পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি চায় বিএমএএমএ

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে তরুণ জনগোষ্ঠী বাড়ছে, এ জন্য ভালো মানের মোটরসাইকেলের চাহিদা বাড়ছে। সেই চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে দেশে মোটরসাইকেলের উৎপাদন ও অ্যাসেম্বলে নীতি-সহায়তার আশ্বাসে প্রায় আট হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে উদ্যোক্তারা। কিন্তু আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সেই নীতির প্রতিফলন ঘটেনি। এ ছাড়া ইঞ্জিনিয়ার সংকট থাকায় মোটরসাইকেলের পেইন্টেড সিকেডি আমদানিতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য অনুমতি চায় বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএএমএ)। জানা গেছে, দেশের মোটরসাইকেলের উৎপাদন ও অ্যাসেম্বলিং শিল্পের বিকাশ ও বাজেটে প্রত্যাশা নিয়ে অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। দেশীয় মোটরসাইকেল শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন সময় নীতি-সহায়তা দিয়েছে। ফলে গত তিন বছরের বিক্রি দেড় লাখ থেকে পাঁচ লাখে উন্নীত হয়েছে এবং সরকারের কোষাগারে রাজস্ব এসেছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। পেইন্টেড পার্ট কম্পোনেন্ট আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে মোটরসাইকেল এবং এর যন্ত্রাংশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স বা ভ্যাট (মূসক) অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ না বাড়ানোয় হুমকির মুখে পড়বে দেশীয় মোটরসাইকেল শিল্প। পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো না হলে গ্রাহকের ক্রয় আগ্রহে ভাটা পড়তে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আয় সক্ষমতা কমার কারণে বিক্রি ৩০-৪০ শতাংশ কমতে পারে। আবার শুল্ক সুবিধা না বাড়ানোর কারণে বিক্রি ২০ শতাংশ কমতে পারে। করোনাকালে গত তিন মাসেই এই শিল্পে ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা। ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। ফলে এই খাতে আট হাজার কোটি টাকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এখন অনিশ্চয়তার মুখে। এ ছাড়া এই শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় তিন লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চয়তায় রয়েছে। এ জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্থানীয় পর্যায়ে মোটরসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যাট (মূসক) অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ এবং মোটরসাইকেলের পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি আরও পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে আনা প্রয়োজন। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় মোটরসাইকেল বিক্রিতে ১০ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন খরচ ধরা হয়। সব মিলিয়ে ৪-৬ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এটা প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে গ্রাহককে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হয়। এটি কমিয়ে ১০ শতাংশে নামানো প্রয়োজন। আবার করোনার কারণে পাঁচ মাস ধরে এই খাতের ইঞ্জিনিয়ার আসতে পারেননি। আগামীতেও আসতে পারবে কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। ফলে উৎপাদনের গতি ধরে রাখতে হলে পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি প্রয়োজন। এ ছাড়া নীতিমালায় ২০২৫ সালে ১৫ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব সুবিধা না দিলে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ বিষয়ে বিএমএএমএর সভাপতি ও উত্তরা মোটরসের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বলেন, সরকারের প্রত্যক্ষ নীতি-সহায়তা ছাড়া এই খাত টিকিয়ে রাখাই এখন দুরূহ হয়ে পড়বে। গত কয়েক বছরে আমরা মোটরসাইকেল শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ করেছি। যে সময় বিক্রি অনেক বৃদ্ধির কথা, তখন করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়েছে। চলতি বাজেটে ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার এই সংকট আরও ত্বরান্বিত করবে। দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও রাজস্ব আহরণ বাড়াতেই ভ্যাট সুবিধা ও পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।