গোলরক্ষকরা গোল করতেও জানতেন!

গোলরক্ষকদের কাজ কী? প্রশ্নটার সবচেয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর- গোলপোস্ট পাহারা দেওয়াই তাদের মূল কাজ। তবে গোল ঠেকানোর সঙ্গে খেলার ধরনের কারণে কখনো কখনো দলের আক্রমণের শুরুটাও তাদের দিয়েই হয়। দারুণ একটা গোল কিক প্রতিপক্ষের অর্ধে জায়গা মতো ফেলতে পারলে বা নিজ দলের আক্রমণভাগের কোনো একজনের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে গোল বানিয়ে দেওয়ার কাজটাও করে দিতে পারেন তারা। তবে একজন গোলরক্ষক যদি গোলস্কোরার বনে যান, বিষয়টা কেমন হবে? ইতিহাসে এমন বেশ কয়েকজন গোলরক্ষক রয়েছেন, দল ফ্রি-কিক বা পেনাল্টি পেলে যাদের ডাক পড়ত গোল করার জন্য। অনেকসময় তারা সেট-পিস ছাড়াও জহর দেখাতেন দর্শনীয় সব আউটফিল্ড গোল করে। ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল করা ১০ গোলরক্ষকদের নিয়েই এই লেখা। (প্রথম পর্ব)

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
রজেরিও সেনি (১৩১ গোল) গোলরক্ষকদের মেসি বলা হয় তাকে। ১৯৯৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শুধু সাও পাওলোর হয়ে খেলেই ১৩১ গোল করেছেন রজেরিও সেনি। ক্যারিয়ারে রেকর্ড ৬২টি ফ্রি-কিক এবং ৭০টি পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন তিনি। মোট গোলের মাঝে ৬৫টি করেছেন ব্রাজিলিয়ান লিগে এবং ১৪টি করেছেন কোপা লিবার্তোদোরেসে, আর বাকি গোলগুলো এসেছে অন্যান্য ঘরোয়া প্রতিযোগিতায়। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের মাঝে ৪৭ গোল করেছিলেন সাও পাওলোর এই কিংবদন্তি গোলরক্ষক। এই সময়টাতে সাও পাওলোর মূল স্ট্রাইকারের গোল সংখ্যা ছিল মোটে ১৩টি। পেশাদার ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় ব্রাজিলেই কাটিয়েছেন সেনি। হোসে লুইস চিলাভার্ট (৬৭ গোল) নব্বইয়ের দশকে যারা ফুটবল সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখতেন নিয়মিত তাদের এই নামটা পরিচিত মনে হওয়ার কথা। গোলরক্ষক হিসেবে এক কথায় 'ফুল প্যাকেজ' ছিলেন হোসে লুইস চিলাভার্ট। প্যারাগুয়ের এই গোলরক্ষক তার দারুণ নেতৃত্বগুণ, দ্রম্নত গতির রিফ্লেক্স এবং অসম্ভব সব সেভের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন, তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন তার ফ্রি-কিক থেকে গোল করার সক্ষমতার জন্য। প্যারাগুয়েতে 'এল বুলডগ' হিসেবে পরিচিত চিলাভার্ট বিশ্বের একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন। ১৯৯৯ সালে আর্জেন্টাইন ক্লাব ভেলেজ সার্সফিল্ডের হয়ে সেই কীর্তি গড়েন তিনি। ক্যারিয়ারে রেকর্ড ৮টি আন্তর্জাতিক গোলও করেছেন এই প্যারাগুইয়ান গোলরক্ষক। হোর্হে কাম্পোস (৪৬ গোল) মেক্সিকান এই কিংবদন্তি গোলরক্ষকের শুধু গোল ঠেকানোই কাজ ছিল না, গোল করার কাজটাও নিয়মিত করতেন দলের জন্য। প্রায় নিয়মিতই গোলরক্ষক হিসেবে ম্যাচ শুরু করলেও পরে পুরোদস্তুর স্ট্রাইকার বনে যেতেন কাম্পোস। অবশ্য শুধু গোল করেই নয়, নিজের আকর্ষণীয় গোলকিপার জার্সি দিয়েও ম্যাচজুড়েই নজর কাড়তেন এই মেক্সিকান গোলরক্ষক। ক্যারিয়ারে মেক্সিকোর হয়ে ১৯৯৯ সালে ফিফা কনফেডারেশনস কাপ এবং দুটি কনকাকাফ গোল্ডকাপও জিতেছেন তিনি। দিমিতার ইভানকোভ (৪২ গোল) বুলগেরিয়া জাতীয় দলে মূল গোলরক্ষকের ১ নম্বর জার্সিটির জন্য জ্রাদকো জ্রাদকোভের সঙ্গে তার লড়াই চলত সবসময়। তবে একটি বিষয়ে ইভানকোভের ধারে কাছেও ছিলেন না জ্রাদকোভ, আর তা হচ্ছে পেনাল্টি থেকে গোল করা। জাতীয় দল এবং নিজের ক্লাবগুলোর হয়ে নিয়মতি স্পটকিক থেকে বল জালে পাঠাতেন তিনি। তবে তার ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তটি আসে তুর্কি ক্লাব কায়সারিস্পরের হয়ে টার্কিশ কাপ ফাইনালে, ম্যারাথন টাইব্রেকারে সেদিন তার অনন্য নৈপুণ্যে সেদিন শিরোপা জিতেছিল তার দল। টাইব্রেকারে ৪টি স্পটকিক ঠেকিয়ে দেওয়ার সঙ্গে ২টি স্পট কিক থেকে গোলও করেছিলেন এই বুলগেরিয়ান গোলরক্ষক।