সৌম্য-লিটন যত খেলবে, তত রেকর্ড

প্রকাশ | ১৮ মে ২০২০, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সহজাত ব্যাটিং সামর্থ্যের কারণে বরাবরই আলাদা কদর করা হয় সৌম্য সরকার, লিটন দাসকে। আগ্রাসী ব্যাট করে বিশ্বের যে কোনো বোলিং আক্রমণ ভড়কে দেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের তাই অগাধ আস্থা এই দুই তরুণের প্রতি। তামিম মনে করেন আগামীতে বাংলাদেশের হয়ে অনেক রেকর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে নতুন চূড়ায় যাবেন তারা। তামিমের সরাসরি অনলাইন আড্ডায় শনিবার রাতে এসেছিলেন সৌম্য, লিটন, মুমিনুল হক। পরে চমক হিসেবে যোগ দেন তাইজুল ইসলাম। খুনসুটি, খোশগল্প আর ক্রিকেটীয় বিষয় উঠে আসে তাদের আড্ডায়। সেই আড্ডা চলে দেড়ঘণ্টা ধরে। প্রসঙ্গক্রমে গত জিম্বাবুয়ে সিরিজে লিটনের খেলা ১৭৬ রানের রেকর্ড ইনিংসের কথা আনেন তামিম। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস দীর্ঘদিন ছিল তামিমের দখলে। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৫৪ রানের ইনিংস। এক দশক পর গত মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই সিলেটে নিজের রেকর্ড ভেঙে করেন ১৫৮ রান। তখনই তামিম বলেছিলেন, তার এই রেকর্ড বেশি দিন টিকবে না। সৌম্য, লিটনদের কেউই হয়ত তা ভেঙে দেবে। ঠিক পরের ম্যাচেই ১৭৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে নতুন উচ্চতায় চড়েন লিটন। লিটনের রেকর্ড ভাঙার সময় সঙ্গী হিসেবে ক্রিজেই ছিলেন তামিম। তবু সেই ইনিংসের বর্ণনা আরেকবার শুনেছেন লিটনের মুখে। পরে তামিম জানান, সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে লম্বা সময় খেলতে পারলে এমন অনেক রেকর্ড হাতের মুঠোয় চলে আসবে তাদের, 'সত্যি কথা বলতে কি লিটন, আমি এখনো বললাম, তুই ও সৌম্য যে ধরনের খেলোয়াড়, এই রেকর্ডগুলো যদি কেউ ভাঙতে পারে, তোরাই ভাঙবি। আমার কথাটা ধরে রাখিস। সৃষ্টিকর্তা তোদের বিশেষ কিছু প্রতিভা দিয়েই বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।' 'হয়তো বা মাঝে মাঝে আমরা খুব তাড়াতাড়ি সমালোচনা শুরু করে দিই। কিন্তু তোরা যত বেশি খেলবি বাংলাদেশের জন্য, তত বেশি রেকর্ড ভাঙবি। আজ থেকে ৭ বছর পর এসে বলিস, আমি এই কথাটা বলেছিলাম।' ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবেই জাতীয় দলে সুযোগ হয়েছিল সৌম্য সরকারের। পাশাপাশি বোলিংও করতে পারেন বলে ২০১৫ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ হয়েছিল। অথচ এই সৌম্যকে বোলারই মনে হয় না ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের! অধিনায়কের মুখ থেকে অমন কথা শোনার পর সৌম্যও জানিয়েছেন আরেকটি তথ্য। বিকেএসপিতে সৌম্যর বলেই কুপোকাত হয়েছিলেন দেশসেরা ওপেনার। সৌম্যকে তামিম বলেছেন, 'নিদাহাস ট্রফির শেষ ওভারে বোলিং করেছিলি। যদিও আমি তোকে বোলার হিসেবে গুনি না, তুই কোনো জাতের বোলারও না। মাঝে মাঝে হয়তো ভালো করিস। তারপরেও নিদাহাস ট্রফির শেষ ওভারে বোলিং করতে গিয়ে তোর অনুভূতিটা কী ছিল? তামিমের এমন প্রশ্ন শুনে মুখে হাসি চলে আসে সৌম্যর। তারপরও কান্নাভেজা সেই ওভারের বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, "সাকিব ভাই যখন আমাকে বল দিয়েছে, আমার মাথায় তখন কিছুই ছিল না। তবে আমার একটা কথা মাথায় এসেছিল, রিয়াদ ভাই প্রিমিয়ার লিগে একবার আমাকে বল করতে দিয়ে বলেছিল, 'তোর টার্গেট ৮ রান, এর বেশি দিবি না।' ওই ওভার করতে গিয়ে রিয়াদ ভাইয়ের কথাগুলো মনে পড়ছিল।" সৌম্যকে শেষটা আর বলতে দেননি তামিম। সৌম্যর এতটুকু বলা শেষ হতেই তামিম আবারও বললেন, 'আমি তো তোকে বোলার হিসেবে গুনি না। তারপরও তুই টুকটাক করতে পারিস। চেষ্টা করেছিস, কিন্তু পারিসনি।' এই কথার পর সৌম্য চুপ থাকেননি, দর্শকদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, 'তামিম ভাই আমাকে বোলার হিসেবে গুনেন না। অথচ আমি তখন বিকেএসপিতে খেলতাম, তামিম ভাইয়ের সঙ্গে বগুড়ায় একটি ম্যাচে আমার বাউন্সার তামিম ভাইয়ের মাথায় লেগেছিল।' পাল্টা প্রশ্ন করে তামিম বলেছেন, 'পরের বলে কী হয়েছিল সেটা বল।' সৌম্য বললেন, 'পরের বলতো দেখার বিষয় না। আমি তো তখন ছোট।' 'ভালো বলেছিস'- বলেই অন্য প্রসঙ্গে চলে যান তামিম।