লিগ বন্ধ হলে পারফরম্যান্স থাকবে না

করোনা পরিস্থিতিতে লিগ হবে কি হবে না। হলে কীভাবে হবে, এসব সংশয় আছে ফুটবলারদের মধ্যে। মাঠে খেলা না থাকলে কী হবে? ঘরবন্দিভাবে কীভাবেই বা চালিয়ে যাচ্ছেন নিজের ফিটনেস রক্ষার লড়াই। দৈনিক যায়যায়দিনের সঙ্গে কথা বলেছেন বসুন্ধরা কিংস ও জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল।

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যায়যায়দিন : কোথায় আছেন? কীভাবে চলছে ফিটনেস রক্ষার লড়াই? গুফিল : আলহামদুলিস্নাহ ভালো আছি। নিজের বাড়ি শ্রীমঙ্গলে আছি। ক্লাব ছুটি হওয়ার পরই এখানে চলে এসেছি। আমাদের ক্লাব থেকে কোচরা বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন ফিটনেস ধরে রাখতে। এছাড়া জাতীয় দলের কোচ জেমি ডের সঙ্গেও কথা হয়। তাদের টিপস অনুযায়ী অনুশীলন করছি। বাসার কাছে ভালো মাঠ আছে। সেখানে আমি আর জনি মামা অনুশীলন করি। যায়যায়দিন : বিষয়টা অনেকে হয়তো জানে না একটু যদি বলতেন। সুফিল : মিডফিল্ডার মাসুক মিয়া জনি সম্পর্কে আমার মামা হন। একই রক্ত। একই এলাকা। একই বাড়ির দুজন খেলি একই টিমে (বসুন্ধরা)। বিষয়টা অনেক আনন্দের। মূলত মামাকে দেখেই উৎসাহিত হয়ে ফুটবলে আসা। তাকে অনুসরণ করি। যায়যায়দিন : মামা ভাগ্নের সম্পর্কটা কেমন? গুফিল : ফুটবলেও আমাকে মামাই নিয়ে এসেছেন। উনি আমাদের এলাকায় একটা টিম করেছিলেন। ওই টিমে আমাকেও রেখেছিলেন। সেখান থেকেই স্যার আমাকে পছন্দ করেছিলেন। বয়সে সিনিয়র হলেও তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা বন্ধুর মতো। তার সঙ্গে সব শেয়ার করা হয়। ফুটবল নিয়ে অনেক কিছু আলোচনা হয়। যায়যায়দিন : করোনা প্রতিরোধে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করছেন? গুফিল : বাইরের কারো সঙ্গে মিশছি না। ফজরের নামাজ পড়ে অনুশীলনে যাই। সেখান থেকে সকাল ৮টার মধ্যেই বাসায় ফিরে আসি। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করি। এসে ঠিকমতো হাত ধুয়ে নেই। বাকি সময় বাসাতেই থাকছি। যায়যায়দিন : এবার প্রিমিয়ার লিগ প্রসঙ্গে আসা যাক। এবার যদি আর লিগ না হয় তাহলে এর প্রভাব ফুটবলারদের ওপর কতটা পড়বে? সুফিল : অবশ্যই অনেক বড় প্রভাব পড়বে। আসলে আমাদের দেশের সব ফুটবলার তো আর জামাল ভূঁইয়ার মতো কোটিপতি না। যারা বিত্তবান তাদের ফুটবল না খেললেও কিছু না। কিন্তু আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের যারা আছেন এই ফুটবলের টাকাটা দিয়েই বড় সংসার চালাতে হয়। বাবা-মা'র ওষুধের টাকা আসে এখান থেকেই। সবাই তো আর এক মৌসুমে ৫০-৬০ লাখ টাকাও রোজগার করে না। অনেকেই ১-২ লাখ টাকাও পায়। তাদের কি অবস্থা হবে চিন্তা করে দেখেন। যায়যায়দিন : বিদেশি ফুটবলার বাদ দিয়ে সীমিত আকারে প্রিমিয়ার লিগ করার চিন্তাভাবনাও হচ্ছে। এ বিষয়ে কিছু বলুন। সুফিল : লিগ বন্ধ হলে খেলতে খেলতে যে উন্নতিটা হয় সেটা হবে না। পারফরম্যান্স ধরে রাখা যাবে না। হয়তো অনেকের স্ট্রেন্থ বাড়বে। ফিটনেসও বাড়বে। কিন্তু মাঠের খেলা থেকে অনেক পিছিয়ে যাবে। বিদেশি ফুটবলার না খেললে হয়তো স্থানীয়দের জন্য ভালো হবে। তবে দর্শক ছাড়া ম্যাচ হলে খেলাটা খেলার মতো লাগবে না। দর্শকের সঙ্গে ফুটবলের যতটা সম্পর্ক ছিল সেটাও অনেক দূরে চলে যাবে। যায়যায়দিন : আপনার জন্য এই মুহূর্তে সব থেকে আনন্দের বিষয় কোনটা? গুফিল : এই দুর্যোগে বাবা, মা ও স্ত্রীর সঙ্গে আছি। এটাই সব থেকে আনন্দের বিষয়। এবারই সব থেকে বেশি সময় ধরে পরিবারের সঙ্গে আছি। যায়যায়দিন : বিয়ে কবে করলেন? গুফিল: প্রায় একবছর হলো পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। তেমন কোনো অনুষ্ঠান করা হয়নি। তবে স্ত্রীর নাম এখনই বলব না। বললে অনেকে চিনবেন (হাসি)। যায়যায়দিন : এই পরিস্থিতিতে আপনার ভক্ত ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে কী বলতে চান? গুফিল : সবাই সচেতন থাকুন। যেভাবে ইচ্ছা যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াবেন না। প্রথম থেকেই আমরা সবাই যদি একটু সচেতন থাকতাম তাহলে হয়তো সংক্রমণের হার এতটা বাড়ত না।