প্রস্তুতি ম্যাচ

শাহাদাত ঝলকের পর জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ

বিসিবি একাদশ ও জিম্বাবুয়ের দু-দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথম দিনে লড়াই, পাল্টা লড়াই জমল বেশ। প্রতিপক্ষ বোলার হিসেবে ছিল বিশ্বকাপজয়ী যুবারা

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচেই বল করার সুযোগ পাননি। সেই শাহাদাত হোসেনই মঙ্গলবার বিকেএসপি মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের সবচেয়ে সফল বোলার। প্রথম দিনে সফরকারী দলের উইকেট পড়েছে সাতটি, যার তিনটিই অফস্পিনার শাহাদাতের -বিসিবি
সকালের সঙ্গে বিকালের দারুণ মিল। বিকেএসপিতে বিসিবি একাদশ ও জিম্বাবুয়ের দু-দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথম দিনে লড়াই, পাল্টা লড়াই জমল বেশ। এক সেশনে সফরকারীরা এগিয়ে থাকল, তো পরের সেশনে বাংলাদেশের তরুণদের নিয়ে গড়া দলটি ঘুরে দাঁড়াল, দিনশেষে আবারও জিম্বাবুয়ের হাতে লাগাম। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের আগে দু-দিনের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচের প্রথম দিন ব্যাটিং অনুশীলনটা ভালোভাবেই সারল সফরকারী জিম্বাবুয়ে। সফরকারীদের পাশাপাশি বিসিবি একাদশের হয়ে বল হাতে নিজেদের অনুশীলন সারেন সদ্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের দুই সদস্য শরীফুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন। পেসারদের বাজে দিন গেলেও স্পিনাররা পেয়েছেন সাফল্য। প্রথম সেশনে উদ্বোধনী জুটিতে জেঁকে বসা জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং পরের সেশনে এলোমেলো করে দেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী অফস্পিনার শাহাদাত হোসেন। তার বোলিং ফিগারটা এমন ৮-২-১৬-৩। শেষ সেশনে সফরকারীদের প্রতিরোধ আসে কার্ল মুম্বার ফিফটিতে। প্রথম দিনে তাদের অলআউট করতে পারেনি বিসিবি একাদশ দলের বোলাররা। মঙ্গলবার শুরুতে ব্যাটিংয়ে এসে ৯০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৯১ রান তুলেছে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আসা জিম্বাবুয়ে। তারা উদ্বোধনী জুটিতে শতরান তুলে ফেলেছিল। শেষবেলায় মুম্বা ও এইন্সলের অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটিতে তিনশর কাছে গেছে। প্রথম ঘণ্টায় বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের বলে জিম্বাবুয়ে ওপেনার প্রিন্স মাসভাউরের ক্যাচ ছেড়েছিলেন আল-আমিন। বিসিবি একাদশের অধিনায়কই পরে এনে দেন প্রথম সাফল্য। মঙ্গলবার সকালে বিকেএসপি মাঠে টস জেতে জিম্বাবুয়ে। বিসিবি একাদশের বিপক্ষে শুরুটাও মন্দ ছিল না। প্রথম সেশনে কোনো উইকেট হারায়নি সফরকারীরা। ব্যাটে নেমে জিম্বাবুয়ের ওপেনারদ্বয় এনে দেন ১০৫ রানের জুটি। প্রিন্স মাসভাউরে ও কেভিন কাসুজা যখন হতাশা বাড়াচ্ছিলেন, আল-আমিন এনে দেন ব্রেক-থ্রম্ন, ৭ চারে ৭৭ বলে ৪৫ করা মাসভাউরেকে উইকেটের পেছনে আকবর আলীর গস্নাভসে জমা করিয়ে। আরেক ওপেনার কাসুজা ৫১ করে আউট না হয়ে স্বেচ্ছায় ফিরেছিলেন সাজঘরে, দলের ঝটপট কয়েকটি উইকেট পতনের পর আবারও নেমে যান ব্যাটিংয়ে। ইমনের হাতে রানআউট হয়ে ফেরার আগে তার নামের পাশে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস। কাসুজার যাওয়া-আসার মাঝে আরও চার উইকেট তুলে নেয় বিসিবি একাদশ। ব্রিয়ান মাডজিনগানায়ামাকে (১৭) সাজঘরের পথ দেখান শরিফুল ইসলাম। বিশ্বজয়ী যুবা পেসারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন বিশ্বজয়ী অধিনায়ক আকবর। সেই উইকেটের আগেই অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে (১০) সুমন খানের ক্যাচ বানান শাহাদাত। এ অফস্পিনার পরে এলবিডবিস্নউ করেন ১৩ রান তোলা রেগিস চাকাভাকে। এলবিতেই রানের খাতা খুলতে দেননি টিনোটেনডা মুতোমবোডজিকে। প্রতিরোধ গড়ে সেখান থেকে এগোতে থাকে সফরকারীরা। টিমাইচেন মারুমা ও কার্ল মুম্বা ৪৯ রানের জুটি এনে দেন। সেটি ভাঙেন আল-আমিন। ৩৪ রান করা মারুমাকে রিশাদের ক্যাচ বানান স্বাগতিক অধিনায়ক। শেষদিকে আর উইকেট তুলতে পারেনি বিসিবি একাদশ। মুম্বা ও এইন্সলের অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটিতে তিনশর কাছে দিনশেষ করেছে জিম্বাবুয়ে। মুম্বা ৫৪ ও এইন্সলে ২৫ রানে অপরাজিত আছেন। বিশ্বকাপ জিতে আসা অফস্পিনার শাহাদাত হোসেনের ঘূর্ণি ম্যাজিকে প্রতিপক্ষকে দ্রম্নত গুটিয়ে দেয়ার আশা জাগিয়েছিল বিসিবি একাদশ। এ ডানহাতি স্পিনার ৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ২ মেডেনসহ ৫ রানে ৩ উইকেট নেন, দিনশেষে মাত্র ৮ ওভার তার নামের পাশে, ১৬ রানে ওই ৩ উইকেটই আছে। আল-আমিন ২টি, শরিফুল ইসলাম ১টি উইকেট নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ওভার করা লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপস্নব ১৯ ওভারে ৭৭ রানে উইকেটশূন্য। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের হয়ে খেলছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতে আসা অধিনায়ক আকবর আলীসহ শরিফুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন, পারভেজ হোসেন ইমন। দ্বাদশ ব্যক্তি তানজিদ হাসান তামিম। দিনের খেলা শেষে শরিফুল বললেন, 'প্রথম ওভারেই মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ উইকেটটি পেয়ে গেলে দিনের চিত্র অন্যরকমও হতে পারত। তখন আরও কয়েকটা উইকেট নেয়ার সুযোগ হয়তো আসত।' পেসারদের হতাশার দিন কাটার পেছনে বিকেএসপির উইকেটের ভূমিকাও কম নয়। তাদের জন্য যে কিছুই ছিল না এখানে! শাতাদাত জানালেন, 'স্পিন এখানে যতটা সহায়ক পেসারদের জন্য ততটা নয়।' পেসার শরিফুল বললেন, 'সাউথ আফ্রিকায় বাউন্সি উইকেটে খেলে আসার পর এমন উইকেটে বোলিং করা কঠিন। বাড়তি জোর খাটাতে হয়। উইকেটে পেসারদের জন্য কিছুটা সহায়তা রাখা হলে সেটি হয় উপভোগ্য।' সংক্ষিপ্ত স্কোর প্রথম দিন শেষে- জিম্বাবুয়ে : ৯০ ওভারে ২৯১/৭ (মাসভরে ৪৫, কাসুভা ৭০, মুদজিঙ্গানায়ামা ১৭, আরভিন ১০, মারুমা ৩৪, চাকাভা ১৩, মুতুমবোজি ০, মুম্বা ৫৪*, এইন্সলে ২৫*; শরিফুল ১/৪৫, আল-আমিন ২/৪০ ও শাহাদাত ৩/১৬)।