শীর্ষে পাকিস্তান

রিভিউ সাফল্যে এগিয়ে বাংলাদেশ

এ পদ্ধতির সফল ব্যবহারে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এমনকি অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ। রিভিউ ব্যবহারে সবচেয়ে সফল দেশ পাকিস্তান। তবে টাইগারদের সঙ্গে ব্যবধানটা খুব বেশি নয়। তাদের সফলতার হার ৩৪.৬ শতাংশ। এরপর ৩২.৪ শতাংশ সফলতার হার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইংল্যান্ড

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় সময় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে দারুণ সফল হয়েছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতেও এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছেন তারা -ফাইল ফটো
আধুনিক ক্রিকেট অনেকটাই প্রযুক্তিনির্ভর। তাই ব্যাট-বল হাতে ভালো খেলার পাশাপাশি প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে ফায়দা তুলে নেওয়ায়ও শিখতে হয় নিখুঁতভাবে। কারণ কে না জানে ক্রিকেটে একটা সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে সবকিছু। তাই ডিআরএসের (আম্পায়ার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা পদ্ধতি) সঠিক ব্যবহারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর ফলাফল যাই হোক না কেন, সাম্প্রতিক সময়ে এ পদ্ধতির সফল ব্যবহারে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এমনকি অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ। ২০০৮ সালে ভারত ও শ্রীলংকার মধ্যকার একটি টেস্ট ম্যাচ দিয়ে ডিআরএসের সূচনার পর একাধিকবার নিয়ম ও পরিমাণ বদলে ২০১৭ সাল থেকে একটি স্থায়ী সিদ্ধান্তে আসে আইসিসি। টেস্ট ক্রিকেটে প্রতি ৮০ ওভারে ও সীমিত ওভারের ম্যাচে একবার করে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ থাকে দলগুলোর। এছাড়া আম্পায়ার্স কলে নষ্ট হবে না রিভিউ। আর তখন থেকে সব ফলগুলোর রিভিউ ব্যবহারের একটি জরিপ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো। জরিপে দেখা যায় রিভিউর সঠিক ব্যবহারে বেশ এগিয়ে বাংলাদেশ। তালিকার চতুর্থ স্থানে আছে তারা। শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান। অবশ্য ক্রিকইনফোর এ তথ্য টেস্ট ক্রিকেটের পরিসংখ্যান নিয়ে। তথ্য অনুযায়ী, টেস্টে রিভিউর ৩০ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পক্ষেই যায়। অর্থাৎ টাইগারদের আবেদনে সিদ্ধান্ত বদল হয় আম্পায়ারদের। আর ৪৪.৩ শতাংশ সিদ্ধান্তে রিভিউ টিকে থাকে তাদের। অর্থাৎ আম্পায়ার্স কলের কারণে সিদ্ধান্তে বিপক্ষে যায়। তবে রিভিউ ব্যবহারে সবচেয়ে সফল দেশ পাকিস্তান। তবে টাইগারদের সঙ্গে ব্যবধানটা খুব বেশি নয়। তাদের সফলতার হার ৩৪.৬ শতাংশ। এরপর ৩২.৪ শতাংশ সফলতার হার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ইংল্যান্ড। তিন নম্বরে থাকা উইন্ডিজের সফলতার হার ৩০.৩ শতাংশ। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম জায়ান্ট দল অস্ট্রেলিয়া বেশ পিছিয়ে। তাদের সফলতার হার ২৬.৬ শতাংশ। আছে তালিকার সপ্তম স্থানে। ২৭ শতাংশ সফলতার হার নিয়ে তাদের ওপরে আরেক জায়ান্ট ভারত। নিউজিল্যান্ডের সফলতার হার ২৮.৪ শতাংশ। ২৫.৪ শতাংশ সিদ্ধান্ত সফল হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। সবচেয়ে বাজে অবস্থা শ্রীলংকার। তাদের সফলতার হার ২৩.৩ শতাংশ। তবে ফিল্ডিংয়ের সময় সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থা বাংলাদেশের। অর্থাৎ রিভিউ নেওয়ায় বাজে সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক। সফলতার হার মাত্র ১৫.৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিচে আর কোনো দল নেই। আর ফিল্ডিংয়েও সবচেয়ে ভালো অবস্থান পাকিস্তানের। ৩২.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল হয় তারা। অস্ট্রেলিয়া ২২.৪ ও ভারত ২০.৭ শতাংশ ক্ষেত্রে সফল। তাতে এটা পরিষ্কার রিভিউর ক্ষেত্রে বেশি ভালো সিদ্ধান্ত নেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। সেক্ষেত্রে প্রথম সারির ছয় ব্যাটসম্যানদের সিদ্ধান্ত আরও বেশি সঠিক। সফলতার হার ৪৫.৮ শতাংশ। ৬২.৫ শতাংশ সিদ্ধান্ত অবশ্য আম্পায়ার্স কলের কারণে বাতিল হয়। বাংলাদেশের চেয়ে সফল অবশ্য ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। তাদের সফলতার হার ৪৮ শতাংশ। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের সফলতার হার ৪১.৪ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়া সফল হয় ৩৫.১ শতাংশ ক্ষেত্রে। এখানে সবচেয়ে বাজে অবস্থা ভারতের। তাদের সেরা ছয় ব্যাটসম্যানদের সফলতার হার ২৯.৮ শতাংশ। রিভিউ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে সবচেয়ে কম নেয় নিউজিল্যান্ড। ৪৭.৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রে রিভিউ নিয়ে থাকে তারা। ৫০ শতাংশের চেয়ে কম আছে আর মাত্র একটি দেশ। সেটা বাংলাদেশ। ৪৭.৫৬ ক্ষেত্রে রিভিউ নেয় টাইগাররা। ডিআরএসের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে শ্রীলংকা। ৫৯.৩ শতাংশ ক্ষেত্রে রিভিউ নেয় দলটি। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট। মোট ১০ বার সফল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তবে গড়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলা। ৮৩.৩ শতাংশ ক্ষেত্রে তিনি সফল হয়েছেন। নিয়ম বদলের পর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে টেস্ট ম্যাচে এখন পর্যন্ত মতো ১১৪১ বার রিভিউ নেওয়া হয়েছে। আর এর মধ্যে ৩২৫টি রিভিউ সফল হয়েছে, অর্থাৎ আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। গড়ে প্রতি ৩.৫টি কলে একটি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। ফিল্ডিংয়ে অধিনায়কদের নেওয়া সিদ্ধান্তের চেয়ে ব্যাটসম্যানদের রিভিউ সঠিক হয় বেশি। ব্যাটসম্যানদের প্রতি ২.৮টি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। সফলতার হার ৫৭ শতাংশ। সেখানে ফিল্ডিং অধিনায়কদের নেওয়া রিভিউয়ে সফলতার হার ৩৬.৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ৪.৫টি আবেদনে একটি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়।