স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রিমিয়ার লিগ শুরুর দাবি

প্রকাশ | ১১ মে ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
চলতি মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশনে শীর্ষ দল আবাহনী লিমিটেডের অনুশীলনের ফাঁকে লিটন দাসসহ অন্য খেলোয়াড়রা -ফাইল ফটো
করোনাভাইরাসের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে আছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ। অথচ বেশিরভাগ ক্রিকেটারেরই একমাত্র রুটি-রুজি উৎস এটি। এখন লিগ বন্ধ থাকায় অনেক ক্রিকেটারই মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তাই এমন অবস্থাতেও খেলোয়াড়দের কথা বিবেচনা করে মাঠে স্বাস্থ্যবিধি অক্ষুণ্ন রেখে ঈদুল ফিতরের পর লিগ শুরুর আহ্বান জানিয়েছে সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের সংগঠন সংগঠন-ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। গত ১৬ মার্চ থেকে বদ্ধঘরে দিন কাটাতে কাটাতে অস্থির হয়ে পড়েছে ক্রিকেটাররা। ঘরের মধ্যে ফিটনেস ড্রিল করলেও ক্রিকেট ব্যাট বল হাতে নিতে পারছে না তারা। ৭ সপ্তাহের এই বন্দিজীবনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ক্রিকেটাররা। তাই ফাঁকা স্টেডিয়ামে হলেও ক্রিকেট খেলতে উদগ্রীব তামিম, মুমিনুলরা। দ্রম্নত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন তারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইউরোপে ফুটবল লিগ শুরু হচ্ছে। সেই পথে হেঁটেই ক্রিকেট শুরুর আহ্বান জানিয়েছে কোয়াব। এজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও লিগের আয়োজক ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসকে (সিসিডিএম) সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে চিঠি দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা লিগ চালুর আবেদন করেছে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের কথা ভেবে প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে এরই মধ্যে কথা বলেছেন জাতীয় দলের তারকারাও। সম্প্রতি মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ দাবি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রথমেই প্রিমিয়ার লিগ চালু করতে হবে। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কথা ভাবতে পারে বিসিবি। ১৫ ও ১৬ মার্চ প্রথম রাউন্ড মাঠে গড়ানোর পর দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে লিগ স্থগিতের ঘোষণা দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ক্রিকেটীয় কার্যক্রম। ঈদের পরপর খেলা শুরু করা না গেলে এ মৌসুমের লিগ বাতিল হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেবে। যে কারণে কোয়াবের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলা মাঠে ফেরানোর। শনিবার রাতে ভিডিও কনফারেন্সে মাধ্যমে কোয়াবের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কোয়াবের সভাপতি ও বিসিবির পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং কোয়াবের সহ-সভাপতি ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন এবং জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল ইসলামও যোগ দেন বৈঠকে। তাদের সবার মতামতের প্রেক্ষিতে ঈদের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে লিগ শুরুর আবেদন করতে চায় কোয়াব। অনলাইন সভায় আরও ছিলেন বিসিবি পরিচালক আকরাম খান, তুষার ইমরান, এনামুল হক জুনিয়র, জহুরুল ইসলাম অমি, শাহরিয়ার নাফীস ও নুরুল হাসান সোহান। কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল বলেছেন, 'আমরা খেলোয়াড়দের আর্থিক দিক বিবেচনায় লিগ শুরুর পক্ষে। ঢাকা লিগ দিয়ে প্রচুর খেলোয়াড় নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। বিশেষ করে বিসিবির চুক্তির বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের বড় আয় আসে এখান থেকে। এজন্য আমরা লিগ শুরু করতে চাই। সবার আগে আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করব। আমরা একমত হয়েছি, বিসিবির কাছে আবেদন করব। বাকিটা বিসিবি সিদ্ধান্ত নেবে।' দীর্ঘদিন বদ্ধ ঘরে থেকে ক্রিকেট মাঠে ফিরতে সময়ের প্রয়োজন। অনুশীলনের জন্য দিতে হবে সময়। ঢাকার বাইরে এখন অবস্থান করা ক্রিকেটারদের ঢাকায় জড়ো করতেও সময় দরকার। এসব মাথায় আছে কোয়াবের। এমনটাই জানিয়েছেন দেবব্রত পাল, 'সামনে বর্ষা মওশুমের কথাও মাথায় রাখতে হবে। তাই ঈদ এর পর চাচ্ছি লিগ শুরু হোক। তার আগে ক্রিকেটারদের ঢাকায় জড়ো করতে ৭ থেকে ১০ দিন, আর অনুশীলনের জন্য ৭ থেকে ১০ দিন সময় দিতে হবে।' যদিও এ ব্যাপারে সিসিডিএম এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সিসিডিএমের সমন্বয়ক আমিন খান বলেছেন, 'দেখুন পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, আমরা তা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের চাওয়ার ওপর সব নির্ভর করছে না। বিসিবির অনুমতি লাগবে। বিসিবিকে সরকারের পক্ষ থেকে লিগ শুরুর অনুমতি নিতে হবে।'