'ডাকওয়ার্থ-লুইস' পদ্ধতির লুইস আর নেই

১৯৯৯ সালে উদ্ভাবন করেছিলেন ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি। পরে ২০১৪ সালে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন নামকরণ করা গাণিতিক ফর্মুলা বৃষ্টিবিঘ্নিত সীমিত ওভারের ম্যাচে গোটা বিশ্বে ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
টনি লুইস
খারাপ আবহাওয়ার কারণে ম্যাচের ফল নিষ্পত্তি কিংবা কোনো দলের লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্যবহার করা হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি। এই পদ্ধতির অন্যতম উদ্ভাবক টনি লুইস মারা গেছেন। বুধবার রাতে ৭৮ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে গেছেন তিনি। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তার মৃতু্যর খবর নিশ্চিত করেছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় ম্যাচের ফল নিষ্পত্তির জন্য গণিতবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সঙ্গে এই পদ্ধতি বের করেছিলেন লুইস। ১৯৯৭ সালে প্রথমবার তারা সামনে এনেছিলেন 'ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড'। পরে ১৯৯৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে সেটি গ্রহণ করে। ফল নিষ্পত্তির এই পদ্ধতি টিকে থাকলেও লুইস চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এক বিবৃতিতে ইসিবি জানিয়েছে, 'খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন টনি লুইস। টনি, তার সতীর্থ গণিতবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সঙ্গে মিলে ১৯৯৯ সালে উদ্ভাবন করেছিলেন ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি।' সঙ্গে যোগ করা হয়েছে, 'পরে ২০১৪ সালে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন নামকরণ করা গাণিতিক ফর্মুলা বৃষ্টিবিঘ্নিত সীমিত ওভারের ম্যাচে গোটা বিশ্বে ব্যবহার করা হচ্ছে।' লুইস ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রভাষক ও গণিতবিদ। পরিসংখ্যানবিদ ফ্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সঙ্গে মিলে তিনি এই পদ্ধতি বের করেন। দুজনের নাম মিলিয়ে এটির নাম রাখা হয় 'ডাকওয়ার্থ-লুইস' পদ্ধতি। ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি হারারেতে জিম্বাবুয়ে-ইংল্যান্ড ম্যাচে প্রথম এটির প্রয়োগ হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। ১৯৯৯ সালে আইসিসির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়ে এটি ক্রিকেটের সর্বস্তরে চালু হয়। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচের জন্য অদ্ভুত এক নিয়ম ছিল আইসিসির। বৃষ্টিতে ম্যাচের পরিধি কমে এলে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের মেডেন ওভার ও কম রান নেওয়া ওভারগুলো বাদ দেওয়া হতো। যে নিয়মের মারপ্যাঁচে পড়ে ১৯৯২ সালে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এর পাঁচ বছর পর ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও টনি লুইস সহজ একটি নিয়ম তৈরি করেন। বর্তমানে বৃষ্টি বাগড়া দিলে ক্রিকেট ম্যাচে যারা পরে ব্যাটিং করবে তাদের লক্ষ্য কত হতে পারে তা এই ফর্মুলা দিয়ে বের করা হয়। তবে ২০০৬ সালে টি২০ ক্রিকেট আবিষ্কারের পর এই নিয়মের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন কার্যকরীভাবে এই নিয়মের হালনাগাদ করেন। ফলে এর বর্তমান নাম ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন মেথড। আর আশির দশক থেকেই বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ নিয়ে কাজ করছিলেন ডাকওয়ার্থ। তখন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা তাকে আমলে নেননি। পরে ১৯৯২ সালে তার সঙ্গে যুক্ত হন লুইস। তখন থেকে দুজনে হিসাবনিকাশ শুরু করেন। পরে ১৯৯৭ সালে এই পদ্ধতিটি ব্যবহার উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলেন। তার প্রায় দুই বছর পরীক্ষামূলকভাবে দেখার পর ১৯৯৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথড গ্রহণ করে আইসিসি।