বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট

নিজেদের এগিয়ে রাখলেন নাঈম

আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি। ওদের ৬ উইকেট পড়ে গেছে। এরপর টেলএন্ডার ব্যাটিংয়ে আসবে। আমাদের চেষ্টা থাকবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অলআউট করার - নাঈম হাসান

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২২৮ রান। পড়ন্ত বিকেলে সেঞ্চুরি করা ক্রেইগ আরভিনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে স্বস্তি আনেন নাঈম হাসান। তরুণ অফস্পিনার দিনশেষে নিজেদেরকেই এগিয়ে রাখলেন। ৩৬ ওভার বল করে নাঈম হাসান ৬৮ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। সেরা ছন্দে থাকা এই স্পিনার জানালেন, টানা এমন বল করার অভ্যাসটা তার ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির থেকে করে নেওয়া। সংবাদ সম্মেলনে নাঈম হাসান বলেন, 'আমরা খুব ভালো অবস্থায় আছি। ওদের ৬ উইকেট পড়ে গেছে। এরপর টেলএন্ডার ব্যাটিংয়ে আসবে। আমাদের চেষ্টা থাকবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অলআউট করার।' অপরদিকে মিরপুরের উইকেট পেয়ে চমকে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। প্রথম দিনের খেলা শেষে শতক হাঁকানো জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন এমনটাই জানিয়েছেন। শনিবার জিম্বাবুয়ের আউট হওয়া ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে চারজনকেই ফিরিয়েছেন নাঈম। করেছেন সবচেয়ে বেশি ৩৫ ওভার। এ স্পিনার মনে করেন উইকেট ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই আছে। টিকে থাকলে রান তোলা সম্ভব। জিম্বাবুয়ে খেলেছে পুরো ৯০ ওভার। রান তুলেছে ২.৫৩ রেটে। ব্যাটিং উইকেট পেয়েও জিম্বাবুয়ে যে বেশিদূর আগাতে পারেনি, সেটিই বোঝাতে চেষ্টা করলেন নাঈম। প্রথম দিনে এক স্পেলে টানা ৩২ ওভার বোলিং করেছেন নাঈম হাসান। এতটা লম্বা সময় ধরে বোলিং করাকে অবশ্য সাধারণভাবেই দেখছেন তরুণ অফস্পিনার, 'অভ্যাসটা ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকেই, দীর্ঘসময় বোলিং করার। এক জায়গায় বল ফেলার চেষ্টা করি। এক জায়গায় রান আটকে বল করার কারণেই সাফল্য এসেছে।' বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) দুই ম্যাচে চার ইনিংসে নাঈম হাসান শিকার করেন ২১ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সফল অফস্পিনার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন টেস্টেও। সাদা পোশাকে ম্যাচের মধ্যে থাকাতে আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে, 'বিসিএল থেকে আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। কারণ অনুশীলনের চেয়ে ম্যাচের মধ্যে থাকলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।' গত কয়েক বছর থেকেই বাংলাদেশে খেলা মানে প্রথম দিন থেকেই ঘূর্ণি বলের নাচানাচি। বিশেষ করে মিরপুরের উইকেট প্রথম সেশন থেকেই খেলা চলে যায় স্পিনারদের দখলে। কিন্তু এবার তা একেবারেই ভিন্ন। উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য বেশ ভালো, আবার জায়গায় বল করলে পেসার, স্পিনার সবার জন্যই থাকছে রসদ। বাংলাদেশে এমন স্পোর্টিং উইকেট পেয়ে রীতিমতো বিস্মিত জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ও সেঞ্চুরিয়ান ক্রেইগ আরভিন জানালেন, উইকেট এত ভালো হওয়াতেই ম্যাচে যা পরিস্থিতি তাতে তারা বড় সুযোগ হেলায় হারিয়েছেন। শন উইলিয়ামসের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কত্ব করতে নেমেই তোলেন সেঞ্চুরি। অষ্টম ওভারে প্রথম উইকেট পড়ার পর তিনে ব্যাট করতে নেমেছিলেন বাঁহাতি আরভিন। আউট হয়েছেন দিন শেষ হওয়ার ১০ বল আগে। অর্থাৎ দিনের প্রায় পুরোটা সময় ক্রিজে ছিলেন তিনি। দিনশেষে নিজেদের পিছিয়ে রেখে জানালেন, এমন ভালো উইকেট পাবেন আশা ছিল না তাদের, 'আমরা উইকেট দেখে বেশ চমকে গিয়েছি। সাধারণত লোকে বলে ঢাকার উইকেটে কি হয় বোঝা মুশকিল। আমার মনে হয় এটা বেশ ভালো উইকেট এই কারণেই দিনশেষে ম্যাচের যা অবস্থা তাতে বাংলাদেশ কিছুটা এগিয়ে। কারণ সম্ভবত আমরা দু-তিনটা উইকেট বেশি হারিয়ে ফেলেছি।' এমন উইকেটেও জিম্বাবুয়ের রাশ টেনে ধরার বড় কৃতিত্ব বাংলাদেশের বোলারদের। দুই পেসার বল করেছেন নিখুঁত লাইন-লেন্থে। তাদের এনে দেওয়া চাপ থেকে ফায়দা তুলেছেন স্পিনার নাঈম হাসান। ৬৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই নায়ক। বাংলাদেশের বোলারদের প্রশংসা ঝরল আরভিনের কণ্ঠেও, 'উইকেট বেশ ভালো ছিল। বাংলাদেশ সত্যিই খুব ভালো বল করেছে। নিখুঁত লাইনে অবিরাম বল করে গেছে তারা। আমার জন্য ছিল ধৈর্যের পরীক্ষা। উইকেটে খুব বেশি কিছু হচ্ছিল না। কিন্তু তারা ভালো জায়গায় বল ফেলেছে। আমি চেষ্টা করেছি রান বের করতে।'