বললেন মাশরাফি

গোলা-বারুদের চেয়ে ভালোবাসার শক্তি বেশি

সবাই মিলে সচেতন থাকা এবং একে অপরের জন্য বাঁচা। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারবে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
বাংলাদেশের সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা -ওয়েবসাইট
যুদ্ধের পেছনে কত কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ হয় গোটা পৃথিবীর। পারমাণবিক বোমা তৈরি ও যুদ্ধ বিমান কেনার প্রতিযোগিতায় বাজেটের বড় অংশ বরাদ্দ থাকে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর। কিন্তু অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখতে হয় এমন এক অতিশয় ক্ষুদ্র ভাইরাসের তোড়ে সবার অবস্থা জেরবার। এই মহামারিতে কোনো অত্যাধুনিক অস্ত্র নয়, করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে মানুষকে বাঁচাতে মানুষ লড়ছে কেবল ভালোবাসার শক্তি দিয়ে। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা যেন মনে করিয়ে দিলেন সেটাই। করোনাভাইরাসের মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে মাশরাফি নিজেও আছেন ভীষণ সক্রিয়। নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজ এলাকায় চিকিৎসা সেবা সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিচ্ছেন। বাসায় থেকেই তদারকি করছেন পুরো কাজ। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে মাশরাফি লেখেন, 'করোনাভাইরাস প্রমাণ করল গোলা-বারুদের চেয়ে ভালোবাসার শক্তি অনেক বেশি।' কথাটি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার। কিন্তু হঠাৎ করে কেন এমন মনে হলো তার? বর্তমান পরিস্থিতির মাঝেই মাশরাফির কথাটির নিগূঢ় অর্থটি লুকিয়ে আছে। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার সঙ্গে সামরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলো করোনাভাইরাসের কালো থাবা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছে না। ভাইরাসটি মহামারি আকার ধারণ করেছে উন্নত প্রায় সব দেশেই। ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ অনেক দেশেই প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন অগণিত মানুষ। বাংলাদেশেও এর সংক্রামণ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে বাড়ছে মৃত আর আক্রান্তের সংখ্যাও। অথচ এই উন্নত দেশগুলোই প্রতি বছর যুদ্ধ-বিগ্রহে ব্যবহার করে থাকা অসংখ্য গোলা-বারুদ কামানসহ অত্যাধুনিক সব অস্ত্র। কিন্তু সেসবের কিছুই করোনা মোকাবিলায় কাজে আসছে না। উল্টো যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস থিওডর রুজভেল্ট পর্যন্ত অসহায় হয়ে পড়েছে করোনার থাবায়। শুধু আমেরিকাই কেন, পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন কোনো দেশই তাদের এই অশুভ শক্তিগুলো ব্যবহার করে করোনার বিপক্ষে লড়তে পারছে না। কিন্তু এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার উপায় মাত্র একটিই- সেটি হলো সবাই মিলে সচেতন থাকা এবং একে অপরের জন্য বাঁচা। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারবে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা। এই ভালোবাসা থেকেই আসে দায়িত্ববোধ। সেই দায়িত্ব থেকে চিকিৎসক-নার্সরা জীবন বাজি রেখে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। মাশরাফি তাই মনে করেন, ভালোবাসার এই শক্তি দিয়েই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জিতবে মানুষ। করোনাভাইরাসের কারণে মাশরাফি নিজেও এখন ঘরবন্দি। তবে তিনি সেখান থেকেই মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ক্রিকেটারদের তহবিল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আবার সংসদ সদস্য হিসেবে নিজের ফাউন্ডেশন থেকেও দুস্থদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন। ক'দিন আগে আরও একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। নড়াইলে চিকিৎসককেই রোগীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেন কেউই আর বিনা চিকিৎসায় কষ্ট না পান। কেউ অসুস্থ বোধ করলে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের চিকিৎসাসেবার নম্বরে ফোন করে ঠিকানা দিলেই হলো। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চিকিৎসক চলে যাবেন তার বাড়ি। রোগী দেখে প্রয়োজনে কিছু ওষুধও দিয়ে আসবেন তারা।