ঘরবন্দি জীবন দুঃসহ হয়ে উঠেছিল মেসির

প্রকাশ | ১৬ মে ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
সেই ছোট্টবেলা থেকে ফুটবলের সঙ্গে তার বসবাস। মাঠে খেলা না থাকলেও অনুশীলনে ঘাম ঝরাতে হয়েছে নিয়ম করে। এত দিনের রুটিন-অভ্যাস হঠাৎই বদলে যায় করোনাভাইরাসের থাবায়। খেলা দূরে থাক, ঘর থেকে বের হওয়ার উপায়ই নেই! এই অবস্থায় লিওনেল মেসির জীবন দুঃসহ হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। প্রাণঘাতী ভাইরাসে পাল্টে গেছে স্পেনের দৃশ্যপট। ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি তারা। করোনার প্রভাবে মার্চেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল লা লিগা। তাতে খেলোয়াড়দের মাঠ ছেড়ে ঘরবন্দি জীবনে প্রবেশ করতে হয়। লম্বা সময় পর স্প্যানিশ সরকার ক্লাবগুলোকে অনুশীলনের অনুমতি দিয়েছে। এতে যেন হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন মেসি। বার্সেলোনায় একক অনুশীলন চলছে এখন। কয়েকদিনের মধ্যে শুরু হবে দলীয় অনুশীলন। মুক্ত বাতাসে, প্রাণের ক্লাবে আবারও অনুশীলনে ফিরতে পারার আনন্দ মেসির মনে শীতল হাওয়া হয়ে লাগছে। ঘরে থাকতে থাকতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন বার্সেলোনা অধিনায়ক। তবে অনেকদিন অনুশীলনের বাইরে থাকলেও শারীরিকভাবে ঠিকই আছেন আগের অবস্থানে। বার্সেলোনাভিত্তিক ক্রীড়া দৈনিক স্পোর্তকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লকডাউনের সময় ও এখনকার অবস্থা নিয়ে অনেক কথা ভাগাভাগি করেছেন ছয়বারের ব্যালন ডি'অরজয়ী। ঘরবন্দি জীবনের বর্ণনা দিলেন তিনি এভাবে, 'শারীরিক দিক থেকে আমি খুব ভালো আছি। এই দিনগুলোতে আমি বাড়িতেই অনুশীলন করেছি, আমার মনে হয় এটা আমার শারীরিক গড়ন ধরে রাখতে সাহায্য করেছে। তবে ঘরবন্দি সময়গুলো খুবই কঠিন ছিল। এমন জীবনের কথা আসলে ভাবিনি। অবশ্য বাচ্চাদের ও (স্ত্রী) আন্তোনেলার সঙ্গে সময়গুলো উপভোগ করার চেষ্টা করেছি।' লম্বা বিরতিতে ফুটবলারদের ভালো দিকও দেখছেন মেসি। যদিও আবার খেলা শুরু করা যাবে কি না, সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই তার, 'হয়তো এই বিরতি আমাদের জন্য ভালো ব্যাপার হয়েই এসেছে। অবশ্য খেলা যদি আবার শুরু হয়, তখন দেখতে হবে আমাদের পারফরম্যান্সের লেভেলটা আগের জায়গায় আছে কি না। অনুশীলন শুরু করা খেলা মাঠে গড়ানোর প্রথম ধাপ, কিন্তু আমাদের অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী হলে চলবে না। আমাদের অবশ্যই সব প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা চালিয়ে যেতে হবে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেই ম্যাচ শুরু করতে হবে, সেটা অবশ্যই ফাঁকা স্টেডিয়ামে।' যদিও দর্শকহীনভাবে খেলাটা অদ্ভুত হবে মনে করছেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড, 'ব্যক্তিগত জায়গা থেকে আমি বলব, খেলা শুরুর অপেক্ষায় আর থাকতে পারছি না। আমরা সবাই জানি দর্শকহীন ফাঁকা স্টেডিয়ামে খেলাটা অদ্ভুত হবে। একই সঙ্গে আমরা চাইব না পরিবার থেকে আলাদা থাকতে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়।' এদিকে ২০১৫ সালে শেষবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে বার্সেলোনা। মাঝে চার বছরে মাত্র একবার সেমিফাইনালে উঠেছে কাতালান ক্লাবটি। প্রতিবারের মতো এবারও তাদের ফেভারিট ধরা হচ্ছে, কিন্তু পারফরম্যান্স সে কথা বলছে না। অধিনায়ক মেসিই সন্তুষ্ট নন দলের খেলায়। তিনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে বার্সেলোনা যেভাবে খেলেছে, তাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা সম্ভব নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ স্থগিত হওয়ার আগে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে নাপোলির মাঠ থেকে ১-১ গোলের ড্র নিয়ে ফিরেছিল বার্সা। ঘরের মাঠের লেগের প্রস্তুতির মাঝেই পড়ে করোনায় থাবা। বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা আগস্টে শুরু হতে পারে। অবশ্য কাতালানরা এরই মধ্যে আবার অনুশীলনে ফিরেছে, নতুন করে শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। বার্সার কোচ কিকে সেতিয়েন কিন্তু দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার স্বপ্নও দেখছেন তিনি। মেসি অবশ্য কোচের সঙ্গে একমত নন। স্কোয়াডের ওপর তার আস্থা আছে, কিন্তু পারফরম্যান্সটাই ভাবাচ্ছে তাকে।