এবার পুঁজিবাজারের পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন চায় ব্রোকাররা

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
কভিড ১৯-এর কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের মধ্যেও পুঁজিবাজারের কার্যক্রম চালু ছিল। এ সময় হাতেগোনা যে কয়েকটি দেশের পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। মূলত পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন ব্যবস্থা না থাকার কারণেই কভিড ১৯-এর সময়ে বাংলাদেশে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজার বন্ধ রাখতে হয়েছে। এ অভিজ্ঞতা থেকে দেশের পুঁজিবাজারকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন ব্যবস্থার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট স্টেকহোল্ডার ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি। গত বৃহস্পতিবার বিকালে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা এ দাবি জানান। ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ছায়েদুর রহমান, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী সুমন দাশ, ঢাকা ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ আলীসহ আরও বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সভায় ব্রোকারেজ হাউজের সিইওরা পুঁজিবাজারকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, এটি কমিশনের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। পুঁজিবাজার ও অর্থনীতির উন্নয়নে কমিশনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। এছাড়া সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ সময় পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা, বাজারে চাহিদা বাড়ানোর পাশাপাশি অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের বিষয়ে কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ছয় মাসের পরিচালন ব্যয় মেটানোর জন্য সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বরাদ্দের বিষয়টি প্রতিষ্ঠানগুলোর সর্বশেষ নিরীক্ষিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে মাসিক ভিত্তিতে দুই বছরের মধ্যে এ ঋণ শোধ করা হবে। পুঁজিবাজারে চাহিদা বাড়ানোর বিষয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে তারল্য সহায়তা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন করা জরুরি। জীবন বীমা করপোরেশন ও সাধারণ বীমা করপোরেশনের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে থাকা বড় আকারের তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে হবে। যত দ্রম্নত সম্ভব পুঁজিবাজারে স্ক্রিপ নিটিং চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। এক্ষেত্রে শুধু 'এ' ক্যাটাগরির শেয়ারে নিটিং সুবিধা প্রযোজ্য হবে। পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে সংগঠনটি বলছে, এতে বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়বে। এক্ষেত্রে সহজ শর্তে ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করের বিনিময়ে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। তিন বছরের জন্য এ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে বিনিয়োগকারীরা তাদের নিজেদের পছন্দমাফিক শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন। এছাড়া এক্ষেত্রে লভ্যাংশ ও মূলধনি মুনাফা উত্তোলনের সুযোগ থাকতে হবে। ব্যাংকের সুদের হার ও সঞ্চয়পত্রের সুদের হারের মধ্যে ভারসাম্য আনার পাশাপাশি লভ্যাংশের ওপর অগ্রিম আয়করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। এ সময় কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।