মাঠে খেলা নেই, ক্লাবপাড়ায় নীরবতা

প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ। আর করোনা প্রতিরোধে বেশির ভাগ ক্লাব ছুটি দিয়ে দিয়েছে তাদের ফুটবলারদের। কোনো উপায় না থাকায় একমাত্র বিদেশি কোচ আর ফুটবলাররা ক্লাবে আছেন অনেকটা হোম কোয়ারেন্টিনের মতো। তাই ক্রীড়াঙ্গনে চিরচেনা সেই দৃশ্য আর নেই। ক্লাবপাড়ায় দেখা দিয়েছে নীরবতা, বিরাজ করছে গুমোট পরিবেশ।

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ক'দিন আগেও কোলাহলে মুখরিত ছিল দেশের ফুটবল স্টেডিয়াম আর ক্লাবগুলো। প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ। আর করোনা প্রতিরোধে বেশির ভাগ ক্লাব ছুটি দিয়ে দিয়েছে তাদের ফুটবলারদের। কোনো উপায় না থাকায় একমাত্র বিদেশি কোচ আর ফুটবলাররা ক্লাবে আছেন অনেকটা হোম কোয়ারেন্টিনের মতো। তাই ক্রীড়াঙ্গনে চিরচেনা সেই দৃশ্য আর নেই। ক্লাবপাড়ায় দেখা দিয়েছে নীরবতা, বিরাজ করছে গুমোট পরিবেশ। করোনা পরিস্থিতিতে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিনোদনের সব উপায়গুলো। দেশের সব ধরনের খেলাধুলা বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে ফুটবলারদের ক্লাবে রাখাটাও নিরাপদ মনে করছে না দেশের ফুটবল ক্লাবগুলো। তাই বেশির ভাগ ক্লাবই ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে তাদের স্থানীয় ফুটবলারদের। বিদেশি ফুটবলার আর কোচদের আপাতত বাইরে যাবার উপায় নেই। ঢাকা থেকে নিজ দেশে গেলেও থাকতে হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে। আবার কেউ বাইরে থেকে এলেও একই অবস্থা। ব্যস্ত অফিসপাড়ার ক্লাব মোহামেডান স্পোর্টিংয়েও নিস্তব্ধ নীরবতা। স্থানীয় ফুটবলাররা গেছেন ছুটিতে। কিন্তু যেতে পারেননি বিদেশিরা। তাই এক অর্থে হোম কোয়ারেন্টিনেই আছেন তারা। সাদা-কালোদের অধিনায়ক জাপানি ফুটবলার উরু নাকাতা ছুটি পেলেও এখানে থাকাটাই বেশি নিরাপদ মনে করছেন, 'জাপানের থেকে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ভালো। তাই এখানে থাকাটাই নিরাপদ। তবে এই দেশে ঠিক কতজন আক্রান্ত হয়েছেন সে বিষয়ে সঠিক তথ্য জানি না। দেশে ফিরতে গেলে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তাতে স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বেশি।' মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীতেও একই চিত্র। কথা হলো দলের অন্যতম জনপ্রিয় নাইজেরিয়ান ফুটবলার সানডে চিজোবার সঙ্গে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে থাকা এই ফুটবলার এখন পরিচিত মুখ দেশের ফুটবলে। অন্যান্য বিদেশি ফুটবলারের মতোই করোনা প্রতিরোধে ক্লাবেই অবস্থান করছেন এই ফুটবলার। আপাতত লিগ বন্ধ। তবে আবার মাঠে খেলা গড়ালে আবাহনীকে সেরার মুকুটেই দেখতে চান এই ফরোয়ার্ড। তার কথায়, 'আমাদের লক্ষ্য লিগের শিরোপা জেতা। আমার মনে হয় আরও অনেক দলেরও সেই একই লক্ষ্য। এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তবে আমরা যদি আমাদের স্বাভাবিক খেলাটাও খেলতে পারি। তাহলে আমার মনে হয় না এমন কোনো দল আছে, যারা আমাদের শিরোপা জয় ঠেকিয়ে রাখতে পারবে। আপাতত সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে।' সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক ডেনমার্ক প্রবাসী জামাল ভূঁইয়াও অবস্থান করছেন ক্লাবেই। বিপজ্জনক এই ভাইরাস নিয়ে তার দুচিন্তাও কম নয়। বাবা-মা আছেন ডেনমার্কে। আর জীবন সঙ্গিনী সুদূর জার্মানিতে। দুটি দেশেই করোনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তাই পরিবারের সবাইকে সহ দেশবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশ সেরা এই মিডফিল্ডার, 'করোনাভাইরাস বিপজ্জনক। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এই মুহূর্তে প্রিমিয়ার লিগ ও জাতীয় দলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়াটা সঠিক হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার মনে হয় ৩১ মার্চ পর্যন্ত নয়। অন্তত দুই মাস বিপিএল ফুটবল স্থগিত রাখা উচিত।' অনুশীলন বন্ধ আরামবাগ ক্রীড়া সংঘেরও। দলের অধিনায়ক দিদারুল হক বলেন, 'আমরা খুব ভয়ের মধ্যে আছি। যতটা সম্ভব সাবধানে থাকার চেষ্টা করছি। এই দেশে এই ভাইরাস বিস্তার লাভ করলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই সাবধানতার বিকল্প নেই।'