আফিফ-নাঈমের লক্ষ্য একটাই

অনেক দিন থেকেই অনুভব করছিলাম, টি২০ খেলছি, ওয়ানডেতে কবে ডাক পাব। আশাটা পূরণ হয়েছে। চেষ্টা করব দলের জন্য ভালো কিছু করার -আফিফ হোসেন ধ্রম্নব, অলরাউন্ডার স্বপ্নেও দেখতাম না। জাতীয় দলে খেলব, এতকিছু চিন্তা করতাম না। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই ধাপে ধাপে চিন্তা করেছি, কীভাবে খেলা উচিত -মোহাম্মদ নাঈম শেখ, ব্যাটসম্যান

প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশের তরুণ ব্যাটিং অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রম্নব ও ওপেনিং ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এই সিরিজে দুই তরুণকে পরীক্ষা নেয়ার একটা বড় সুযোগ নির্বাচকদের -ওয়েবসাইট
দুইজনেরই নাম রয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য ঘোষিত ১৫ সদস্যের দলে। দলে নাঈম, আফিফের মতো আরও বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই হয়তো তরুণদের পরীক্ষা নেয়ার একটা বড় সুযোগ পাচ্ছে নির্বাচকরা। নির্বাচকদের পরীক্ষা আর যেটাই হোক, নাঈম-আফিফদের লক্ষ্য একটাই, দলে থিতু হওয়া। ক্যারিয়ারের প্রায় অন্তিম লগ্নে উপস্থিত বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে সংস্করণের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার অবসর নিয়ে দোলাচল থাকলেও সিলেটে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলছেন তিনি। সেখানে প্রথমবারের মতো তার নেতৃত্বে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন উদীয়মান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ। আর সে কারণে নিজেকে বড় ভাগ্যবান মনে করছেন এ তরুণ। জিম্বাবুয়ে সিরিজেই চোট কাটিয়ে ফিরছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। দেশসেরা অধিনায়কের ফেরা স্বস্তি দিচ্ছে দলকে। তবে প্রতিপক্ষকে হোয়াইওয়াশ করার লক্ষ্য না আবার চাপ তৈরি করে ফেলে খেলোয়াড়দের মনে। তরুণ ব্যাটিং অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রম্নব অবশ্য মনে করেন না চাপের কিছু আছে, 'বাড়তি চাপ কাজ করে না। আমাদের দল ভালো দল। মাশরাফি ভাইও ফিরছে। সবমিলিয়ে আমাদের খেলা খেলতে পারলে ভালোই হবে।' আফিফ হোসেন ধ্রম্নব টি২০ দলে এখন নিয়মিতই থাকছেন। সুযোগ পাচ্ছেন সেরা একাদশেও। খেলেছেন বাংলাদেশের সবশেষ ৯টি টি২০ ম্যাচে। তাতে অবশ্য সব পাওয়া হচ্ছিল না। তরুণ অলরাউন্ডার আশায় ছিলেন ওয়ানডে দলেও একদিন ডাক আসবে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে আফিফের অপেক্ষা থেমেছে। মাশরাফিকে বাংলাদেশ দলের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক বললে কোনো ভুল হবে না। তার অধীনেই হারের বৃত্তে থাকা দলটি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ২০১৫ সালে। বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলকে বাকিদের সমীহ করার মূলে রয়েছে মাশরাফির দক্ষ নেতৃত্ব। এই পেসারের অধীনে খেলতে পারা তাই দেশের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্যই আলাদা কিছু। নাঈমও অকপটে তাই বলেছেন, 'ভাগ্যবান আমি, মাশরাফি ভাইয়ের অধীনে খেলতে পারছি।' বাংলাদেশ জাতীয় দলে মূলত টি২০ সংস্করণ দিয়ে নজর কাড়েন বাঁহাতি নাঈম। কিন্তু সে সংস্করণে খেলেন না মাশরাফি। তবে হুট করেই তার নেতৃত্বে খেলার সুযোগ চলে এসেছে নাঈমের। ওয়ানডের নিয়মিত ওপেনার সৌম্য সরকার বিয়ের পিঁড়িতে বসায় ছুটিতে আছেন। তাই বিকল্প ওপেনার হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আসন্ন তিন ম্যাচের সিরিজে থাকছেন নাঈম। পুরো বিষয়টা তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে, 'এত কিছু তো স্বপ্নেও দেখতাম না। জাতীয় দলে খেলব, এতকিছু চিন্তা করতাম না। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই ধাপে ধাপে চিন্তা করেছি, কীভাবে খেলা উচিত।' সাদা বলের খেলা সবসময়ই উপভোগ করেন নাঈম। মূল একাদশে সুযোগ পেলে তাই সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন এ তরুণ, 'সাদা বলের খেলা খুব উপভোগ করি। লাল বলে সম্প্রতি খুব একটা ভালো সময় যায়নি। বাড়িতে গিয়ে সাদাবলে কাজ করেছি। কিছু জিনিস আমাকে বলে দেওয়া হয়েছে কাজ করার জন্য। এসব নিয়েই কাজ করছি। প্রস্তুতি সবমিলিয়ে ভালো। মূল একাদশে যদি সুযোগ পাই, আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব।' জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে টাইগারদের ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে আছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন ধ্রম্নব। ম্যাচের ভেনু্য সিলেট রওনা হওয়ার আগে আফিফ জানিয়ে গেলেন রোমাঞ্চ ও লক্ষ্যের কথা, 'অনেকদিন থেকেই অনুভব করছিলাম, টি২০ খেলছি, ওয়ানডেতে কবে ডাক পাব। আশাটা পূরণ হয়েছে। চেষ্টা করব দলের জন্য ভালো কিছু করার।' এক টেস্টের সিরিজ ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়ের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের লক্ষ্য হোয়াইটওয়াশ। আফিফ সেই প্রত্যাশা পূরণের সম্ভাবনা দেখছেন ভালোভাবেই, 'আমাদের সেরা ক্রিকেট খেললে অবশ্যই হোয়াইটওয়াশ সম্ভব। সুযোগ হলে সেরা পারফরম্যান্স করার চেষ্টা থাকবে। দল যে পরিকল্পনা করবে, যে দায়িত্ব আমাকে দেবে, সে অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করব।' টি২০তে আফিফের ব্যাটিং পজিশন ছিল একটু নিচের দিকে। স্স্নগ ওভারে অল্প বলে বেশি রান করার দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। ৫০ ওভারের ম্যাচে সময় নিয়ে ব্যাটিং করার সুযোগ থাকবে। আফিফ অবশ্য মনে করেন খেলার ধরন নির্ভর করবে যে পজিশনে ব্যাট করবেন সেই অনুযায়ী, 'সেটা (সময় নিয়ে ব্যাটিং) নির্ভর করে ব্যাটিং অর্ডারের ওপর। যদি ওপরে ব্যাট করি তাহলে অবশ্যই সময় নিয়ে খেলা যাবে। নিচে খেললে দল যখন যেটা চাইবে সেই অনুযায়ী খেলব। সুযোগ পেলে প্রতি ম্যাচ ধরে ধরে মনোযোগ দিয়ে খেলার চেষ্টা করব।' টি২০ দিয়ে আফিফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু ২০১৮ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে, এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। অভিষেকের পর অবশ্য দেড় বছর বাইরে ছিলেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজে ফেরেন আবারও।