বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ

তিন সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে দক্ষিণাঞ্চল

দ্বিতীয় পর্বে সময়টা দারুণ কাটছে দক্ষিণাঞ্চলের। আগেই সেঞ্চুরি পান বিজয় ও সোহান। শতক হাঁকিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন মেহেদী হাসানও। অন্যদিকে সিলেটে উত্তরাঞ্চলের হয়ে তাসকিন তুলে নেন ৫ উইকেট

প্রকাশ | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) দ্বিতীয় পর্বে সময়টা দারুণ কাটছে দক্ষিণাঞ্চলের। ব্যাটিং তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তারা। আগেই সেঞ্চুরি পান এনামুল হক বিজয় ও নূরুল হাসান সোহান। শতক হাঁকিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন মেহেদী হাসানও। পাকিস্তান সিরিজের বিবেচনায় ছিলেন তাসকিন আহমেদ। ইনজুরির কারণে শেষ পর্যন্ত জায়গা হয়নি। মূলত ম্যাচ ফিটনেসের অভাবে বাদ পড়ে যান তিনি। তবে সে ঘাটতি খুব করে পুষিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল)। একাই তুলে নিয়েছেন পাঁচটি উইকেট। তার তোপে পড়েই এদিন মাত্র ১৬৯ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। প্রথম দিন শেষে মধ্যাঞ্চলের চেয়ে ৮০ রানে পিছিয়ে আছে বিসিবি উত্তরাঞ্চল। কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে টস জিতেছিল পূর্বাঞ্চল। বেছে নেয় বোলিং। আর তার শুরুটাও ভালো করে তারা। রেজাউরের বোলিং তোপে ১৬ রানেই শেষ টপ অর্ডারের তিন উইকেট। এরপর দলীয় ৬১ রানে চতুর্থ উইকেট তুলে নেয় তারা। রেজাউর রহমানের তোপে পড়ে শুরুটা হলো বিভীষিকাময়। কিন্তু এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণাঞ্চল। রীতিমতো রান উৎসবে মাতে দলটি। সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনজন ব্যাটসম্যান। এনামুল হক বিজয়, নুরুল হাসানের পর তরুণ মেহেদী হাসানও পৌঁছান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। ফলে বড় সংগ্রহের পথেই আছে তারা। ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ত্রয়ী ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং ঝলকের সুবাদে প্রথম দিনে ৮৭ ওভার খেলে ৬ উইকেটে ৪৪৩ রান তুলেছে আব্দুর রাজ্জাকের দক্ষিণাঞ্চল। এনামুল হক বিজয় খেলেন ১২৯ রানের দাপুটে এক ইনিংস। ১৫৫ বলের এ চমৎকার ইনিংসে ছিল ১৪ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কার মার। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এটি তার ২১তম সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরি পেয়ে সাজঘরে ফেরেন মেহেদী হাসান। ১০ বাউন্ডারি ও ৮ ছক্কায় ৮৫ বলে খেলেন তিনি ১১২ রানের দুরন্ত এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। তবে অপরাজিত রয়ে গেছেন নূরুল হাসান সোহান। প্রথম দিন শেষে তার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ১৫৫ রান। অনন্য এ ইনিংস খেলেন ২২০ বলে ১৯ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়। পূর্বাঞ্চলের হয়ে ৭৯ রান খরচ করে ৩ উইকেট শিকার করেন রেজাউর রহমান। লম্বা সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে তাসকিন। ছন্দে থাকলে পড়েন ইনজুরিতে। ইনজুরি কাটিয়ে ছন্দ খুঁজে পেতে পেতে আবার পড়েন ইনজুরিতে। বেশ বাজে সময়ই যাচ্ছে তার। তবে বিপিএলের মাঝ পথ থেকেই ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন তিনি। যদিও ইনজুরির ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তারপরও এদিন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন এ পেসার। তবে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথম বোলিং নিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার কাজের শুরুটা করেন সালাহউদ্দিন শাকিল। মোহাম্মদ নাঈমকে ফিরিয়ে দেন খালি হাতে। এরপরই তোপ দাগান তাসকিন। মাত্র ৮ রানেই পড়ে যায় ৪টি উইকেট। এরপরও নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে মধ্যাঞ্চল। এক রকিবুল হাসান ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দায়িত্ব নিতে পারেননি। পঞ্চম উইকেটে শুভাগত হোমের সঙ্গে তার করা ৪৭ রানের জুটিটিই ইনিংসে সর্বোচ্চ। ফলে ১৭০ রানেই গুটিয়ে যায় দলটি। দলের পক্ষেও সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংসটি খেলেন রকিবুল। ১২৭ বলের ইনিংসটি সাজান ১০টি চার দিয়ে। এছাড়া নয় নম্বরে নামা আরাফাত সানির ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। উত্তরাঞ্চলের পক্ষে ৫৪ রানের খরচায় ৫টি উইকেট পান তাসকিন। ৩৫ রানের বিনিময়ে ২টি শিকার শাকিলের। ১টি করে উইকেট নেন সুমন খান, আরিফুল হক ও এনামুল হক জুনিয়রও। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে খুব ভালো ভালো অবস্থানে নেই উত্তরাঞ্চলও। যদিও শুরুটা ছিল দারুণ। দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও জুনায়েদ সিদ্দিকি ব্যাট থেকে ৬৯ রানের জুটি। কিন্তু এরপর স্কোরবোর্ডে ১০ রান যোগ করতে ৩টি উইকেট হারালে চাপে পড়ে যায় দলটি। দিনশেষে ৩ উইকেটে ৮৯ রান তুলেছে তারা। নাঈম ইসলাম ১৮ ও মুশফিকুর রহিম ১ রানে ব্যাট করছেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে) দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস ৮৭ ওভারে ৪৪৩/৬ (নাফীস ১, বিজয় ১২৯, ফজলে ১২, শামসুর ০, আল-আমিন ১৮, সোহান ১৫৫*, মেহেদী ১১২, রেজা ৯*; হাসান ১/৭৩, রেজাউর ৩/৭৯, নোমান ০/৫৫, সাকলাইন ১/১১৯, আশরাফুল ০/৫৮, নাসির ০/৪২)। মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস ৪৮.৫ ওভারে ১৭০ (নাঈম ০, মজিদ ৫, মার্শাল ১, রকিবুল ৭০, শুভাগত ২১, জাকের ১৯, শাহিদুল ৫, সানি ২৫*, মুকিদুল ১১, মুস্তাফিজ ৬; শাকিল ২/৩৫, তাসকিন ৫/৫৪, সুমন ১/৩৫, আরিফুল ১/২৬, এনামুল ১/১৮)। উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস ৩৬ ওভারে ৮৯/৩ (রনি ১৯, জুনায়েদ ৪৭, মাহিদুল ০, নাঈম ১৮*, মুশফিক ১*; মুস্তাফিজ ১/৪৬, শহিদুল ০/২৭, মুকিদুল ০/৫, সানি ১/৮, শুভাগত ১/১)।