স্থানীয়দের নিয়ে লিগ হলে উপকৃত হবে জাতীয় দল বলেছেন শহীদুল আলম সোহেল

প্রকাশ | ০৯ মে ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
জাতীয় ফুটবল দলে যার নিয়মিত পদচারণা। বর্তমানে খেলছেন দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব ঢাকা আবাহনীতে। নিজেকে চিনিয়েছেন সেরা পারফরম্যান্স দিয়ে। তবে তাকে একটু আলাদাভাবে চেনা যায় তার উচ্চতা দেখে। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি উচ্চতার এই ফুটবলার খেলেন গোলরক্ষক পজিশনে। তিনি শহীদুল আলম সোহেল। যায়যায়দিনে নিয়মিত সাক্ষাৎকার পর্বে আজ সোহেল জানালেন তার ব্যতিক্রমী অনুশীলনের কথা। যায়যায়দিন: কোথায় আছেন? কিভাবে অনুশীলন করছেন? সোহেল: প্রায় দুই মাস হলো চট্টগ্রামে বাড়িতে আছি। খেলা যখন বন্ধ হলো তখনই চলে এসেছি। অনুশীলন আমি রাতের বেলা করি। ৮টার পর তো লকডাউন হয়ে যায়। বাইরে কেউ থাকে না। তখন অনুশীলন করতে যাই। কিছুটা রাস্তায় বাকিটা বাড়ির পাশে একটা মাঠ আছে সেখানে গিয়ে করি। যায়যায়দিন: এ অবস্থায় কি কি সাবধানতা অবলম্বন করছেন? সোহেল: সব সময় বলতে গেলে বাসাতেই থাকি। ঘর থেকে খুব কম বের হই। যেদিন বাজার করতে যাই; ৫-৬ দিনের বাজার একসঙ্গে নিয়ে আসি। দূরত্ব বজায় রেখে বাজারে যাই। এখানে সবাই একসঙ্গে আছি। পরিবারের আর কেউই তেমন বাইরে যায় না। বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটাই। ওর নাম ইয়াসের বিন আলম। বয়স ১৯ মাস চলছে। জাতীয় দল ও ক্লাবের কোচের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। উনারা দুদিন পর পরই হোয়াটস অ্যাপে ট্রেনিং প্রোগ্রাম দেন। সেগুলো মেনে চলি। যায়যায়দিন: এভাবে কি ফিটনেস ধরে রাখা সম্ভব বলে আপনি মনে করেন? কারণ ক্লাবে থাকা তো অন্য ব্যাপার আর বাসায় একা অনুশীলন করা ভিন্ন। সোহেল: আমি মনে করি না একা একা ট্রেনিং করে পুরোপুরি ফিট থাকা যায়। তবে একদমই অনুশীলন না করার থেকে এভাবে করা ভালো। তা না হলে তো পুরোপুরি আনফিট হয়ে যাব। এমন হলে ক্লাবে গিয়ে রিকভার করতে অনেক সময় লাগবে। হয়তো বা দেড়-দুমাস লেগে যাবে। আর বাসায় এভাবে ট্রেনিং করলে যখন আবার ক্লাবে ডাকবে তখন হয়তো ১৫-২০ দিনের মধ্যেই রিকভার করে ফেলতে পারব। যায়যায়দিন: ক্লাবগুলো চাইছে এ বছর আর লিগ মাঠে না গড়াক। আপনারা তো খেলার মানুষ সব সময় মাঠে থাকেন। এই ব্যাপরটা কিভাবে দেখছেন? সোহেল: আসলে এই রোগটা তো শুধু বাংলাদেশের জন্য না। এই পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের ফুটবল যেভাবে চলবে। আমি মনে করি আমাদের বাংলাদেশের ফুটবলেও সেটা ফলো করা দরকার। কারণ যদি একটা বছর লিগ মাঠে না থাকে আমাদের অনেক ফুটবলার আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। যারা জাতীয় দলে আছে তারা হয়তো একটা মোটামুটি অবস্থানে আছে। কিন্তু এমন অনেক ফুটবলার আছেন যারা শুধু ক্লাব-লিগেই খেলেন। এটাই তাদের উপার্জনের একমাত্র উৎস। তারা খুবই অল্প টাকা পায়। লিগ বন্ধ থাকলে অর্থনৈতিক কারণেই তারা ফুটবল ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনো পেশাতে চলে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করা উচিত। তাই ক্লাবের ও ফুটবল ফেডারেশনের সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যায়যায়দিন : আরেকটা চিন্তা-ভাবনা হলো বিদেশি ফুটবলার বাদ দিয়ে স্থানীয়দের নিয়ে লিগ খেলা। এ বিষয়টা দেশের ফুটবলারদের জন্য কেমন হবে? সোহেল : স্থানীয় ফুটবলার নিয়ে অতীতে অনেক টুর্নামেন্টই হয়েছে আমাদের দেশে। আমাদের লিগ যখন হয়নি। ফেডারেশন যদি মনে করে স্থানীয় ফুটবলারদের দিয়ে একবছর লিগ চালাবে। সেটা আমাদের স্থানীয় ফুটবলারদের জন্য অনেক ভালো হবে। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো হবে। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সেটা জাতীয় দলের জন্য অনেক ভালো হবে। যায়যায়দিন: এভাবে লিগ শুরু হলে আপনার ক্লাব ঢাকা আবাহনীর শিরোপা জয়ের বিষয়ে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী? সোহেল: কয়েকজন ফুটবলার ছাড়া আমাদের ক্লাবের বেশিরভাগ ফুটবলারই কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে আছে। এবার দল গড়ার সময়ই স্থানীয় ফুটবলারেই বেশি নজর দেওয়া হয়েছিল। আমি আশা করি আবারও আমরা লিগের শিরোপা জিততে পারব।