয়েছিল বাফুফে। সেই দলই প্রত্যাশার থেকেও বেশি কিছু উপহার দিয়েছে। ফিফা র‌্যাংকিংয়ে নিজেদের থেকে ৯৬ ধাপ এগিয়ে থাকা কাতারকে হারিয়েছে তারা। সামনে এখন উত্তর কোরিয়ার চ্যালেঞ্জ। তারা এশিয়ার ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি। তাদের বিপক্ষে বড় কিছু আশা করা বোকামিই হবে। দ্বিতীয় রাউন্ডে যাই হোক না কেন, সেটা নিয়ে এখন আর মাথা ঘামাচ্ছেন না জেমি ডে। বাংলাদেশের কোচ বরং দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রাখতে পারাটাকেই বড় কীতির্ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের এই দল নিয়ে সমালোচকরা অনেক কথা বলেছেন। আমরা সেটির জবাব দিয়েছি। দ্বিতীয় রাউন্ডে যাই হোক না কেন, এটিই আমাদের বড় প্রাপ্তি।’ বড় প্রাপ্তিই বটে। এই সাফল্য আসন্ন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ আর বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে ভালো কিছু করার জন্য বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে বাংলাদেশকে। ঘরের মাঠে দুটো আন্তজাির্তক আসরের আগে এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌছে যাওয়া বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য শুভবাতার্ই। আবারও ধাপে ধাপে র‌্যাংকিংয়ে নিজেদের এগিয়ে নেবে লাল-সবুজের দল, এমনটাই প্রত্যাশা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের। অনেকেই স্বপ্ন দেখছে এই দলটিকে নিয়ে। যে দল প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমসের শেষ ষোলতে ঠাই করে নিয়ে নতুন ইতিহাস গড়তে পারে, দেশের ফুটবলকে তারা দিতে পারে আরও অনেক কিছু। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গত তিন আসরের গ্রæপ পবর্ উৎরাতে না পারার হতাশাও হয়তো জয় করতে পারবে জেমি ডের শিষ্যরা। আসলেই কি সেটা হবে? উত্তরটা সময়ই দেবে।