প্রতিভা নয়, পরিশ্রমেই আজকের মাহমুদুল

প্রকাশ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ক্রীড়া প্রতিবেদক ভারতের রাহুল দ্রাবিড়কে 'দ্য ওয়াল' বলা হতো। আমি দ্রাবিড়ের খুব ভক্ত। আমিও আমার দলের ওয়াল হতে চাই- দক্ষিণ আফ্রিকায় যুব বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে সংবাদ মাধ্যমকে এমন কথাই বলেছিলেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ডানহাতি ব্যাটসমান মাহমুদুল হাসান জয়। যার ঝলমলে সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে যেকোনো পর্যায়ের বৈশ্বিক আসরে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। সহজাত প্রতিভা বলতে যা বোঝায়, ক্রিকেটে পা রাখার সময় মাহমুদুলের সেটি ছিল না। পুরোটাই পরিশ্রমের ফসল। চাঁদপুরের ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমি থেকে শুরু করে বিকেএসপি-পুরোটা সময় পরিশ্রম করে গেছেন তিনি। মাহমুদুলের খেলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ঝুঁকিহীন ব্যাটিং। ইনিংস সাজানোর রণকৌশল বেশ পরিষ্কার। প্রথম ৩০ রান করার আগে কোনোরকম ঝুঁকিপূর্ণ শট, যেমন সুইপ, ফ্লিক, গস্নাইড খেলা থেকে বিরত থাকা। ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়ার পরেই আক্রমণাত্মক শট খেলে থাকেন তিনি। সেমিফাইনালে কিউইদের বিপক্ষে এমন রণকৌশলেই ব্যাট করেছেন এই ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ২০১৩ সালে মাহমুদুলকে তার বাবা আবুল বারেক চাঁদপুর ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করান। চাঁদপুর জেলা কোচ শামীম ফারুকির তত্ত্বাবধানে ক্রিকেটে হাতেখড়ি তার। দুই বছরের মতো সেখানে ক্রিকেট দীক্ষা নিয়ে চলে যান বিকেএসপিতে। তার ক্রিকেট জীবনের প্রথম কোচ ফারুকি সংবাদমাধ্যমকে বললেন, 'সত্যি কথা বলতে ওকে (মাহমুদুল) আমি খুব কম সময় পেয়েছি। ওর বাবা এসে বলল, 'ওকে বিকেএসপিতে ভর্তি করাব, একটু তৈরি করে দিয়েন।' এরপর যতদিন সময় পেয়েছি, ওকে নিয়ে কাজ করেছি। ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে কাজ করেই সে অনেকটা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। এরপর বাকি কাজগুলো করেছে বিকেএসপির স্যাররা। তাদের কৃতিত্বও কম নয়।' মাহমুদুলও প্রথম গুরুর কৃতিত্বকে বড় করে দেখেন, '২০১৩ সালে ক্রিকেট বলে শুরুটাই তো হয়েছে তার (ফারুকি) হাত ধরে। তার কাছে ব্যাট-বল ধরা শেখা আমার। উনিই আমাকে প্রাথমিক বিষয়গুলো শিখিয়েছেন। তার কাছে দুই বছর ব্যাটিংয়ে পাওয়া শিক্ষা পরবর্তীতে বিকেএসপিতে খুব ভালোভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি।' মাহমুদুল সহজাত প্রতিভাবান না হলেও পরিশ্রম দিয়ে নিজেকে নিয়ে যাচ্ছেন উঁচুতে। ছোট বেলায় বড়ভাইদের 'অবহেলা' মাহমুদুলের মধ্যে জেদ ধরিয়ে দেয়। বড় ব্যাটসম্যান হয়ে নিজেকে প্রমাণ করার স্বপ্নের শুরুটাও সেখান থেকে। সেই স্বপ্নের পথেই আছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেরা একজন ব্যাটসম্যান। আর এই এগিয়ে চলার পেছনে তার পরিশ্রমকেই সামনে আনলেন প্রথম কোচ ফারুকি, 'জয় (মাহমুদুল) হচ্ছে পরিশ্রমী ক্রিকেটার। পরিশ্রম দিয়েই এতদূর এসেছে। ছোট থেকেই অনেক পরিশ্রম করেছে। ক্রিকেট নিয়ে ওর স্বপ্ন অনেক বড়। তার একাগ্রতা, মানসিক শক্তি সাহস দিয়েছে। আমার বিশ্বাস, ও অনেক দূর যাবে।'