বাদ পড়েই ছন্দে মুস্তাফিজ

প্রকাশ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক মাঠ থেকে উইকেট আলাদা করা কঠিন। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের ২২ গজে সবুজ ঘাসের উপস্থিতি এতই বেশি। সকাল থেকে রোদের দেখাও মেলেনি সেভাবে। পেস-কন্ডিশন পুরোপুরি কাজে লাগালেন মুস্তাফিজুর রহমান। বিসিএলে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। বাঁহাতি পেসারের বোলিং নৈপুণ্যে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিড পায় মধ্যাঞ্চল। দ্বিতীয় দিন শেষে ১৯১ রানে এগিয়ে রয়েছে দলটি। সাম্প্রতিক সময়টা ভালো যাচ্ছে না দেশ সেরা পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। সীমিত ওভারের ম্যাচে কিছুটা ভালো হলেও লম্বা সংস্করণে বেহালদশাই বলা যায়। যে ধারায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে বাদই পড়ে যান এ পেসার। তবে বাদ পড়েই যেন তেতে উঠেছেন তিনি। বিসিএলের আগের ম্যাচে খেলার সুযোগ হয়নি মোহাম্মদ আশরাফুলের। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়েই জ্বলে উঠেছেন তিনি। কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দারুণ ব্যাট করেছেন তরুণ পিনাক ঘোষও। দুইজনই তুলে নিয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। ফলে দক্ষিণাঞ্চলকে ভালো জবাব দিচ্ছে পূর্বাঞ্চল। তবে দ্বিতীয় দিন শেষে এখনও ২১২ রানে পিছিয়ে আছে দলটি। বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডে শুক্রবার প্রথম দিনে তাসকিন ঝড়ে ১৭০ রানেই গুটিয়ে যায় মধ্যাঞ্চলের ইনিংস। একইদিনে উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রান তুলেছিল। দ্বিতীয় দিনে মুস্তাফিজ ঝড়ে ১৬৬ রানেই গুটিয়ে যায় উত্তরের ইনিংস। ফলে ১ম ইনিংসে ৪ রানের লিড পায় মধ্যাঞ্চল। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৭ রান সংগ্রহ করে মধ্যাঞ্চল। মিরপুরে বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে মুস্তাফিজ এক ইনিংস বোলিং করে দিয়েছিলেন ১০৬ রান। পাননি কোনো উইকেট। লাল বলে জৌলুস কিছুটা কমে যাওয়ায় জায়গা হয়নি পাকিস্তান সফরের টেস্ট দলে। এ বাঁহাতি পেসার জ্বলে উঠলেন ঠিকই, তবে একটু দেরিতে। মুস্তাফিজের ৪ উইকেট শিকারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে গেছে উত্তরাঞ্চল। প্রথম ইনিংসে তারা পেয়েছে ৪ রানের লিড। আরিফুল হক ৫০ ও জুনায়েদ সিদ্দিকী করেছেন ৪৭ রান। বোলিং উইকেটে শুক্রবার আগে ব্যাট করে ১৭০ রানের বেশি তুলতে পারেনি মধ্যাঞ্চল। ৫৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভুগিয়েছিলেন উত্তরের বোলার তাসকিন আহমেদ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খারাপ হলেও দিন শেষে ভালো অবস্থানে আছে মধ্যাঞ্চল। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও কোনো রান করতে পারেননি মোহাম্মদ নাঈম। দলীয় ৫০ রানের মধ্যেই টপ অর্ডারের ৩টি উইকেট হারায় তারা। এরপর আবদুল মজিদ তাইবুর রহমানের দৃঢ়তায় ৫ উইকেটে ১৮৭ তুলে দিন শেষ করেছে তারা। দলের পক্ষে ১০৭ বলে ৭ চারে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন মজিদ। ৪৭ রান আসে তাইবুরের ব্যাট থেকে। ২৮ রানে অপরাজিত আছেন শুভাগত হোম। তার সঙ্গী জাকের আলী এখনো রানের খাতা খুলেননি। আগের ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেওয়া উত্তরাঞ্চলের পেসার তাসকিন আহমেদ এদিন ২টি উইকেট পেয়েছেন। কক্সবাজারে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে এদিন পূর্বাঞ্চলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার পিনাক ঘোষ ও মোহাম্মদ আশরাফুর। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮০ রানের ইনিংস খেলেন পিনাক। ১২৩ বলে ১২টি চারের সাহায্যে ৭১ রানের ইনিংস খেলেন আশরাফুল। এছাড়া ৪৪ রান আসে ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকে। ব্যক্তিগত ২৮ রানে ফিরে যান ইমরুল। আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক ও মেহেদী হাসান। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে আগের দিনের ৬ উইকেটে ৪৪৩ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণাঞ্চলের দিনের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। আগেরদিন সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া নুরুল হাসান সোহানকে শুরুতেই হারায় তারা। এদিন কোনো রানই যোগ করতে পারেননি সোহান। আউট হয়েছেন ১৫৫ রানেই। ফরহাদ রেজার ব্যাট থেকে আসে ২৬ রান। পূর্বাঞ্চলের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন রেজাউর রহমান ও সাকলাইন সজীব। ২টি উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। সংক্ষিপ্ত স্কোর মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ১৭০ উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ৬৩.৪ ওভারে ১৬৬ (আগের দিন ৮৯/৩) (রনি ১৯, জুনায়েদ ৪৭, মাহিদুল ০, নাঈম ২২, মুশফিক ২, তানবির ৫, আরিফুল ৫০ শাকিল ১*; মুস্তাফিজ ৪/৬৮, শহিদুল ১/৪৯, মুকিদুল ১/৩২, সানি ২/১০, শুভাগত ১/১)। মধ্যাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংস: ৫১.৩ ওভারে ১৮৭/৫ (নাঈম ০, মার্শাল ১১, রকিবুল ২৭, মজিদ ৬৯, তাইবুর ৪৭, শুভাগত ২৮*, তাসকিন ২/৪৬, শাকিল ১/৪৮, সুমন ১/২২, আরিফুল ১/২৭)। (দ্বিতীয় দিন শেষে) দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ১০১.৩ ওভারে ৪৮২ (আগের দিন ৪৪৩/৬) (নাফীস ১, বিজয় ১২৯, ফজলে ১২, আল-আমিন ১৮, সোহান ১৫৫, মেহেদি ১১২, রেজা ২৬, রবিউল ১২*, রাব্বি ৪; হাসান ২/৭২, রেজাউর ৩/৯৬, সাকলাইন ৩/১২৬, আশরাফুল ১/৬৩, নাসির ০/৪২)। পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ৭৮ ওভারে ২৭০/৫ (পিনাক ৮০, আশরাফুল ৭১, ইয়াসির ৪৪, ইমরুল ২৮, আফিফ ১৫, নাসির ১২*, জাকির ১৩*; রেজা ১/১৫, রাজ্জাক ২/১০২, মেহেদি ২/৯৮)।