বাংলাদেশ হকি

হকিতে নীল বেদনা

শুধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই নয়। ঘরের মাঠেও এখন তেমন কোনো হকির কার্যক্রম নেই বললেই চলে

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বেদনার রং নাকি নীল। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের সবুজ টার্ফটা বদলে নীল হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু জিমি-শিতুলদের পারফরম্যান্সে রঙ্গিন হয়ে উঠেছিল দেশের হকি। সেইসঙ্গে আনন্দের রং ছড়িয়েছিল ঢাকার এই হকি স্টেডিয়ামের নীল টার্ফেও। কিন্তু দেশের হকির জন্য দুঃসংবাদ হলো যতই দিন যাচ্ছের্ যাংকিংয়ে নিচের দিকেই নেমে চলেছে বাংলাদেশ। যেই সিঙ্গাপুর কখনো ছুতেই পারেনি লাল-সবুজদের। তারাই এখনর্ যাংকিংয়ে দুই ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ থেকে। শুধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনেই নয়। ঘরের মাঠেও এখন তেমন কোনো হকির কার্যক্রম নেই বললেই চলে। ক্রিকেটের পরই বাংলাদেশের সব থেকে সম্ভাবনাময় যে খেলাটি ছিল সেটি হলো হকি। সেই হকিতেই দীর্ঘদিন ধরে কোনো কার্যক্রম নেই জাতীয় দলের। সর্বশেষ ২০১৮ সালে এশিয়ান গেমস হকিতে অংশ নিয়েছিল জিমি-শিতুলরা। এরপর কোনো খেলাতেই দেখা যাচ্ছে না জাতীয় দলকে। আর এই কারণে বিশ্ব হকিরর্ যাংকিংয়ে পিছিয়েই চলেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশেরর্ যাংকিং ৩৮। আর তাদের থেকে দুই ধাপ এগিয়ে গেছে এক সময়ের সহজ প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। অথচ একটা সময় তাদের হেসে-খেলেই উড়িয়ে দিতে পারত লাল-সবুজরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ওমানও উঠে গেছে ২৭ নম্বরে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, নভেম্বরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া জাতীয় দলের আর কোনো খেলা নেই! ২৫ মার্চ থেকে ১২ দলের অংশগ্রহণে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ গেমস। আর জুনে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপই আপাতত ভরসা। তবে খেলা মাঠে না থাকায় হকির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা। এ প্রসঙ্গে জাতীয় হকি দলের খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি বলেন, 'আসন্ন বিশ্বকাপে টিমের সংখ্যা বেড়ে যাবে। আর আমরা না খেলার কারণে শুধু পিছিয়ে যাচ্ছি। সবার কাছে অনুরোধ সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করে লিগটা অন্তত শুরু করুন।' দেশের হকির যখন এই দুরবস্থা। তখন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ জানালেন আরও হতাশার কথাই। আপাতত জাতীয় দলের কোনো খেলা নেই। কোনো টুর্নামেন্ট না থাকায় কয়েক মাসের মধ্যে অনুশীলন ক্যাম্প শুরু করারও কোনো পরিকল্পনা নেই ফেডারেশনের, জানান তিনি। এ তো গেলো জাতীয় দলের অবস্থা। ঘরের টার্ফেও কি হকি আছে? যেই বাঁচাও হকি স্স্নোগান নিয়ে নির্বাচনে জিতেছিল মমিনুল হক সাঈদ-রশিদ শিকদার পরিষদ, তা একবছর না পেরোতেই মিলিয়ে গেছে। নীলাভ টার্ফে হাহাকার। সারা বছর মাঠে হকি রাখার ঘোষণা দিলেও উলটো চলতি বছরই বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্ট। মার্চে অনুষ্ঠিতব্য সব জেলার অংশগ্রহণে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ বাতিল করেছে ফেডারেশন। একই মাস থেকে শুরু হতে যাওয়া মেয়েদের স্কুল হকিও হচ্ছে না। প্রিমিয়ার লিগও এখনো অনিশ্চিত। এই অচলাবস্থায় ফেডারেশনের জবাব একটাই। পৃষ্ঠপোষকের অভাবেই হকির এই বেহাল দশা। এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, 'টার্ফে সারা বছর খেলা রাখতে হলে তো অর্থের প্রয়োজন। আমরা কোনো ফান্ড পাইনি। কিছু স্পন্সর পেলে এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা যেতো।'