ফিটনেসে মনোযোগ মুমিনুলের

এখন যেহেতু সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধ, তাই ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি মানে ব্যাটিং ও বোলিং নিয়মিত অনুশীলন করার প্রয়োজন নেই। তার চেয়ে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা যেতে পারে। তাতে অন্তত শারীরিক সক্ষমতাটা ঠিক রাখা সম্ভব -মুমিনুল হক

প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্রিকেট বন্ধ করেছে বিসিবি। এ অবস্থায় নিজেদের ফিটনেস ধরে রাখার জন্য ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজের দিকেই মনোযোগ মুমিনুল হকের -ফাইল ফটো
করোনাভাইরাসের কারণে ঘরোয়া ক্রিকেটের সীমিত ওভারের ঐতিহ্যবাহী আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ শুরু হয়ে এক রাউন্ড পরই বন্ধ হয়ে গেছে। এর বাইরে সব ধরনের ক্রিকেট আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পুনরায় শুরুর দিনক্ষণ বেঁধে দেয়া হয়নি এখনো। অবস্থার উন্নতি তথা করোনা আতঙ্ক কেটে গেলে আবার লিগ শুরুর প্রশ্ন। তবে বিসিবি সভাপতি ইতোমধ্যেই ডিপিএল বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, 'আসলে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উন্নত না হওয়া পর্যন্ত লিগ শুরুর কোনো নির্দিষ্ট দিন বেঁধে দেয়া যাচ্ছে না। যাবেও না। তাই সবার আগে দরকার পরিস্থিতির উন্নতি।' বিসিবি বিগ বস জানিয়েছেন, এমনও হতে পারে যে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করতে করতে ১৫ এপ্রিলও হয়ে যেতে পারে। তার মানে প্রায় এক মাস বা চার সপ্তাহ লিগ বন্ধ। লিগ বন্ধের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার প্রধান আরও একটি বার্তা দিয়েছেন ক্রিকেটারদের উদ্দেশে। তিনি সোজাসাপটা জানিয়ে দিয়েছেন, এখন আসলে খেলার সময় নয়। খুব দরকার না পড়লে ক্রিকেটাররা যেন বাড়ির বাইরে না যান, সে পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। প্রথমত, প্রিমিয়ার লিগসহ সব রকম ক্রিকেট স্থগিত। তারওপর বোর্ড প্রধানের পক্ষ থেকে ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ সতর্ক-সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে। এরকম অবস্থায় ক্রিকেটারদের করণীয় কি? তারা আসলে কি করবেন? ধরা যাক, আগামী ৩১ মার্চ নয়, ১৫ এপ্রিলের আগে আর লিগ শুরু হলোই না, তাহলে ক্রিকেটাররা এই দীর্ঘ সময় কি করবেন? বাড়িতে শুয়েবসে বা ঘরে আবদ্ধ থাকবেন? তাতে কি ফিটনেস লেভেল ঠিক থাকবে? বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসলে ক্রিকেটাররা কি করছেন? তাদের কী করা উচিত, তারা কী করতে পারেন বা করবেন? এসব নিয়ে ভক্ত ও অনুরাগীদের রাজ্যের কৌতূহল। ক্রিকেটার মুমিনুল হক কৌতূহলী প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমকে লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন মুমিনুল হক। জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার করোনা নিয়ে চিন্তিত। উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। সতর্ক ও সাবধানও আছেন। তবে এর মধ্যেও ফিটনেস ধরে রাখতে যা যা করণীয়, তা করে যাচ্ছেন। যেহেতু করোনার কারণে লিগ বন্ধ। তাই সব দলের প্র্যাকটিসও বন্ধ। বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে নিজের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফিটিনেস ট্রেনিং, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ আর প্র্যাকটিস করা ছাড়া কোনোই উপায় নেই। কোনো টিমেরই প্র্যাকটিস হচ্ছে না। দলগত অনুশীলন করার সুযোগও নেই। সব বন্ধ। জানা গেছে, কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি শেরে বাংলায় এসে ব্যাটিং প্র্যাকটিস করার চিন্তাভাবনাও করছেন। সেই তালিকায় মুশফিকুর রহিম আছেন। মুশফিক ব্যক্তিগত উদ্যোগে শেরেবাংলায় একা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। তার জন্য আলাদা নেটের ব্যবস্থা করতে মাঠ কর্মীদের বলাও হয়েছে। জানা গেছে, জাতীয় দলসহ অন্যান্য সব ক্রিকেটার এখন ফিটনেস লেভেল ধরে রাখতে অন্তত ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজই করে যাচ্ছেন এবং করার কথাও ভাবছেন। এবারের লিগে গাজী গ্রম্নপের অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার মুমিনুল হক বলেছেন, 'ক্রিকেট আমাদের ধ্যানজ্ঞান ও রুটিরুজি। কিন্তু জীবন তার চেয়ে অনেক বড়। বেঁচে থাকাই সবার আগে। বর্তমানে করোনা আতঙ্ক যেভাবে ছড়িয়েছে, তাতে নিজের ফিটনেস ও ক্রিকেটীয় প্রস্তুতির চেয়ে কিছু দিন সতর্ক ও সাবধানে থাকা উচিত।' মুমিনুল যোগ করেন, 'এখন যেহেতু সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধ, তাই ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি মানে ব্যাটিং ও বোলিং নিয়মিত অনুশীলন করার প্রয়োজন সে অর্থে নেই। তার চেয়ে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা যেতে পারে। যেটা বাসায় বসেই করা যায়। প্রত্যেকে নিজের বাসায় অবস্থান করেই ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ ও পুশআপ এবং অন্যান্য ছোটখাটো ব্যায়ামগুলো করতে পারে। তাতে অন্তত শারীরিক সক্ষমতাটা ঠিক রাখা সম্ভব।' আর ক্রিকেটীয় অনুশীলন সম্পর্কে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের কথা, 'ইচ্ছে করলে বিসিবিতে গিয়ে জিম করা যায়। হোম অফ ক্রিকেটে অনুশীলন করারও সুযোগ আছে। তবে বর্তমান অবস্থায় আমি তা করতে চাই না। আমি চাইলে করতে পারব। তবে এখন কিছুদিন না করলেও সমস্যা নেই। আর আজকাল ফিটনেস ফিরে পেতে এবং নিজের ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় নিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগে না। বিষয়টা তত জটিল নয়। কাজেই আমি পরিবেশ পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছি। সব ভালো হয়ে গেলে আবার মন দিয়ে অনুশীলনে নেমে পড়ব। এখন ঘরে বসে যতটুকু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা যায়, তাই করব।'