করোনাভাইরাস মোকাবিলা

জন্মদিনে অসহায়দের পাশে জাহানারা

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের ডানহাতি পেসার জাহানারা আলম বিশেষ এই দিনটি অবশ্য স্মরণীয় করে রাখলেন মহৎ উদ্যোগের মাধ্যমে।

প্রকাশ | ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
মিরপুরে বুধবার অসহায়দের খাদ্যসামগ্রী হাতে জাহানারা আলম -ওয়েবসাইট
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের ডানহাতি পেসার জাহানারা আলম বুধবার ২৮ বছরে পা দিয়েছেন। বিশেষ এই দিনটি অবশ্য স্মরণীয় করে রাখলেন মহত উদ্যোগের মাধ্যমে। করোনা মহামারির দিনে মিরপুরের অসহায় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করলেন নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য দিয়ে। চলমান করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুরুষ ক্রিকেটারের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের পেসার জাহানারা আলমও। সাহায্য করেছেন ৫০ পরিবারকে। অবশ্য তামিমদের সঙ্গে সম্মিলিত তহবিলে অংশগ্রহণ করতে পারেননি বলে কিছুটা আক্ষেপও আছে তার। সেটি মেটাতেই এমন ব্যক্তি উদ্যোগ। বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের স্বীকৃত পেজে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন জাহানারা। সেখানে দেখা গেছে, অসহায় মানুষের মধ্যে খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ করছেন তিনি। সেই সঙ্গে ছবিগুলোর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, 'এটা কোনো লোক দেখানো পোস্ট নয়। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী, যতটুকু সম্ভব হয়েছে, আমি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদেরও অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আপনার সামর্থ্যের মধ্যে একজন, পাঁচজন বা তার অধিক যে যতটুকু পারেন, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আমরা পারি আমাদের দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে।' জাহানারার বর্তমান আবাসস্থল মিরপুর। তাই সাহায্যের হাত বাড়াতে বেছে নিয়েছেন আশপাশের অসহায় ৫০ পরিবারকে। তাদের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিয়ে সাহায্য করেছেন। বুধবার সকালে মিরপুর-৬ নম্বরে এসব পণ্য বিতরণ করতে দেখা গেছে জাহানারাকে। এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জাহানার বলেছেন, 'আমি বর্তমানে মিরপুর-৬ নম্বরে আছি। এখানে অনেক গরিব ও খেটে খাওয়া পরিবারের বসবাস। নিজের জন্মদিনে এমন একটি কাজ করতে পেরে ভালো লাগছে। অন্যের জন্য কিছু করতে পারার অনুভূতিটা সত্যিই অসাধারণ।' জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সম্মিলিত তহবিলের কথা আগে জানলে সেখানেই অংশ নিতেন জাহানারা। কিছু করতে পারেননি বলে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমি জানতাম না, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা বেতনের অর্ধেক দিয়ে দিচ্ছে। তাহলে আমিও দিতাম। কিন্তু এখন যেহেতু সেই সুযোগ নেই, নিজেই কিছু কাজ করছি। আর এখন আমার জাতীয় নারী দলের সদস্যরা কেউ কাছাকাছি নেই। তাই হয়তো একসঙ্গে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। আশা করি, সবাই আলোচনা করে কিছু একটা আবার করব।' নারী দলের কেবল জাহানারা আলমই নন, অনেক নারী ক্রিকেটারই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদেরই একজন নারী দলের ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার। মিরপুর-১ নম্বরে বাসার আশপাশে অসহায়দের মধ্যে মঙ্গলবার ত্রাণ বিতরণ করেছেন তিনি। গত ২৫ মার্চ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেটাররা। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ১৭ ক্রিকেটারের সঙ্গে কিছু দিন আগে শেষ হওয়া জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলা আরও ১০ ক্রিকেটারসহ মোট ২৭ জন গঠন করেন তহবিল। খেলোয়াড়দের প্রত্যেকে সেখানে তাদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক টাকা অনুদান দিয়েছেন। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত ও গেল তিন মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা বিভিন্ন গ্রেডের ক্রিকেটারদের সমন্বয়ে এই তহবিলে জমা হয় ৩০ লাখ টাকারও বেশি। তবে কর কাটার পর ২৬ লাখ টাকার মতো থাকবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছিলেন তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমরা।